পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মৰ্ম্মরে রচিত দীর্ঘনিঃশ্বাস —আপ্লুত অনন্ত আক্ষেপে, শুভ্ৰ হে মৌন মহিমা! . রবীন্দ্রনাথ বলিয়াছেন-- , “একবিন্দু নয়নের জল । কালের কপোলতলে শুভ্র সমুজ্জ্বল এ তাজমহল। 鬱 漿 @ প্রেমের করণ কোমলতা ফুটিল ত৷ সৌন্দর্য্যের পুষ্পপুঞ্জে প্রশান্ত পাষাণে ।” নেপালপ্রবাসী কপ্তেন রাজকৃষ্ণ কৰ্ম্মকার প্রবাসীর পাঠকপাঠিকাগণ এপর্য্যন্ত বাঙ্গালাদিগের মধ্যে যাহারা ধৰ্ম্ম, সাহিত্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, আইন প্রভূতির ক্ষেত্রে কীৰ্ত্তি রাখিয় প্রসিদ্ধ হইয়াছেন তাহাদের বিষয়হ শুনিয়া আসিতেছেন, কিন্তু তাহাদের সমক্ষে অদ্য সম্পূণ বিভিন্নক্ষেত্রে একজন লব্ধপ্রতিষ্ঠ প্রবাসীবাঙ্গালীর সংক্ষিপ্ত জীবনী উপস্থিত করিতেছি । তাহার নাম ক্যাপ্টেন রাজকৃষ্ণ কৰ্ম্মকার । নেপালে আধুনিক প্রসিদ্ধ বাঙ্গালীদিগের মধ্যে তিনি সৰ্ব্বপ্রথম । তিনি স্বীয় বুদ্ধিমত্তা শ্রমশীলতা ও কৰ্ম্মদক্ষতাগুণে আশাকুরূপ উন্নতি এবং বিদেশে বিভিন্ন রাজদরবারে বিশেষ আদর ও সম্মানলাভ করিয়া প্রবাসী বাঙ্গালীর গৌরববৃদ্ধির সহায়তা করিয়াছেন । রাজকৃষ্ণবাবু নেপালের রয়াল ইঞ্জিনীয়র ( Royal Engineer ) পদে বহুবর্ষ দক্ষতার সহিত কৰ্ম্ম করিয়া এক্ষণে অবসর গ্রহণ করিয়াছেন এবং নেপালেই বাস করিতেছেন । অভিভাবকের অর্থের অসচ্ছলতা-নিবন্ধন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধিপরীক্ষায় অসমর্থ হওয়ায় যাহার। প্রার্থনীয় উন্নতির আশ বিসর্জন দিয়া নিতান্তই জীবিকার্জনের অনুরোধে কোন একটা কৰ্ম্মে নিযুক্ত থাকিয়া নিরুৎসাহে জীবনের মূল্যবান দিনগুলি কাটাইতেছেন তাহার। এই প্রবাসী—চৈত্র, ১৩২১ ' [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড সদাসচেষ্ট স্বাবলম্বী পুরুষের কর্মজীবনের কাহিনী બિા8 করিলে বুঝিতে পাfরবেন যে প্রকৃত উদ্যমশীল ও উন্নতিপ্রয়াসী হইলে একজন সামান্ত কৰ্ম্ম হইতেও অসামান্ত উন্নতিলাভে সমর্থ হন । to ১৩৩৫ সালে, হাবড়া দফরপুর নামক স্থানে রাজকৃষ্ণবাবু জন্মগ্রহণ করেন । স্বগ্রামেই তাহার বায়ুশিক্ষা হয়। তৎপরে গ্রাম্যস্কুলে সামান্যরকম বাঙ্গালা ও ইংরেজী শিখিয়া তিনি স্কুল ত্যাগ করেন । পিত। ৬ মাধবচন্দ্র কৰ্ম্মকারের কৃষিকৰ্ম্মে এবং লোহার কুলুপ, হাত-কোদাল প্রভৃতি বিক্রয়ের অর্থে সাংসারিক অসচ্ছলতাই দূর হয় নাই, তাহাতে পুত্রের শিক্ষণব্যয় নিৰ্ব্বাহ করা যে অসম্ভব ছিল তাহ বলাই বাহুল্য। স্কুলের শিক্ষালাভে বঞ্চিত হইয়া বালক রাজকৃষ্ণ পিতার আর্থিক কষ্ট দূর করিবার নানা উপায় চিন্তা করিতে করিতে ভগ্নীপতি গুরুদাস কৰ্ম্মকারের সহিত গার্ডেন কোম্পানীর কারণনায় ৭ টাক। বেতনে প্রথমে কার্য্যে নিযুক্ত হন । কিন্তু এখানে জাহাজ মেরামতের কৰ্ম্ম ভিন্ন আর কোন কৰ্ম্ম শিথিবীর সুযোগ না থাকায় উচ্চাকাঙ্ক্ষী বালক এক বৎসর পরে এই কৰ্ম্ম ত্যাগ করিয়া হাবড়ার “গ্যাঞ্জেস্ কোম্পানীতে” কৰ্ম্ম করিতে থাকেন । এখানে তাহার কলকারখান। সম্বন্ধে বিবিধ বিষয় শিক্ষার সুযোগ ঘটে । চতুর্দশবর্ষীয় বালক রাজকৃষ্ণের কঠিন শ্রমশীলতা, উদ্যম, অধ্যবসায় ও অসাধারণ স্মৃতিশক্তি কারখানার ম্যানেজার ও ইঞ্জিনীয়র ম্যাকলেডে সাহেবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে । সাহেব তাহার কয়ে সন্তুষ্ট হইয়া ক্রমে ৭ টাকা হইতে ২৫ টাকা পৰ্য্যন্ত বেতন বৃদ্ধি করেন এবং স্বহস্তে তাহাকে বহুকার্য্য শিখাইয়া দেন এবং অন্য কোন কারখানার কৰ্ম্মচারীর আবশ্যক হইলে অপরাপর কৰ্ম্মচারী অপেক্ষা উপযুক্ত বোধে তাহাকেই সেইসকল স্থানে পাঠাইতে থাকেন। অপরাপর কোম্পানিতে জাহাজ মেরামতের কাৰ্য্য এবং রেলওয়ে, ইঞ্জিন, বয়লার, জাহাজ, পুল প্রভৃতি নিৰ্ম্মাণ ও সংস্কারের জন্ত তাহাকে ভিন্ন ভিন্ন কারখানায় পাঠান হইত । এই সময় গভর্ণমেণ্টের ষ্ট্যাম্প কাগজের কলের উন্নতির জন্য র্তাহাকে নুতন নুতন অংশ নিৰ্ম্মাণ করিতে হইয়াছিল। তখন এই ষ্ট্যাম্প কাগজের তিনটিমাত্র