পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] এই শ্রেণীর প্রজাপতির বর্ণ ঘন ধূসর, গায়ে অত্যন্ত বেশী গুড় । ইহাদের পায়ে করাতের দাতের দ্যায় অনেক তীক্ষু কাট) আছে । উহার আঁচড় নিতান্ত আরাম দায়ক নহে। ইহার দিনের বেলায় ঝোপে জঙ্গলুে লুকাইয়া থাকে--রাত্রিতে বাহির হইয়া খাদ্য মুসন্ধানে পোরে । ইহার। ফুলে মধু পানেই রাজী নয়, ফুলের গাছের পাতার প্রতিও ইহাদের বেশ টান আছে। “গ” চিহ্নিত চিত্রটির দিকে তাকাইলে প্রজাপতির আকার আয়তনের কতকটা আন্দাজ পাওয়া যাইবে । বোলপুর । শ্ৰীমুধাকান্ত রায়চৌধুরী। রামগড় পথের কথা গত ফেব্রুয়ারী মাসে আমার এবং বন্ধুবর শ্ৰীযুক্ত সমরেন্দ্র নাথ গুপ্তের সরকার বাহাদুরের অরফ থেকে ডাক পড়ল— প্রত্ন-তত্ত্ব বিভাগের পক্ষ হ’য়ে আমাদের মধ্য-ভারতে মুরগুজা রাজ্যের অন্তর্গত রামগডুগিরিগুহায় ছাদের নীচের খৃঃ পূঃ তিনশত বৎসরের প্রাচীন চিত্রের প্রতিলিপি নিতে যেতে হবে । আমরা উভয়ে যথাসময়ে বেঙ্গলনাগপুর রেলওয়ের পেণ্ড,ারোড ষ্টেশনে উপস্থিত হলুম। এই পেগু, রোড ষ্টেশনটিতেই মুমরকণ্টক তীর্থযাত্রীদের নামৃতে হয়। যথাকালে প্রত্নতত্ত্ববিভাগের সহকারী সুপারিনটেণ্ডেণ্ট আমাদের সহযাত্রী মিষ্টার ব্ল্যাকিষ্টনের করমর্দন করে করা পৃষ্ঠে আরোহণ করলুম। আমাদের সঙ্গে ছিল ৬০ জন কুলি । তারা তাবু, খাবার জিনিসপএ, বাক্স, সিন্ধুক প্রভূতি নেবার জন্য নিযুক্ত ছিল, আর আমাদের বহন করবার জন্য ছিল দুটো হাতী। প্রথম দিনের যাত্রাট আমাদের অবশ্য খুবই উৎসাহে এবং আমোদে কেটেছিল, কিন্তু যখন শুনলুম ৬ দিনের যাত্রা শেষ করে দিনের দিন আমাদের গন্তব্য স্থনে পৌঁছব তখন উৎসাহের' বেগ মন্দীভূত হ’য়ে পড়েছিল ; কেননা, মধ্যভারতের দিব।-দ্বিপ্রহরের উত্তাপ এবং তার উপর ক্রমাগত প্রার অনশনে পাহাড়-পৰ্ব্বত অতিক্রম করার রামগড় ○○。 কষ্ট প্রথম দিনেই আমরা যথেষ্ট অকুভব করেছিলুম। রামগড় পাহাড় ষ্টেশন থেকে একশত মাইল দূরে।” অবস্থিত। আমাদের প্রথম "দিনের যাত্র বিকেল তিনটার সময় শেষ হ’ল । আমাদের ক্রমাগত পৰ্ব্বত অতিক্রম করার জন্যে ওঠানাবায় যtয়ার গতি অত্যক্ষ মৃদ্ধ হ’য়ে পড়ছিল । আমরা আমাদের বিশ্বামের চট যেখানে পেলুম সেখানে গ্রামের কোন চিহ্ন মাত্র নেই। একটা বেশ ছায়া-স্নিগ্ধ স্থানে আমাদের শিবির-নিবাস স্থাপিত হল । আমরা সেখানে পোছাবার পূৰ্ব্বেই গভর্মেন্ট কর্তৃপক্ষের আদেশ মত রাজসরকারের অধীনস্থ স্থানীয় চৌকীদার এবং গ্রামের মোড়লের ( থোর-পোষদারের ) আমাদের শিবির স্থাপনের উপযোগী স্থান নিৰ্ব্বাচন করে গোবর জল দিয়ে 'নিকিয়ে’ পরিষ্কার . পরিচ্ছন্ন করে উকুন তৈরী করে জল কাঠ প্রভৃতির সরবরাহ করে আমাদের সমস্তু বন্দোবস্ত ঠিক রেখেছিল ; এমন কি চাল ডাল ঘি ময়দার সিধাও প্রস্তুত ছিল । তরকারীর মধ্যে শিম ছাড়া ওখানে অন্য কোন তরকারীই আমরা চোখে দেখিনি । প্রত্যেক গৃহস্থের ঘরে শিমগাছ আছেই আছে । শুনলুম আমাদের পথে যত চটা হ’বে সেথানকার স্থানীয় লোকেরা এই রকম ব্যবস্থাই ঠিক রাখবে । আমরা সকল স্থানেই এই রকম আয়োজন প্রস্তুত পেয়েছিলুম। কোন কোন স্থানে পাতার ছাওয়া ঘরও তৈরী করে দিয়েছিল । বাল্মীকি রামের বনবাসের উল্লেথকালে তাদের পর্ণকুটীরের যে বর্ণনা করেচেন আমাদের সেই পাতার ঘরে বাসের সময় সেই অরণ্যবাসের কথাই পুনঃ পুনঃ মনে পড়ছিল ! আমাদের তাবুর কাছেই একটি স্বাভালিক জলাশয় অর্থাৎ বাধ ছিল । তারই নিকটে একটা বৃহৎ অশ্বথ গাছ কখণ্ড প্রকাণ্ড বড় পাথরের উপর এমন ভাবে জন্মিয়াছে যে হঠাৎ দেখলে মনে হয় সেটা ষেন পথিকদের বিশ্রামের জন্যে পাথর দ্বিয়ে স্থানীয় লোকের বাধিয়ে রেথেচে । এই স্থানটাতে আমাদের বিশ্রাম করে এতই আরাম বোধ হয়েছিল যে সমস্ত পথের ক্লেশ যেন কোথায় অবসান হয়ে গেল। * সে রাত্তিরটা যৈ কখন কেটে গেল আমরা কিছুই অনুভব করতে পার্লুম না!