পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা অনেকট। চুনের মতই সাদা। চীনা বাসন nরুপ মাটিতেই প্রস্তুত হয়ে থাকে । আমাদের পেjরী গ্রাম ত্যাগ করে আমখা' নামক একটা পাৰ্ব্বত্য বিস্তুত ও ভীষণ অরণ্য পার হতে হল । এই অরণ্যে শুনলুম বন্তহস্তীর বাস। ছেলেবেল যে' মজগর অরণ্যের গল্প শুল্লমছিলুম এখানে সেটা প্রত্যক্ষ রেলুম! বনটি স্থানে স্থানে এত নিবিড় যে সহস। সূৰ্য্যরশ্মি প্রবেশ লাভ করতে পায় না। আমরা ক্রমেই ভিীরতম প্রদেশ দিয়ে যেতে লাগ লুম। মধ্যে মধ্যে সই গহন অরণ্যে কাঠুরিয়ার। কাঠ কাটচে, তার শব্দ পাহাড়ের নিস্তব্ধতা ভঙ্গ কবৃচে, তার সঙ্গে বন্য কুকুট ও মন্তান্ত পার্থীরাও থেকে থেকে যোগ দিচ্চে। এই মস্ত বনে হরিতকী আমলকী বয়ড়া প্রভূতি গাছই প্রধানতঃ দেখা যায়। আমাদের এবারকার চটাটি কাব্রাডোল' নামক একটি গ্রামের নিকটে অরণ্য, পৰ্ব্বত ও নদীর বেষ্টনের মাঝে অবস্থিত। এই স্থানে একটা চুঞ্চাতুর চিতাবাঘ নদীর দিকুে যাচ্ছিল দুর থেকে দখেছিলুম কিন্তু এই স্থানটির অরণ্যাতিশয্যের মধ্যে সে য সহসা কোথায় অস্তৰ্হিত হয়ে পড়ল'ত। আর দেখা গেল ।। এপানে একস্থানে কতক গুলি লোককে বড়েভাঙ্গা কটা গাছের গুড়ির মধ্যে থেকে হেঁট হয়ে জলপান Fরুতে দেখে বিস্থিত হয়েছিলুম ; পরে শুনুলুম পাড়ের দলে ঐরকম গাছের গুড়ির এরা কুপের বেড়া দেয়। এইবারে অমর কোর্য রাজ্যের গুণ গী লাকেদের ত্যাগ করে সুরগুজ। রাজ্যের একটি হt sী, তনটে ডুলি এবং ৬০ জন কুলির তত্ত্বাবধানে এসে Iড়লুম। পরদিন আমাদের পর্ণকুটিরের আবাস ত্যাগ মরে তাবু গুটিয়ে মুরগুজা রাজ্যের দিকে রওনা হলুম। আমরা আমাদের কুলিদের দৈনিক ৮০ আনা |ারিশ্রমিক দিতুম ; তাতেই তারা যে কী সন্তোষই লাভ "তত বলা যায় না । তাদের প্রসন্ন মুখগুলি দেখলে ত্যই আশ্চৰ্য্য বোধ হত ! তাদের ভবিট। এই, সরকার tহাদুরের কাজের আবার বেতন কি ? আমাদের পেণ্ডী iমক একটি যায়গায় পর্ণকুটীরে বাস করতে হল। झे স্থানটি বৃক্ষ-বিরল—নিকটেই একটি ক্ষুদ্র গ্রাম। পথে அ4: রামগড় • «ፃ আমাদের যে কতক গুলি পাৰ্ব্বত্য নদ ও নদী অতিক্রম করতে হল সেগুলিতে জল প্রায় শুকিয়ে গেছে ; স্থানে স্থানে ক্ষীণ জলধারা নদীর প্রাণের পরিচয়টুকু মাত্র দিচ্চে ! পরদিন পাথরী নামক স্থানে রওনা হলুম । এখানে পাহাড়গুলি দুরে সরে গেল, আমরী পাৰ্ব্বত্য উপত্যকার সমতল जूमिं এস্থে পড়লুম। এস্থলে আমাদের ডুলির বিবরণ কিছু ন দিলে শিল্প-তীর্থযাত্রার ইতিহাসই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। একটা বঁাশ একটি সাড়ে তিন হাত লম্বা খাটিয়ার চারদিকের পায়ায় কঞ্চি বেঁধে ঝোলান, খাটটিতে বসলে সেটা আবার মাথায় ঠেকে। অর্থাং কোনগতিকে ঐ বাশের দোলায় একটা বস্তার মত গুটিয়ে শুটিয়ে শুইয়ে আমাদের ঝুলিয়ে কুলির কঁ্যাচর ক্যাচর রব ওঠাতে ওঠাতে সমস্ত পথ নিয়ে চল্ল-- সেই গাছের ছালের দড়ি এবং বীশের সংঘর্ষে উখিত করুণ রোলে যেন ‘বাশের দোলাতে উঠে কেহে বটে ষাচ্চ চলে শ্মশানঘাটে" এই বাউল সঙ্গীতটি ক্রমাগত ধ্বনিত হতে থাকুল ! পাথরীর পথে আমাদের শিল্প, তীর্থাপি রামগড় গিরি তার বৃহৎ মুস্তক ও নাসিকা নিয়ে অন্যান্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শৈলের মাথা ছাড়িয়ে আমাদের দুর্দশ দেখে রহস্ত করবার জন্তেই যেন থেকে থেকে উকিঝুকি দিচ্চেন ! কিন্তু বলাই বাহুল্য আমাদের অবগু সে অবস্থায় তার সেই রহস্যে যোগ দিতে কিছুতেই প্রবৃত্তি গুচ্ছিল না ! আমর। কয়েকবংদর পূৰ্ব্বে ধৰ্পণ অঞ্জণ্ট। গুহায় চিত্রের প্রতিলিপি নিতে গিয়েছিলুম তপন সেখানে পান্ধার নামক এক জাতীয় লোক দেখেছিলুম। এখানেও ঠিক সেই জাতীয় নরনারীদের দেখলুম। তার গরু এবং • ঘোড়ার পিঠে পণ্যভার বোঝাই দিয়ে স্ত্রীপুত্রপরিজনদের নিয়ে পদব্রজে নিৰ্ভয়ে অরণ্যপথে চলেচে। এই তব-ঘুরেদের সদানন্দময় ভ্রমণ দেখলে আমাদের জীবন-পথের প্রতিদিনের যাত্রার এবং তার সমস্ত সংশয়, সঙ্কট প্রভৃতির কথ। তারই সঙ্গে যুগুপং মনে জেগে উঠে !—তফাৎ এই, এরা অরণ্যের প্রতিপদের শত শত বিপদকে সহজভাবে দেখতে জানে, আর আমরা আমাদের বিপদকে গ্রহণ কবুতেই কাতর।