পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৭8 মন্দিরে নাম উপচারে পূজা পাঠাইয়া দিলেন। গ্রাম্বের লোক এ খবর ভাল্ল করিয়া জানিবার জন্ত জমদারবাড়ীতে ভাঙ্গিয় পড়িল । কিন্তু কিরণের রুগ্ন শরীরে অপ্রত্যাশিত আনন্দের কোপ সহ হইল না। রাত্রি হইতে তাহার ঘন ঘন মুছা হইতে লাগিল। শেষ রাত্রে অতিশয় কম্প দিয়; প্রবল জ্বরে সে অজ্ঞান হইয়। পড়িল । কবিরাজ নাড়ী দেখিয়া মুখ বিকৃত করিলেন, বলিলেন এ জরত্যাগের সময় কি হয় বলা যায় ন। নরেনকে বলিলেন—তুমি ত ললিতের ঠিকান পাইয়াছ, তাহাকে একথান টেলিগ্রাম করিয়া দাও, যদি দেখিবার ইচ্ছ। থাকে তবে যেন সংবাদ পাইবামাত্র চলিয়া আসে। নরেন বালকমাত্র-পূৰ্ব্বদিন ললিতের চিঠি দেখিয়া আনন্দে উৎফুল্ল হইয়। সে ভাবিয়াছিল এইবার তাঁহাদের সমস্ত কষ্ট ও উদ্বেগ দূর হইল, আজি এই নির্ঘাত কথা শুনিয়া সে একবারে বজ্র হতের মত স্তস্তিত হইয়া রহিল, পরে উচ্ছ,সিত কণ্ঠে কাদিয়া বলিল —-কবিরাও মশায়! আপনার পায়ে পড়ি, আপনি ও কৃথা বলবেন না, আমার খোনটিকে বাচান । দুইদিন অচেতন থাকিবার প্লর তৃতীয় দিনে কিরণের জ্ঞান হইল । সে ধীরে ধীরে চক্ষু মেলিয়। চারিদিকে চাহিয়া দেখিল । নরেন ও কবিরাজ মহাশয় তাহার শয্যার পাশ্বে বসিয়৷ ছিলেন । নানাছন্দের বিলাপ কোনমতে নিরস্ত করিতে না পারিয়া বিন্দু তাহাকে কিরণের ঘর হইতে অন্যত্র লইয়। গিয়ছিলেন । কিরণ কিছুক্ষণ শূঙ্গ দৃষ্টিতে চাগিয়া চাঙ্গিয়৷ নরেনকে ক্ষীণ কণ্ঠে ডাকিল—দ দা ! নৃত্যকালীর উচ্চ ক্ৰন্দন ও নরেন কাছে আসিয়৷ বলিল-- কেন লোণটি ? “দাদা ! পূজোর ছুটি হয়েছে কি ?” নরেন চোখ মুছিয়া বলিল –হয়েছে বই কি বোনটি ! ললিত এল বলে ! কিরণ আর কথা বলিল না । শান্তির গভীর দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়। সে ধীরে ধীরে ঘুমাইয়া পড়িল । এই সময় উদাম ঝড়ের মত ছুটিয়া ললিত ঘরে বেশ করিগ। বারাণ্ডায় তাহাকে দেখিয়৷ গৃহিণী চীৎকার করিয়া কঁদিয়া উঠিলেন—ওরে । এমনি করেই কি মেরে ফেলুতে হয়রে ? আমার সোনার প্রতিম। কিরণ— প্রবাসী-চৈত্র, ১৩২১ [ ১৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড বিন্দু তাহার মুখ চাপিয়া ধরিলেন । ললিষ্ঠ কোনদিকে না চাহিয়া পাগলের মত ডাকিল— কিরণ ! কিরণ ! তাহার উদ্বভ্রান্ত বিকৃত কণ্ঠস্বর কক্ষময় প্রতিধ্বনিত, হইয়া শৃঙ্গে মিলাইলা গেল। কিরণের তখন পূজার ছুটি হইয় গেছে , 艇密 শ্ৰীসরোজকুমারী দেবী । –7– -- যাকেরাখ সেই রাখে ? সেদিন হাটবার । গঞ্জের সমস্ত পথই কৃষক পুরুষ ও রমণীতে পূর্ণ হইয়া গিয়াছিল । পুরুষের দৃঢ় পাদবিক্ষেপে দেহের সমস্ত ভারটা সম্মুখ ভাগে দিয়। দীর্ঘ পদক্ষেপে অগ্রসর হইতেছিল । সারাদিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে তাহীদের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গুলা বিকৃত আকার ধারণ করিয়াছিল। ক্রমাগত লাঙ্গল চালনা করিয়৷ তাহীদের কোমর বাকিয়। গিয়াছিল এবং বাম স্কন্ধে একটা মাংসপিণ্ড উচু হইয়৷ উঠিয়াছিল । শস্ত কৰ্ত্তন করিয়া জামুর কাছটা ধনুকের আকার ধারণ করিয়াছিল । এইরূপ আরও কত কি কাজের জন্য ৩াহীদের সমস্ত শরীরটাই একরূপ বিকৃত হইয়া উঠিয়ছিল । তাহীদের শরীর বেষ্টন করিয়া শোভা পাই তেfছল তাহাদের চর্মর মত মলিন, তৈল-চিক্কণ জাম গুণি । তাহদের দেখিলেই মনে হইতেছিল যেন হস্ত-পদ ও-মস্তক-সমন্বত একটি ব্যোমযান উড়ডীয়নের জহ উন্মুখ হইয়। উঠিয়াছে ! কেহ কেহ গাভী বা গোবৎস লইয়। যাইতেছিল এবং ত{হাদের পত্নীগণ সপত্র বৃক্ষশাখা হস্তে পশ্চাৎ হইতে তাহাদের তাড়ন৷ করিতেছিল । অধিকাংশ রমণী কঁধে ঝোড়া লইয়া যাইতেছিল ; তাহার মধ্য হইতে হাস বা মোরগ মধ্যে মধ্যে মাথ৷ তুলিতেছিল । পুরুবদিগের সহিত তাহারা সমানে পথ চলিতে পারিতেছিল না। গায়ে তাহণদের রং বেরঙের রঙিন কাপড়, মাথায় বেসতি । তাহাদের পশ্চাতে একখানি গোরুর গাড়ী তাহার