পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bbrو) “কৈ ফিরিলেন বউ, দেখিতে দেখিতে বৎসর ফিরিতে চলিল। বিমি আমাকে ন দেখিলে আত্মছার হইতেন, এরুদণ্ডে জগৎ অন্ধকার দেখিতেন, তিনি কেমন করিয়া এণ্ডদিন আমাকে না দেখিয়া আছেন ? তিনি কি .ঙ্গার আছেন ? থাকিলে এতদিন নিশ্চয়ই ফিরিতেন। ধউ, জামাকে দেখিতে পাইবেন না বলিয়া তিনি বিদেশে যাইতেন না। আমুকে চক্ষুর অন্তরাল করিতে হইবে বলিয়া তিনি বিদেশে অর্থোপার্জন করিতে বাইতে পারেন নাই। এই হতভাগিনীর জন্যই সেই ক্ষুদ্র জীর্ণ কুটারথানি র্তাহার এত মধুর বোধ হইত। তিনি কেমন করিয়া আমাকে ছাড়িয়া এতদিন আছেন ? তিনি নাই । তোমরা অামাকে মিথ্যা প্রবোধ দিয়। রাখিয়াছ, থাকিলে এত দিনের মধ্যে একদিন আবার অমল বলিয়। কুটীরদ্বারে আসিন্ধা দাড়াইতেন।” প্রথমার কণ্ঠরুদ্ধ হইয়া আসিল, দ্বিতীয়ার নয়নকোণেও দুই এক বিন্দু অশ্রু দেখা দিয়াছিল, কিন্তু তিনি অলক্ষিতে বস্ত্রাঞ্চলে চক্ষু মার্জন করিয়া ননদিনীর নিকটে নামিয়া আসিলেন এবং অমলাদেবীর চক্ষু মুছাইয়া দিয়া কহিলেন, “ছি দিদি, কাদিও না, তাহার অমঙ্গল কfরও না । পুরুয মানুষ, অনেকদিন গৃহে বসিয়া ছিলেন, সেইজন্যই বোধ হয় অর্থোপাৰ্জ্জন করিতে বিদেশে গিয়ছেন।” ভ্রাতৃবধুর কথা শুনিয়া অমলাদেবীর পুরাতন স্থতি জাগিয়া উঠিল, অশ্রুর উংস আর বাধা মানিল না, তিনি আবেগঞ্জ দ্বকণ্ঠে কহিলেন, “বউ, আমি আপন হাতে আপনার সধ্বনাশ কুরিয়াছি ; তিনি স্বেচ্ছায় বিদেশে যান নাই, আমিই র্তাহার দেশত্যাগের মূল।” কণ্ঠরুদ্ধ হইল, অমলাদেবীর ভ্রাতৃবধু ননদিনীকে শান্ত করিবার জন্ত কহিলেন, “তাঁহাতে তোমার দোষ কি বোন ?” কিন্তু তাহার কথায় বিপরীত ফল হইল । অমলাদেবী আকুল হইয়া বলিয়া উঠিলেন, “ও কথা বলিও না বলিও না, আমিই আমার সৰ্ব্বনাশ করিয়াছি, তিনি এই হতভাগিনীকে ছাড়িয়া যাইতে চাহেন নাই, আমিই র্তাহাকে গৃহত্যাগী'করিয়াছি। বউ, তখনও দেবতা চিনিতে পারি নাই, তিনি কে তাহ বুঝিতে পারি নাই, সেইজগুই আমার এমন সৰ্ব্বনাশ হইয়াছে । আমি ইচ্ছা প্রবালী-চৈত্র, ১৩২১ [ »8* डां*, २ग्न १७ করিয়া সিংহাসন্ন হইতে দেবতা টানিয়া ফেলিক্স দিয়াছি; এখন আমার সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত হইতেছে। সে' দেবতা কি আর ফিরিবে ? তিনি কি আবার ফিরিয়া আসিবেন ? আর কি কখনও কুটারন্ধীরে দাড়াইয়া অমল বলিয়া ডাকিবেন ? তাহার চঞ্চল নয়ন দুইটি আর. কি কখনও গৃহকোণে আমার আম্বেষণ করিয়া বেড়াইবে ?” ননদিনী ও ভ্রাতৃজায়া অট্টালিকার সম্মুখে বসিয়া নীরবে অশ্রুবিসর্জন কল্লিতে লাগিলেন । অমলার শিশু ভ্রাতুপুত্র পূজার উপকরণ লইয়া চারিদিকে ছড়াইতে লাগিল। দুইজনের একজনও তাহ দেখিতে পাইলেন না। সন্ধ্যা হইয়া আসিল, গৃহে গৃহে দীপাবলী জলিয়া উঠিল, ঢেকীয় গ্রামের গৃহে গৃহে শঙ্খ ঘণ্টার মঙ্গন্ধবনি আরস্ত হইল । তখন অমলাদেবীর জ্ঞান হইল, fতনি অঞ্চলে চক্ষু মুছিয়া নূতন উপকরণ সংগ্ৰহ করিয়া আনিয়া পুজার আয়োজন করিতে বসিলেন। এমন সময় কে ডাক দিল। তাহার ভ্রাতৃবধু স্তম্ভিত হইয়। দাড়াইলেন। তাহাদিগের অবস্থা দেখিয়া আহবানকারী দূর হইতে বলিয়া উঠিলেন, “অমলা, ভয় নাই, আমি।” অমলাদেবী একটি দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া কহিলেন, “কে ? দাদা ?” উত্তর হইল, “হঁ৷ ” “আমরা তোমার কণ্ঠস্বর চিনিতে ন পারিয়া বড় ভয় পাইয়াছিলাম। ফিারতে এত রাত্রি হইল যে ?” “গৌড় হইতে বড় দুঃসংবাদ আসিয়াছে, সেইজন্স কাৰ্য্য শেষ করিয়া ফিরিতে বিলম্ব হইল।” “কি সংবাদ দাদা ? তিনি কি তবে নাই ?” “না অমল, সে কথা নহে। আমাদিগের নূতন সেন পেছিবার পূর্বেই, মহারাজাধিরাজ গুর্জরগণ কর্তৃক পরাজিত হইয়াছেন, তাহার কান্যকুব্জ অধিকার করিয়া লইয়াছে।” অমলাদেবী একটি দীর্ঘনিশ্বাস ত্যাগ করিয়া কহিলেন, “8; 1" ভ্রাতা, ভগিনী ও ভ্রাতৃজায়া নীরবে অট্টালিকায় । প্রবেশ করিলেন। তৃতীয়ভাগ সমাপ্ত।