পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

۶۰ مه » ۶۳ی ۹ - مر পারিপাশ্বিক দৃপ্তের এক বিষয়ে বিশেষ প্রাধান্ত ছিল । হরিতকী, আমলকী, শাল, তমাল প্রভৃতি বুক প্রায় নেই। . এখানে চারিপাশে সবুজ বাশের বন, যেন হরিয়ার ফোয়ার' চলুচে ! বাতাসে যখন বাশের অগ্রভাগের নত ও নবীন-স্বশ্ন শাখাগুলি আন্দোলিত হয় এবং সেই সঙ্গে তাঁর কচি কচি পাতাগুলি উৎস উৎক্ষিপ্ত জল-কণিকার মত বারবার পবন-তরঙ্গে নৃত্য করতে থাকে, তখন হঠাৎ চোখ মেলে দেখলে সত্যই শত শত সবুজ-ফেয়ারা বলেই ভ্রম হয় ! রামগড়ের সীতা বেঙ্গর এবং যোগীমায়া গুহা দুটিতেই প্রাচীর গাত্রে গভীর গৰ্ত্ত করে শিলালিপি খোদাই করা আছে। সে দুটিতে একজন নটীর এবং একজন ভাস্করের প্রণয়কাহিনী লিপিবদ্ধ করা। ডাঃ ব্লক প্রভূতি প্রত্নতত্ত্ববিদের প্রমাণ করেচেন এই লিপির অক্ষরগুলি অশোকের আমলের লিপির চেয়েও পুরাতন । এই শিলালিপি ধরেই এই স্থানের . গুহাগুলির প্রাচীনতা প্রমাণিত হয়। ডাঃ ব্লক অজণ্ট। গুহা, সিগিরিয়া প্রভৃতির চিত্র অপেক্ষা যোগীমারার চিত্রই অধিক প্রাচীন বলে নির্ণয় করেচেন। এশিয়াটিক সোসাইটার জার্নেল নামের পত্রিকায়,বহুপূৰ্ব্বে ব্লক সাহেব রামগড়গিরির প্রত্নতত্ত্ব বিযয়ে ষা যা আবিষ্কার করেছিলেন, লিখেচেন। তিনি সীতাবেঙ্গর যোগীমার গুহ ছটুতে নটার নাম উল্লেখ আছে দেখে সে দুটির মধ্যে সীতাবেঙ্গরাকে গ্রীকদের নকলে তৈরী নাট্যমন্দির বলেচেন ৷ আশ্চর্য্যের বিষয় ডাঃ রক রামগড়ের প্রাচীন মন্দিরটির সম্বন্ধে বিশেয ভাবে কোন আলোচনা করেন নি । কিন্তু আমাদের ঐ মন্দিরটি এবং গুহাগুলি দেখে মনে হ’য়েছিল এই সকল গুহাবাসীদের সঙ্গে মন্দিরের কোন-না কোন বিষয়ে যোগ ছিল । কেননা, প্রাচীন ভারতে মন্দিরের দেবসেবার উদ্দেশ্যে নৃত্য-কলাভিজ্ঞ দেবদাসী নিযুক্ত থাকৃত, তাদের নাচুের ভঙ্গীর দ্বারাও দেবাচনার একদিকের কাজ অমুঠিত হত। পূৰ্ব্বকালের রীতি অনুযায়ী এখনও দাক্ষিপাত্যের প্রাচীন মন্দির গুলিতে ঐক্লপ নৃত্যকলার প্রচলন আছে। সেই হিসাবে রামগড়ের মন্দিরটিতেও যে নটী নিযুক্ত ছিল একথা বোধ হয় অসঙ্কোচে বলা যেতে পারে রামগড় ჯ, S)

  • "・ ** *

এবং সেই দেবদাসীদের সঙ্গে গুহার গুহাবাসীদেরও যে একটা যোগ ছিল, একথাও নিতান্ত আনুমানিক লয় । øst সৌভাগ্যক্রমে আমরা আমাদের শিবির নিবাস থেকে বর্ষায় মন্দাক্রাস্তাছন্দের মত গুরুগম্ভীর দিধংস একদিন রামগড়ের গিরির শিখরবুয়ের মধ্যে তার উপত্যকার শু্যামল কোলটিকে আচ্ছন্ন করে বিরহীর অশ্রুভারাক্রাস্ত আঁখির মত বাষ্পভারে গদগদ্ধ বারিধিপুঞ্জ মন্থর গতিতে স্তরে স্তরে পুঞ্জীভূত হ’য়ে নিরদেশ-যাত্রার পথে ভেসে চলেচে দেখলুম !—সেদিন আমাদের সেই প্রবাসে অরণ্যবাসে আষাঢ়ের প্রথম দিবস না হলেও, “বপ্রক্রীড়া-পরিণতগজ প্রেক্ষণীয়ং দদর্শ প্রভূতি কবিবৰ্ণনাগুলি যেন কল্পনার কল্পলোক থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের এই . প্রত্যক্ষ নয়নপথে ধরা দিলে! কেন জানিনা, সেদিন আমাদের মনে একটি প্রশ্নের উদয় হয়েছিল যে বুন্দেলখণ্ডের রামটেক এবং এই রামগড়ের মধ্যে কোনটি প্রকৃত মেঘদূতের কবিবর্ণিত রামগিরি ? প্রত্নতত্ত্ববি দের কেন জানিন। বুন্দেলখণ্ডের অন্তর্গত পৰ্ব্বতকেই রামগিরি বলেন । কিন্তু যদি মেঘদূতের জনকতনয়াস্বানপুণ্যোদক কিম্বা বাল্মীকিবর্ণিত চিত্রকুট পৰ্ব্বতের বৃক্ষণদির দ্বারা স্থানটির নির্দেশ করতে হয় তবে রামগড়কেও অনায়াসে রামগিরি বল চলে । রামটেকের চেয়ে রামগড়কেই রামগিরির অপভ্রংশ বলা যেতে পারে । রামগড় নামক স্থান ভারতবর্গের অনেক স্থানে আছে সত্য, কিন্তু এখানে রামের বিষয়ে যত প্রাচীন কথা প্রচলিত আছে এমনকি মূৰ্ত্তি প্রভৃতিও আছে, অপর কোন খানেই তা নেই। দুঃথের বিষয় এই, রামগড়ের প্রকৃত প্রস্তাবে কোন ইতিহাসই আবিষ্কৃত হয়নি। তার প্রধান কারণ এই স্থানটি সহজগম্য ত নয়ই, বরং দুরধিগম্য। শ্ৰীঅসিতকুমার হালদার।