পাতা:প্রবাসী (চতুর্দশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা । g

  • শিশু বয়সে নিজীব শিক্ষার মত ভয়ঙ্কর ভার অtয় কিছুই নাই— তাহা মনকে যতটা দেয়, তাহার চেয়ে পিৰিয়া বাহির করে ঢের ৰেণী ।—আমাদের সমাজ-ব্যবস্থায় আমরা সেই গুরুকে খুজিতেছি ধিনি আমাদের জীবনকে গতি দান করিবেন ; আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় আমরা সেই গুরুকে খুজিতেছি যিনি আমাদের চিত্তে গতিপথকে বাধামুক্ত করিবেন।” 愈

বাল্যকাল হইতেই আমাদের.বিদ্যালয়ে ছেলের বড় বড় কথা মুখস্থ করে কিন্তু তদনুযাঙ্গ কোনও অনুষ্ঠালে প্রবৃত্ত হইবার সুযোগ তাহারা পায় না । চিত্তবৃত্তির যথাযথ বিকল সস্তুবে না যদি বাল্যকাল হইতে মঙ্গল কৰ্ম্মের সুযোগ মানুষ না পায় । মঙ্গলকৰ্ম্মৈ বর্তী শুভাকাঙ্ক্ষাপূর্ণ শিক্ষিত যুবকগণ যেদিন ধনের পূজা পরিত্যাগ করিয়া গ্রামে গ্রামে বিদ্যমন্দিরগুলিতে পৌরোহিত্যের কার্য্যে ব্ৰতা হইবেন এবং তাহীদের হৃদয়শতদলের সুগন্ধে আকৃষ্ট হইয়া বহুসংখ্যক তরুণ প্রাণ সৰ্ব্বত্র মঙ্গলকৰ্ম্মের মধু5ক্র রচনা করিবে—সেদিন বঙ্গের পল্লীভবন মধুময় হইয়া উঠিবে । সেদিন ধরিদের পর্ণকুটার ও কৃষকের শুষ্ক অঙ্গন জাল ও প্রেমের আনন্দে মুখরিত হইয়া উঠিবে। প্রায় বিংশ বৎসর পূৰ্ব্বে আমাদের একটা শ্রদ্ধের বন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষা লাভ করিয়া ধনমানের পথ পরিত্যাগ করিয়1র্তাহার পিতৃভবনের জীর্ণকুটীরে একটী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষাগ্রত গ্রহণ করিলেন। তিনি তপস্বীর ন্যায় নীরবে লোক-চক্ষুর অগোচরে দীর্ঘকাল কৰ্ম্মরত ছিলেন—আজি ছয় শত ৩রুণ কিশোর র্তাহার চরণপ্রাস্তে মনুষ্যত্ব লাভের শিক্ষার জগু সমবেত । তিনি তাহার অধিকাংশ ছাত্রের চরিত্রেই স্বীয় জীবনের উন্নত আদর্শের একটি ছাপ লাগাইয় দিয়াছেন । দারিদ্র্যপূর্ণ ক্ষুদ্র পল্লীতে শত প্রতিকুলতার মধ্যে অবস্থান করিয়। নীরব সাধন।দ্বারা তিনি ষে মঙ্গল কৰ্ম্মটি গড়িয়া তুলিয়াছেন তাহা আমাদের বহুসংখ্যক গভাসমিতি হইতে অধিক মুল্যবান । আমরা সেইরূপ সেবক চাই । সমগ্ৰ ভারতবর্ষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র সংখ্যা ৪২ ৩২ ৬ = ১ । শতকরা ২৬ জন মাত্র বিদ্যালয়ে পাঠ করে । তবেই দেখা যাইতেছে যে তিন ভাগের মধ্যে দুইভাগেরও বেশী ছাত্র নিরক্ষর থাকিয়া যাইতেছে। অনেকে বলেন অক্ষরপরিচয় ব্যতিরেকেও শিক্ষা হইতে পারে। যেমন আমাদের দেশে পূৰ্ব্বে যাত্রা, কবির থলি, কথকতা, কীৰ্ত্তন ইত্যাদির সাহায্যে সাধারণ লোকে অনেক জ্ঞানলাভ করিতে পরিত । ইহtশ্ন উত্তরে আমার বক্তব্য এই যে এ-সকল প্রাচীন অম্বষ্ঠানগুলির আবশ্বকতা যথেষ্ট আছে তাহাতে বিন্দুমাত্রও সন্দেহ নাই। বর্তমানে ইংরেজী-শিক্ষিত সম্প্রদায়ের অবজ্ঞাবশতঃ এই সকল অম্বষ্ঠান ক্রমে প্রাণহীন হইয়া পড়িতেছে ইহা দুঃথের বিযয় । বর্তমান সময়ের উপধোগী করিয়া ইহাদিগকে সংস্কার করিয়া লইলে সমাজের অশেষ কল্যাণ সাধিত হয় । পাশচ; তাদেশে সিনেমাটোগ্রাফ লোকশিক্ষার প্রধান সহায়স্বরূপ হইয়া উঠিয়াছে । আমাদের দেশের যাত্রাদি অনুষ্ঠান যদিচ আমাদের সমাজের নিম্নস্তরে উন্নতভাবগুলিকে জাগ্রত রাখিতে সাহায্য করিয়াছে এবং কাব্যকলার সঙ্গে অধ্যাখরসের সংমিশ্রণ দ্বার। তাহাদের মানসিক শক্তিকে বিকশিত করিয়া তুলিয়াছে, তথাপি ইহা স্বীকার করিতেই হইৰে যে, অক্ষরপরিচয়ের সাহাম্যে যে শিক্ষা–তাহারও এদেশে ধথেষ্ট আবশ্বক ৩t রহিয়াছে । কারণ বিদ্যালয়ের শিক্ষা মানবের জীবনসংগ্রামের পথকে সুগম করিয়া দেয় | যে-সকল চtধী মহাজনের নিকট দেয় খতথtলা পড়িয়া দেখিতে পারে মা, গোমস্তার দাখিলার মর্থ বুঝিতে পারে না—তাহীদের উপর অৰ্দ্ধশিক্তিত গ্রাম্য উপদেবতা হইতে আরম্ভ করিয়া পুলিশ মহাজন কপিাথর ৭৯ প্রভৃতি সকলেরই লোভ হওয়া স্বাভাৰিক। ইহার প্রত্যক্ষ প্রমাণ প্রত্যেক গ্রামেই আপনার অহরহ দেখিতেছেন । বর্গ না বুধিয়া চুক্তিসৰ্ত্তে আবদ্ধ হইয়া যাহারা জাভা ও মরিসাদৃ দ্বীপে দাসত্ব করিতে যায় তাহীদেরও ঐ অবস্থা। বর্তমানের দারিদ্র্যপীড়িত কঠোর জীবনসংগ্রামের মধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষার যথেষ্ট আৰশুকতা রহিয়াছে। বর্ণহরের অবিচার হইতে আত্মরক্ষা করিবার জগুও ইহার একান্ত প্রয়োজন। যতশীঘ্ৰ সাধারণের মধ্যে শিক্ষার দ্বার উদঘাটিত হইবে তত শীঘ্রই নিম্নস্তরের জনসমাজ শক্তিশালী হইয়। উঠিবে । এবং সামাজিক অবিচার ও অবজ্ঞাকে ঠেলিয়া ফেলিয়া ইহার আত্মগৌরবের সহিত অপ্রতিহত•গতিতে উন্নতির পথে যাত্রা করিবে । 鬱 জনসাধারণের মধ্যে শিক্ষাকে ব্যাপ্ত করিতে হইলে শিক্ষাকে সুলভ করিতে হইলে । কিন্তু বর্তমাণ সময়ে প্রাথমিক শিক্ষার ব্যয় ক্রমেই বাড়িয়া ঢলিয়াছে। পাচ বৎসর পুৰ্ব্বে মধ্যইংরেজী বিদ্যালয়ে যেখানে আট আণ1 ( ॥e ) বেতন ছিল, এখন সেখানে পাচলিক ( ১ - ) বেতন হইয়ছে । পাঠ্যপুস্তক খাতা ইত্যাদির ব্যয়ও পূৰ্ব্বপেক্ষা তিনগুণ বৃদ্ধি প্রাপ্ত ই ইয়াছে ॥.ঘর দরজা আসবাব পত্রের ব্যয়বাহুলো র ত কথাই নাই। অবশ্য পূৰ্ব্বাপেক্ষ শিক্ষার যে অধিকতর সুব্যবস্থ হইয়াছে তাহার কোনও সন্দেহ নাই । কিন্তু এই সুব্যবস্থার জন্য ব্যয় বুদ্ধির দ্বারা দরিদ্র চাষার ভারবৃদ্ধি করা উচিত নহে। বৃটিশ গভর্ণমেণ্ট শিক্ষাক্ষেত্রে সাম{ণীতির প্রতিষ্ঠা করিয়৷ আচগুলি সকলের জন্য বাণীমন্দিরের দ্বার উদঘাটিত করিয়া দিয়াছেন এবং তাহারই ফলে সৰ্ব্বসাধারণের মধ্যে আজ শিক্ষার প্রবল আকাঙ্ক জাগ্রত হইয়াছে। কিন্তু এই অভাব পূরণের উপযুক্ত, আয়োজন কোথাও বৰ্ত্তমান নাই | জগতের সর্বত্র দরিদ্রের পক্ষে শিক্ষা ক্রমেই সুলভ হইতে সুলভতর হইতেছে ; অfর আমাদের দেশে তাহা ক্রমেই অধিকতর মহাৰ্থ্য হইবে কেন ? যদি অর্থাভাবই বর্তমানে শিক্ষাবিস্তারের অস্তস্নায় হইয়া থাকে তবে অন্যান্য দেশের ন্যায় এদেশেও ধনী-সম্প্রদায়ের উপর শিক্ষাকর স্থাপিত হওয়া উচিত। এ দেশের প্রাথমিক শিক্ষার বিরুদ্ধে এই একটি গুরুতর অভিযোগ শোনা যায় যে, চাযার ছেলেরা ‘ক’এর কান মোচড়াইবার পূৰ্ব্বেই লাঙ্গলের সঙ্গে সম্বন্ধ ছিন্ন করে এবং নিম্ন প্রাইমারী পর্য্যস্ত পাঠ করিয়ু বিদ্যালয় পরিত্যাগ কবিবার সময় চাষের প্রতি তাহীদের BBBBB BBBS BB BBB BBB S BBBBB BBBBB BB দাসত্ব নহে এ জ্ঞান তাহীদের থাকে না । শ্রমের গৌরব বিস্মৃত হইয়া অলসতাকেই সে সভ্যতা বলিয়া মনে করে। এ অবস্থা সমাজের পক্ষে অকল্যাণকর । ইহা দূর করিতে হইলে আমাদের শিক্ষাপ্রণালীকে সংশোধন করা আবশ্যক । ইংলণ্ড, জাৰ্ম্মেনী ও আমেরিকশর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে লেখাপড় ও অণক কস ব্যতীত নিম্নলিখিত বিষয়ের কোন-না-কোনটি বিশেষরূপে শিক্ষা দেওয়া হর যথা—স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, গোষ্ঠবিজ্ঞান, কলকঞ্জ ও কাঠের কাজ, বাগানের জন্য সাধারণ কৃষিবিজ্ঞান। যে-সকল সহয়ে কলকারখানার প্রাধান্ত অাছে সেখানে যন্ত্রাদির কাজের প্রতি বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয় । মফঃস্বলের গ্রাম্য বিদ্যালয়ের ছাত্রেরা বাগান তৈয়ারি ও কৃষিবিজ্ঞান শিক্ষা করে। আমাদের এই বাংলাদেশ• কৃষিপ্রধান । প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে সাহিত্য, বিজ্ঞান ও অঞ্চশিক্ষার সঙ্গে কৃষিশিক্ষার ব্যবস্থা করা উচিত । কোনূ সারে কি ফসল সৰ্ব্বাপেক্ষা বেশি উৎপন্ন হয়, কি উপায়ে বৃক্ষের ফল-উৎপাদন শক্তি বৃদ্ধি পায়, কি উপায়ে কীট পোকার