পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা] “নমস্কার ।”

  • নমস্কার। আজ আমাদের পয়লা আষাঢ় !" ৩রা আষাঢ় কি করিয়া পয়লা হইতে পারে, সে-খবর পূৰ্ব্বাহেই সকলকে দিয়া রাখিয়াছিল, স্বতরাং বুঝিতে कां८ब्रां कहे शहेल ना । “বেশ! বেশ " “আজ কালিদাসকেও আমরা সম্মান করছি। কালিদাসের ছবি ত কোথাও পেলাম না। তাই মেঘদূতকে র্তার গৌরবের সাক্ষী করে রেখেছি। ঐ যে ওখানে। প্ৰণাম করুন ।”

অতিথিরা মালা পরিয়া খাইতে বসিলেন। স্বকাস্তরেবা অলক্ষিতে পরম্পর মালা-বদল করিয়াছে। রেবা আসিয়া হাটু গাড়িয়া সকলের কপালে চন্দনের ফোট দিয়া পরিপূর্ণ প্রেমের সহিত স্বামীর কপালে দিল । স্বকাপ্ত বলিল, “তোমার কপালে আমি দেবো।” “দাও।” অতিথিরা বলিলেন, “আমাদেরও অধিকার আছে। আমরা দেবো।” একে-একে সকলে উঠিয়া আঙলে চন্দন লইয়া রেবার কপাল ছু ইল মাত্র । স্বকাপ্ত অস্পষ্টস্বরে বলিল, “দক্ষিণা” ? একটা মৃদ্ধ হাসি ভাসিয়া গেল। স্বকান্ত আসিয়া রেবার চন্দন-চর্চা শেষ করিল। ততক্ষণে রেবা লাল হইয়া উঠিয়াছে। খাওয়া চলিতে লাগিল, গল্প হইতে লাগিল, মোমবাতি পুড়িতে লাগিল। ঘরের মধ্যে ফুলের ও খাদ্য-দ্রব্যের গন্ধ, বাতির আলো, হাসি, টুক্র টুকুর কথা, অর্থপূর্ণ চাহনি স্বপুরাজ্যের স্থষ্টি করিল। আয়োজন বেশী ছিল না, কিন্তু আন্তরিকতায় পূর্ণ ছিল। তাই সকলেই তৃপ্তি অনুভব করিল। - কি আনন্দ ! কি শাস্তি ! এতক্ষণে স্বকাস্তের বুক ভরিয়া উঠিল। রেবার মুখের দিকে চাহিয়া বলিল, “আমরা বছর-বছর এমনি পয়লা আষাঢ় করব কি বলে। রেবা ?” “নিশ্চয়। আর কালিদাসকে ডাকব ।” . অতিথিরা আনন্দের সহিত সায় দিল । পয়লা আষাঢ় 8ළු সেদিন আষাঢ়ের নিবিড় নিশীথে স্বকান্ত-রেবা দুজনে দুজনকে নিবিড় করিয়া পাইল । বাহিরে তখন জল ঝরিয়া পড়িতেছে। দুজনেরই গলা ছাড়িয়া গান গাহিতে ইচ্ছা করিতেছিল। রেবা বলিয়া উঠিল, “মা গো ! স্বকাস্ত ব্যস্ত হইয়া উঠিয়া বলিল, “কি রেবা ?” রেবা লজ্জিতভাবে বলিল, “কিছু নয়! আমার মনের মধ্যে কি যে হচ্ছে ! পৃথিবী এত স্বন্দর । জীবন এত মধুর! আমি মরতে চাইনে, চাইনে ৷” স্বকান্ত সস্নেহে বলিল, “কে তোমায় মৰ্বতে বলেছে, রেবা ?” e “জীবনে এ-রকম পয়ল আষাঢ় আর আসেনি, কখনো না। আমার কাদতে ইচ্ছে করছে। প্রণাম করি কালিদাসকে ৷” - এই বলিয়া যুক্তকরে অজানার উদ্দেশে প্ৰণাম করিল। এইরূপে স্বীকান্ত ও রেবার পয়লা আষাঢ়ের উৎসব সম্পন্ন হইল। পরের দিন সকাল হইতে আবার তাদের প্রতিদিনকার জীবন-যাত্রা আরম্ভ হইল। কিন্তু পয়লা আষাঢ়কে তারা কোনোদিন তুলিতে পারিল না। পর বৎসর পয়লা আষাঢ় যখন ঘুরিয়া আসিল, তারা আগের দিন রাতে সমস্ত সময় ধরিয়া জল্পনা-কল্পনা করিয়া রাখিল, পয়লা আষাঢ় কি করিয়া সম্পন্ন করিবে। এবার আর স্বকান্ত ইহার আয়োজনে তার সমস্ত মন দিতে লজ্জিত হইল না। এবারকার আয়োজন আরও বহুল ও আরও স্বঠ । এবার বন্ধুরা বেশী আসিল, দ্রব্যের সম্ভার কিছু বাড়িল এবং দুজনে খুব খাটিল। কিন্তু উৎসব-শেষে দুজনেরই মনে হইল, কোথায় যেন অসম্পূর্ণত রহিয়া গেল, এবারের পয়লা আষাঢ় গত বারের পয়লা আষাঢ়ের মত হইল না। সেই ফুলের গন্ধ, খাদ্যদ্রব্যের গন্ধ, সেই বাতির আলো, বেশী হাসি, টুকরা টুকরা কথা, অর্থপূর্ণ চাহনি সবই আছে । তবু স্বপ্ন-রাজ্য স্বষ্টি হইল না। বৎসরের পর বৎসরের ঘুরিয়া আসিতে লাগিল। যেসংসারে তাহারা দু-জন ছিল সেখানে নবীন অতিথিদের