পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8や নম্বরটা শুনিয়া ভদ্রলোক অত্যন্ত আগ্রহাম্বিত হইয়া উঠিলেন। বলিলেন, সে ত আমারই ইম্পিরিয়াল হোষ্টেল—শুই যে দোতালায়। বলিয়াই তিনি আর একবার তাহার হাতের ঘটিটা উচু করিয়া তুলিয়া ধরিয়া সেই ঝুলিয়া-পড়া ভাঙ বারান্দাটার পাশে কয়েকটা ঘর দেখাইয়া দিলেন । এমন অপ্রত্যাশিতভাবে এত শীঘ্ৰ যে বাড়ীর সন্ধান মিলিবে অজিত তাহা ভাবিতে পারে নাই, অত্যন্ত আনন্দিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিল, রমেশ চক্রবর্তী কোন ঘরে থাকেন ? তিনি বলিলেন, রমেশ চকোত্তি ? অামুন, আমার কাছে সরে আস্কন, আমি দেখিয়ে দিচ্ছি। বলিয়া আর-একবার তিনি তাহার হাতের ঘটিটা তুলিয়া ধরিয়া দেখাইয়া দিলেন, সামনের পাচখানা ঘর বাদ দিয়ে, এই যে দেখছেন, জানালার পার্থী-ভাঙা এই ঘরট, এইখান থেকে আমার হোষ্টেল আরম্ভ হয়েছে। গুস্থন এইখান থেকে,—রাম, দুই, তিন, তার পরেই যে দেখছেন রুম নম্বর-ফোর, ওই ঘরে গিয়ে দেখুন, পশ্চিম দিকের এক কোণে মাদুর-বিছানো যে সিটুখান, সেইখানা তার । ব্যস, চলে যান এইবার সোজা এই সিড়ি ধরে’—কিন্তু দেখবেন, একটুখানি ব-পাশ চেপে যাবেন মশাই,সিড়িটা একটুখানি নড়বড়ে’ হ’য়ে রয়েছে, বুঝলেন ? এক-টানে এই এতগুলা কথা বলিয়া তিনি সেইখানে দাড়াইয়া ইাপাইতে লাগিলেন । অজিত অতি কষ্ট্রে, অতি সাবধানে সিড়ি ভাঙিয়া ইম্পিরিয়াল-হোষ্টেলের সেই রুম্ নম্বর ফোরের দরজায় গিয়া ডাকিল, রমেশদ । রমেশ তখন তাহার জুতায় কালি-ত্রুশ ঘষিতেছিল, মুখ তুলিয়া দোরের গোড়ায় অজিতকে দেখিয়া বলিল, কে, অজিত ? দেশ থেকে আসছিস্ ? আয় । বলিয়া আবার সে তাহার নিজের কাজে মন দিল । কদমাক্ত ক্যানভাসের জুতা জোড়াটি খুলিয়া অজিত তাহার মাছুরের একপাশে গিয়া বসিল । সম্মুখে ওই একটি দরজা ব্যতীত ঘরের ভিতর আলো-বাতাস প্রবেশ করিবার অন্য কোনও পথ ছিল না, তাহার উপর মেঘলা আকাশে সুয্যের রশ্মিটুকু৪ ঢাকা পড়িয়াছে, কাজেই, প্রবাসী—কাৰ্ত্তিক, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খং ঘরের ভিতরটা বেশ ভাল করিয়া নজরে পড়িতে আজি একটুখানি দেরী হইল। দেখিল, সেই বায়ুলেশ অন্ধকার ঘরখানার মধ্যে আরও তিনখানা সীট প য়াছে। তাহার উপর, প্রত্যেকের ছোট-খাটো অনে গুলি করিয়া আসবাব,—মাটিতে যাহাঁদের জায়গা হয় ন তাহারা দেওয়ালে উঠিয়াছে, এমনি করিয়া ঘরের মে এবং দেওয়ালে কোথাও এতটুকু তিল-ধারণের স্থান না একটা মাছুরের উপর দাড়াইয়া দেওয়ালের দিকে ফিরাইয়া, একজন লোক ক্রমাগত ওঠ-ব’স করিয়া :ে করি ব্যায়াম চর্চা করিতেছিল। একজন যুবক দে ঠেস্ দিয়া গুনগুন করিয়া গান করিতে-করি বিড়ি টানিতেছিল, আর একটা মাদুর খ পড়িয়াছিল । রমেশের শয্যার একপাশ্বে দেয়ালের গায়ে বে এক মাসিক-পত্রিকা হইতে কাটা একটি বিবেকাননে এবং একটি সিক্ত-বসনা নারীর, দুইখানি রঙীন ছ পাশাপাশি টাঙ্গানে ছিল। জুতা ব্রুশ, শেষ কf রমেশ তাহার জুতা-জোড়াটি তাহাসই নীচে দু পেরেকের গায়ে ঝুলাইয়া রাখিল । রমেশকে এমনভাবে চুপ করিয়া থাকিতে দেf অজিত কেমন যেন একটুখানি বিব্রত হইয়াই ভাবিে ছিল, এখানে আসিয়া উঠা তাহার উচিত হয় ন চক্ষুলজ্জার খাতিরেই হয়ত রমেশ তাহাকে আসি লিখিয়াছিল, সে যে সত্যসত্যই এখানে আসিয়া হা:ি হইবে তাহা সে ভাবে নাই । অজিত বলিল, রমেশ তুমি ত আপিসে যাবে ? রমেশ এইবার মাছরের উপর ভালো করিয়া চাপি বসিয়া বলিল, ই, আপিসে যাবো বই কি !—তাহার ‘ উপরের কড়িকাঠের দিকে একবার তাকাইয়া কিয়ং চিন্তা করিয়া বলিল, এমন হটু করে চলে এলি আজি কিন্তু—আচ্ছা, আপিসে-টাপিসে ঘুরে ফিরে’ দ্যা আমিও দেখি সন্ধান করে’—পচিশ-ত্রিশ টাকার মত এক কিছু মিলে’ যেতেও পারে। ম্যাটিকুলেশন পাশ কর কি হবে ? চাকুরীর বাজার দেখতে হবে ত? : কি বলে হে প্রোফেসার ?