পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b*Se জলস্রোত এবং হংসের দল লিন লিয়াঙ, কর্তৃক ( ১৫ শতাব্দী) অঙ্কিত] ঘরে আছে। চারদিকে ক্ৰন্দনের রোল,—রাজা, প্রজ, সাধু, যোদ্ধ, দেবযোনি, দেবদেবী, পশুপক্ষী সমস্ত স্বষ্টি চীৎকার কবৃছে ; মধ্যে বুদ্ধদেব শাস্তিতে শয়ান। নকল ছবিতে শিল্পীর কল্পনার বিরাট্রভাব অনুভব করি । । মূল ছবি না জানি কি ছিল । বৌদ্ধ-বিষয়ে শিল্পী আরও ছবি এঁকেছেন—“শাক্যমুনি” “বোধিসত্ত্ব”, “সামস্তভদ্র”, “মধুত্র” । শিল্পীর শেষ ছবি একটি স্থানচিত্র (Landscape); এসম্বন্ধে এক কিম্বদন্তী আছে। সম্রাট বলেছিলেন এ-ছবি অঁাকৃতে । ছবি আঁকা শেষ হ’য়ে গেলে, শিল্পী তার আবরণ খুলে দেখালেন। সম্রাটু মুগ্ধ হয়ে দেখলেন, অপুৰ্ব্ব দৃশু—বন, পৰ্ব্বত, পৰ্ব্বতের উপরে মানুষ, অনেক দূরে আকাশে পাখীর দল উড়ে চলেছে। শিল্পী প্রবাসী-কাত্ত্বিক, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ২য় খণ্ড বললেন “দেখুন সম্রাটু, পৰ্ব্বতের গহ্বরে এক দেবযোনি বাস করে।” এই কথা বলে হাততালি দিলেন, আর অমুনি গহ্বরের প্রবেশ পথ খুলে গেল। শিল্পী আবার বললেন, “এর ভিতর অনিন্দ্যস্থনদর, আমি পথ দেখিয়ে দিচ্ছি।” এই বলে ভিতরে ঢুক্লেন আর দরজা বন্ধ হয়ে গেল । বিস্ময়াবিষ্ট সম্রাটু কিছু বলার পূৰ্ব্বেই দেখলেন সমস্ত ছবি লুপ্ত হয়ে গেছে, কেবল থালি সাদা দেওয়াল পড়ে’ রয়েছে । এই সময় থেকে স্থান-চিত্রের খুব আদর আরম্ভ হয় । লি স্ব-হিস্কন ওয়াঙ উই স্থানচিত্রের জন্য বিখ্যাত । এরা অনেক লম্বা স্থানচিত্র (roll) একেছেন । এ-ছবি ঝুলিয়ে রাখার নয়, গুটিয়ে রাখতে হয়। চীনাদের প্রতিভা স্থানচিত্রে বিশেষভাবে পরিস্ফুট। পাহাড়, ঝরণা, বন, জঙ্গল, ফুল, লতা, পাতা, পাখী, জীবজন্তু চিত্রকরের কাছে যেমন আমল পেয়েছে মানুষ তেমন পায়নি । তা’র যে বাইরের দৃপ্তমান জগতের ছবি আঁকে সেটা তার মূৰ্ত্তির প্রকাশ নয়, কিন্তু তার ভাবের (mood) প্রকাশ। যেমন ঝরণা অঁাকবে তার তীব্র গতির এবং জলোচ্ছাসের ; পৰ্ব্বত অঁাকবে তার উচ্চতার ; আকাশ অঁাকবে তার দূরত্ব এবং বিস্তৃতির (space) । ওয়াঙ উই একজন উচ্চদরের কবি ছিলেন। চীনেরা বলত, “ওয়াঙ উই ছবি ছিল কবিতা, আর কবিতা ছিল ছবি।” তিনি সাহিত্যিক আর্টিষ্টদের দল স্থাপন করেন । হান ক্যান বিখ্যাত ছিলেন ঘোড়া আঁকার জন্য । র্তার আঁকা ছবি পরবর্তী যুগের চীন এবং জাপানী আর্টিষ্টদের আদর্শ ছিল। তার সময়ের সম্রাটের আস্তাবলে চল্লিশ হাজারের উপর ঘোড়া ছিল। শিল্পী সেখানে গিয়ে ঘোড়া অহুশীলন করতেন। তার ছবির নাম “তাতার শিকারী”, “শত অশ্বশাবক”, “খোটানের উপঢৌকন পীত অশ্ব” ইত্যাদি। খোটানের সঙ্গে একসময়ে চীনের খুব সম্বন্ধ ছিল । খোটানের পুরাকীৰ্ত্তিসমূহ এখন আবিষ্কৃত হচ্ছে। মধ্য এশিয়ায় অবস্থিত খোটান এক সময় সমস্ত এশিয়ার এবং পূর্ব ইউরোপের মিলন স্থল ছিল। গ্রীক, পারস্ত, ভারতীয় চীন প্রভৃতি