পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ? . নিয়ম ব্যাখ্যা করিতে সমর্থ হন। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যাইতে পারে যে যৌগিক রাসায়নিক পদার্থ বিশুদ্ধাবস্থায় যে কোনো উপায়েই সংগৃহীত হউকৃ না কেন, .প্রত্যেকটিতেই মূল পদার্থগুলি একই পরিমাণে, সম্মিলিত হইয়া অবস্থান করে, ইহাই রাসায়নিকের বিশ্বাস। লবণ" একটি যৌগিক পদার্থ-সমুদ্রের লবণাক্ত জল হইতে বিশেষ প্রক্রিয়ার সাহায্যে ইহা পাওয়া যাইতে পারে, আবাবু বধ্যভারতের পাৰ্ব্বত্য প্রদেশ হইতে ও ইহা •সংগৃহীত হইতে পারে। এই উভয়বিধ লবণকে শোধিত 'করিয়া রাসায়নিক বিশ্লেষণ করিলে দেখা যায় যে বিশ্লিষ্ট মূল পদার্থ দুইটি একই পরিমাণে উভয় ক্ষেত্রে অবস্থান করিতেছে। ড্যালটন বলিলেন যেহেতু প্রত্যেকপ্রকারের পরমাণুর ভার স্বতন্ত্র এবং রাসায়নিক সম্মিলনে কোন অজ্ঞাত শক্তি-প্রভাবে পরমাণুগুলি বিশেষভাবে পরম্পরের সান্নিধ্যে অবস্থান করে মাত্র। একটি অন্যটির মধ্যে আন্তঃপ্রবিষ্ট হয় না, সুতরাং আণবিক পরিমাণের এই নিত্যতা বিশেষ আশ্চর্য্যের বিষয় নহে। যাহ হউক ড্যালুটনের পরমাণুবাদ যে নব্য রসায়ণের উন্নতির জন্য অনেকাংশে দায়ী ইহা অবিসংবাদে স্বীকৃত হয় । এই সময়েই বার্জিলিয়ুস্থ মূল পদার্থগুলির আণবিক 'eার নির্ণয়কার্য্যে নিযুক্ত হন এবং উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্দুেই এক বিস্তৃত তালিকা প্রকাশ করেন। কিন্তু পক্ষপাতশূন্ত হইয়া দেখিতে গেলে, রসায়নশাস্ত্র এ বিষয়ে অপরিশোধ্য ঋণে আবদ্ধ এক জন ইতালীয় পণ্ডিতের নিকট। . আভোগেন্দ্রে। যাহা বলিতে চাহিয়াছিলেন তাহা প্রথমে স্বম্পষ্টভাবে প্রকাশ করিতে পারেন নাইবস্তুতঃ তাহার নিয়ম প্রথমে স্বয়ং-বিরোধী হইয় পড়িয়াছিল, স্থতরাং রাসায়নিক-সমাজে আদৃত হয় নাই। কয়েক বৎসর পর, আভোগেন্দ্রোর এক প্রিয় শিষ্য, ক্যানিজেরে আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সভাতে অধ্যাপকের বক্তব্য অতি সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করেন এরং গুরুভক্তির নিদর্শনস্বরূপ সম্পূর্ণ কৃতিত্ব আভোগেন্দ্রোর উপর অর্পণ করেন । রসায়ন-শাস্ত্রের সহিত যাহার কিছুমাত্রও পরিচয় আছে তাহার নিকটেও আভোগেদ্রোর নাম অতি , পরমাণুর প্রকৃতি ११ স্বপরিচিত। কিন্তু কয়জনে এই মূল্যবানু সত্যের প্রকৃত আবিষ্কারক ক্যানিজেরোর নাম শুনিয়াছেন ? - কাঠিন্য, তারল্য এবং বায়বীয়ত্ব বস্তুর অতি পরিচিত ধৰ্ম্ম । ইহার কোনটিই রাসায়নিক ধৰ্ম্ম নহে কারণ তুষারকে উত্তাপ-সাহায্যে ক্রমশঃ জল ও বাম্পে পরিণত করিলে এই পরিবর্তনে বস্তুপূৰ্ম্মের বিকার হয় বটে পরস্তু কোনপ্রকার রাসায়নিক পরিবর্তম সাপিত হয় ন; এক্ষণে প্রশ্ন উঠিবে পদার্থের এই অবস্থা-বিকৃতির কারণ কি ? বিগত শতাব্দীর মধ্যভাগে একদল পদার্থতত্ত্বজ্ঞ পণ্ডিত সিদ্ধান্ত করিয়াছিলেন যে এই অবস্থাভেদ আণবিক সংহতির আপেক্ষিক দূরত্বের বিভিন্নতার উপব নিভর করিতেছে । কথাটা আরো বিশদ করিয়া বলা আবশ্যক । মূল পদার্থের অবিভাজ্য চরম অংশ যেমনপরমাণু (অ্যাটম্), যৌগিক পদার্থের চরম অংশ সেইরূপ অণু মলিকিউল ) । অবশ্য অণু হইতে রাসায়নিক বিশ্লেষণ সাহায্যে দুই বা, ততোধিক পরমাণুর উদ্ভব হইতে পারে। দুঃখের বিষয় বাংলা ভাষায় অণু এবং পরমাণু একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। পদার্থতত্ত্বজ্ঞ পণ্ডিতেরা বলেন, পদার্থ যে আণবিকসংহতিতে ঘটিত, তাহাদিগের মধ্যে আকর্ষণী এবং বিকর্ষণী এই উভয়প্রকার বিপরীত-ধৰ্ম্মী শক্তি বৰ্ত্তমান। কঠিন অবস্থায়, বস্তুর এই আণবিক আকর্ষণী শক্তি বিকর্ষণী শক্তি অপেক্ষা প্রবলতর এবং নিকটবৰ্ত্তী দুইটি অণুর মধ্যে আপেক্ষিক দূরত্ব অল্প । বাপাবস্থায় পদার্থে ঈঙ্গর বিপরীত ধৰ্ম্মগুলি প্রবল এবং তরল অবস্থায় এই উভয়প্রকার শক্তির পরিমাণের মধ্যে বিশেষ অসামঞ্জস্য থাকে না। পদার্থের অণুগুলি আবার নিশ্চল নহে—অবিশ্রান্ত ইতস্তত: দ্রুত ধাবমান । , বস্তুর উষ্ণত যত বাড়িতে থাকে এই আণবিক গতি ততই ক্ষিপ্ৰ স্তর এবং আণবিক দূরত্ব বৃদ্ধি পাইতে থাকে। উত্তাপে যে বস্তুর আয়তন বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ইহা আর কাহার না জানা আছে ? * উনবিংশ শতাব্দীর প্রারম্ভ হইতে শেষ পর্য্যস্ত আণবিক মতবাদের এক বিশিষ্ট যুগ কাটিয়া গিয়াছে—বিংশ শতাব্দীর প্রথম ইষ্টতে নুতন যুগ আরম্ভ হইয়াছে। পুরাতন যুগের মত বা পরমাণুর প্রকৃতি সম্বন্ধে বিশেষ