পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] • সম্বন্ধ কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে ৰখন সে-বিষয়ে আমাদের ধারণা সেরূপ স্পষ্ট হইয়া উঠে নাই তখন একাধিক দার্শনিক লেখক লিথিয়াছেন যে আধুনিক পরমাণুবাদ .একটা মূল্যবান সত্য প্রমাণ করে। বস্তুর শেষ পরিণতি যদি বৈদ্যুতিক শক্তিতে হয় ধরিয়া লওয়া যায়, তবে বস্তুর পরিণতি যে এক অনির্দিষ্ট শূন্যতায় তাহা উপলব্ধি করিতে বিশেষ আয়াস আবশ্বক করে না। আধুনিক পরমাণুবাদ, জগং, মায়াময় এব ইহসংসারের সকল বস্তুই অনিত্য এই •বৈদান্তিক তথ্যের অমুকুলে মত প্রদান করে কি না বলা কঠিন, তবে পদার্থের চরম পরিণতি যে শুধু বৈদ্যুতিক শক্তিতে একথা এখনও জোর করিয়া বলা চলে না । বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে বুঝিতে হইলে র্যাডিওঅ্যাক্টভিটি শাস্ত্রের কয়েকটি মোটামুটি কথা জানা আবশ্বক। সকলেই জানেন যে বৰ্ত্তমান শতাব্দীর প্রারম্ভে একজন ফরাসী বৈজ্ঞানিক এবং তাহার মনস্বিনী পত্নী রেডিয়ম্ নামক একটি অদ্ভূত পদার্থের আবিষ্কার করেন। দেখা গিয়াছে, রেডিয়ম্ হইতে অনবরত শক্তির স্বতঃ বিকিরণ হয়—ইহাকে নিয়ন্ত্রিত করা মানুষের সাধ্যায়ত্ত নহে। অন্য যে-সকল পরিবর্তন এতাবৎ কাল বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের বিষয়ীভূত হইয়াছে তাহারা সকলেই পারিপার্থিক অবস্থা-পরিবর্তনের সঙ্গেসঙ্গে পরিবর্তিত হয় কিন্তু রেডিয়ম্সংক্রান্ত পরিবর্তনে এই নিয়ম একেবারেই গাটে না। আবার কিছু দিন পরে দেখা গেল, যেখকাচপাত্রের মধ্যে ক্ষুদ্র রেডিয়ম-কণিকা আব ছিল তাহাতে কয়েকটি নূতন পদার্থের আবির্ভাব হইয়াছে। বৈজ্ঞামিকদিগের মধ্যে র্যাহারা সংশয়বাদী তাহারা প্রথমে কথাটা উড়াইয়া দিতে চাহিলেন। কেহ বলিলেন যে প্রাপ্ত সীসক লেড) রেডিয়মের তেজঃপ্রভাবে কাচ-পাত্র হইতে বিচ্ছিল্প হইয়া ভিতরে আসিয়া পড়িয়াছে, কারণ জানা ছিল যে সাধারণ কাচে যে সামান্যপরিমাণ সীসক না থাকে এমন নহে। বহু বাদ-বিতণ্ডার পর অবশেষে সডি, ফায়ান্স প্রভৃতি পণ্ডিতবর্গের গবেষণার ফলে স্থির হইল যে রেডিয়মের পরমাণুর ভিতর কোন অজ্ঞাত কারণে শক্তির আতিশয্য ঘটিয়া থাকে এবং তাহার ফলে রেডিয়মূ-পরমাণুর কতক অংশ বিশ্লিষ্ট হইয়া স্বল্পভার পরমাণুতে পরিবৰ্ত্তিত হইতে থাকে এবং কাচপাত্র মধ্যে পরমাণুর প্রকৃতি . אף যে সীসক বা হিলিয়ম পাওয়া যায় তাহা রেডিয়মূ-পরমাণুর বিশ্লেষণ হইতেই সঞ্জাত। পরমাণুর এই ধ্বংসবাদ যদি সত্য বলিয়া মানিয়া লই তবে যৌগিক অণু হইতে ইহার আর বিশেষত্ব রহিল কি ! নব্য বিজ্ঞান পরমাণুর শক্তির এই আতিশয্যের কারণ নির্দেশ করিতে অক্ষম এবং এই ধৰ্ম্ম কেন শুধু অপেক্ষাকৃত গুরুভার মাত্র কয়েকটি পরমাণুর ভিতর আবদ্ধ তাহা বৈজ্ঞানিক বলিতে পারেন না। এ-সম্বন্ধে বৈজ্ঞানিক মহলে--বিশেষভাবে ইংলণ্ড ও জাৰ্ম্মানীতে দ্রুত গবেষণা চলিতেছে এবং আশা আছে অদূর ভবিষ্যতে এই গুপ্ত তথ্যটি বৈজ্ঞানিকের সমক্ষে আত্মপ্রকাশ করিবে। তর্কের পাতিরে যদি মানিয়া লই যে, সকল পরমাণুকেই ইচ্ছানুসারে পারিপার্থিক অবস্থার পরিবর্তন সাধন করিয়া স্বল্পভার পরমাণুতে পরিণত করা সম্ভবপর, তাহ হইলে মানুষ চতুপাশ্বে ইতস্ততোবিক্ষিপ বস্তুনিচয়কে অনন্ত শক্তির আধার মনে করিয বিস্ময়ে স্তম্ভিত হইবে । পরশ-পাথরের অস্তিত্ব তথণ আর দিবাস্বপ্ন বলিয়ু মনে হুইবে না। তবে একথা স্বীকাৰ্য্য যে, লৌহকে স্বর্ণে পরিণত করিতে যে প্রচণ্ড শক্তির প্রয়োজন হইবে তাহার মূল্যের তুলনায় স্বর্ণের মূল্য যৎসামান্য বলিয়া বিবেচিত হইবে । বিশালকায় এঞ্জিন চালাইবার জন্য আর রাশি রাশি অঙ্গার বা তৈলের আবশ্বক হইবে ন, সামান্ত ধূলিমুষ্টির মধ্যে যে বিরাট শক্তি নিহিত আছে তাহার সাহায্যে বৰ্ত্তমান সভ্যতার শেষ চিহ্নটুকু মুছিয়া ফেলা সম্ভবপর হইবে। কয়েক বৎসর পূৰ্ব্বে বৃদ্ধ বৈজ্ঞানিক সাৰ্ব অলিভার লজ, এই আণবিক শক্তির বিশালতাকে লক্ষ্য করিয়া ইউরোপকে আশার বাণী শুনাইয়াছিলেন, কিন্তু কে বলিবে ইউরোপের যাম্বিক সভ্যত যে-যুগের’ আশা-পথ চাহিয়৷ বসিয়া আছে তাঙ্গ। প্রলয়ঙ্করী ভয়ঙ্কর মূৰ্বিতে দেখা দিবে কি ন । রেডিয়ম্ ও তাহার সমধম্মী বস্থগুলি যখন শক্তি বিকিরণ করিতে থাকে তখন তিনপ্রকারের রশ্মি নির্গত হয়। গ্রীকৃ বর্ণমালার প্রথম তিনটি অঙ্গর দ্বারা ইহাদিগকে বিশিষ্ট করা হয়। রাসায়নিক পরীক্ষর ফলে প্রমাণিত হইয়াছে যে, আলুফা রশ্মিসমূহ তড়িৎসযুক্ত • হিলিয়ম নামক বাম্পের পরমাণুর সমষ্টি ভিন্ন আর কিছুই