পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] ASAMMS • ৩। বনবাসে যাইবার পূৰ্ব্বে সীতাকে সাধারণ অযোধ্যাবাসীরা দেখে নাই। এরূপ প্রমাণ ছাড়া ঐতিহাসিক প্রমাণ এইরূপ পাওয়া যায়। w পূৰ্ব্বে উত্তর-ভারতের প্রায় সকলদেশেই শ্রাবণ মাসের পূৰ্ণিমার কাছাকাছি ঝুলনের "সময়ে কুলকামিনীদের একটা মহোৎসব প্রচলিত ছিল, ও এখনও কিছু কিছু আছে মুসলমানদের বহুকালব্যাপী অত্যাচারে ইহা এলোপ পায় নাষ্ট বটে, কিন্তু এখন ইংরেজী শিক্ষা ও পাশ্চাত্য সভ্যতার গুণে লোপ পাইতে বসিয়াছে। সে উৎসবের গানের আভাসে বোধ হয়, এই সময়ে অবিবাহিত কস্তারা ও অল্পবয়স্ক বধূর পিত্রালয়ে গিয়া উৎসব করিত। শুভদিনে স্বানান্তে দেবীর পূজা করিয়া, তাহাদের, প্রত্যেকে এক বা একাধিক দোনাতে কিছু মাটি দিয়া তাহাতে কতকগুলি যব পুতিয়া, দোনাটি কোনও পবিত্র স্থানে অন্ধকারে রাশিয়া দিত। অন্ধকারে পীত বর্ণের যবের গাছগুলি হইলে তাহাকে “ভূজরিয়া" বলে। পূর্ণিমার দিন এই ভূজরিয়ার দোনা জলে বিসর্জন দিয়া আবার প্রসাদীস্বরূপ তুলিয়া গাছগুলি ধুইয়া লইতে হয়। নগরের বাহিরে, কোনও জলাশয়ের কাছে বড় বড় গাছে দোলা খাটাইয়া দোল থাইতে ও গীত গাহিতে হয়। তাছাদের ভ্রাতারা তাহীদের রক্ষা করে । * যাহার ভ্রাতা নাই সে কাহাকেও ধৰ্ম্ম-ভ্রাত নিযুক্ত করিয়া রক্ষা করিবার ভার দেয়। উৎসব শেষে ভ্রাতাদের কানে দু-একটি ভূজরিয়া [ যবের গাছ ] গুজিয় দিয়া অৰ্চনা করে ও প্রণাম বা আশীৰ্ব্বাদ কবে । ভ্রাতারাও আশীৰ্ব্বাদ বা প্ৰণাম করিয়া ভগ্নীদের উপহার দিয়া থাকে। " এখনও এ-উৎসবের কিঞ্চিং শেষাংশ মৃজাপুর ও কাশীর মধ্যপ্রদেশে আছে, তাহাকে কজরীউৎসব বলে। মুসলমান রাজত্ব-কালে এই কজরী-উৎসবের সময়ে মুসলমান বীরের যুদ্ধ বা লুট করিয়া স্বন্দরী সংগ্ৰহ করিত। ক্ষত্রিয়েরা প্রাণপণ করিয়া আপনাদের ভগ্নী বা" ধৰ্ম্ম-ভগ্নীদের রক্ষা করিত। - খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতকের শেষার্কে চন্দেলদের রাজধানী মহোবা নগরে এইরূপ উৎসব সৰ্ব্বাপেক্ষা বেশী জাক অবরোধ-প্রথা సా(t জমকের সহিত হইত। আজমীর-পতি চোহান পৃথ্বীরাজ মহোবার এ স্বনাম সন্থ করিতে পারিলেন না। তিনি ১২৩৯ সম্বতের শ্রাবণ মাসে আপনার সমস্ত সৈন্য ও সামন্ত লইয়া মহোবার পৌনী [ পাৰ্ব্বণী ] দেখিতে আসিলেন। তিনি এই সময়ে রাজকন্যাকে হরণ করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। ইহাতে তিনি কৃতকাৰ্য্য হন নাই বটে কিন্তু কীৰ্ত্তি-সাগরের তীরে যে যুদ্ধ হইয়াছিল তাহাতে সাগরের জল রক্তবর্ণ হইয়া গিয়াছিল। . যুক্তপ্রদেশে আলহার গান প্রচলিত আছে। এই গানের সহিত এই যুদ্ধের কথাও গীত হইয় থাকে। মহোবায় রাজকন্ত চন্দ্রাবলী ও রাজ-রাণী মলহন। এক সহস্ৰ সখী সহিত পোনী করিতে কীৰ্ত্তি-সাগরের তীরে যাত্রা করিলেন। এই কীৰ্ত্তি-সাগর তখনকার চন্দেল-রাজ পরমদিদেবের পূর্ব-পুরুষ কীৰ্ত্তিবর্ণার কীৰ্ত্তি, ও মহোবা নগরের কাছে এখনও চন্দেল রাজাদের কীৰ্ত্তির সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে। রাণী ও রাজকুমারীর দোলাগুলি সুবর্ণ-মুত্র-গ্রথিত হরিৎবর্ণ কাপড় ঢাকা, দোলার কাষ্ঠাংশ হরিৎ বর্ণেরঞ্জিত। বাহকদের পরিহিত ধুতি অঙ্গরাখা পাগ ইত্যাদিও হরিৎবর্ণে রৰিত। সর্থীদের দোলাগুলিও হরিং বর্ণে রঞ্জিত ও হরিৎ কাপড়ে বেষ্টিত। সকলের শাটী কঁাচলী ওড়না হরিৎ বর্ণে রঞ্জিত। দর্শকেরাও ঐরূপ হরিং বর্ণের বেশ ধারণ করিয়া আসিয়াছে। সাগরতীরে বড় বড় গাছে দড়ি থাটাইয়া দোলনা করা হইয়াছে। এই দড়িগুলিও হরিৎবর্ণের রেশমের । রাজবাটী হইতে যাত্রা করিবার সময়ে রাণী মলহন প্রত্যেক সর্থীর দোলাতে এক এক হাড়ি উৎকৃষ্ট বারুদ তুলিয়া দিলেন ও সকলের হাতে এক-একখানি ভাল । ইস্পাত ও এক-একখানি চকুমকি-পাথর দিলেন। প্রত্যেক সখী ও রাজকন্যাকে এক-একখানি বিষাক্ত ছুরি দিলেন ও এক এক মোড়ক মহুরী [ অতি প্রখর বিষ } দিয়া সকলকে সম্বোধন করিয়া বলিতে লাগিলেন—“আমাদের পোনীর পরিণাম এ-বৎসর কি হইবে একমাত্র ভগবানই জানেন। মহোবার প্রধান রক্ষক বীর ভ্রাতৃদ্বয় লালুহা ও উন্ন রাগ করিয়া কনৌজে গিয়া বসিয়া আছেন আর চোহান রাজ পোনী দেখিবার ছল করিয়া সাত লক্ষ সেনা