পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సి\ు লইয়া আসিয়াছেন । অতএব তোমরা সকলে• শপথ কর যদি* চোহান তোমাদের রক্ষকদের মারিয়া বা পরাজিত করিয়া তোমাদের বন্দী করে তাহা হইলে কেহই জীবিত অবস্থায় আজমীর যাইলে না। তোমাদের যে বিষাক্ত ছুরি দিয়াছি তাহা পেটে মারিলে নিশ্চয় মৃত্যু হইবে। তাহাতে সাহস ন হইলে বারুদে আগুন দিবে। তাহার অবসর না পাইলে মহুরী মুখে দিবে। কিন্তু কখনও চোহানের গৃহে পদার্পণ করিবে না।” এইরূপ উপদেশ দিয় সকলকে শপথ করাইয়া রাণী সাগরাভিমুখে যাত্রা করিলেন। যুবরাজ ত্ৰৈলোক্য বর্শ্ব, তাহার অম্বুজ রণজিং ও রাণী মলহনার ভ্রাতার পুত্র অভয় এই তিন জন সৈন্ত সহ হরিংৰণ পরিচ্ছদে ভূষিত হইয়া রমণীদের রক্ষকরূপে যাত্রা করিলেন । উৎসব শেষ হইবার পূৰ্ব্বে, এক সময়ে চোহান বীর আপনার সেনাপতিদের আজ্ঞা করিলেন—“যেরূপে পার রাজকুমারীকে বন্দিনী করিয়া আন, আমার পুত্রের সহিত তাহার বিবাহ দিব।" চোহান সামন্তর যুদ্ধ করিতে করিতে রাজকুমারীর দিকে অগ্রসর হইয় এক বিষম বাধা পাইলেন। কোনও কারণে অদ্বিতীয় বীর ভ্রাতাদ্বয় আলহাও উদন মহোবাত্যাগ করিয়া কনোজ-পতি জয়চন্দের আশ্রয়ে বাস করিতেছিলেন ; পৃথ্বীরাজের আগমন-সংবাদ পাইয়া উদন থাকিতে পারিলেন না। আপনার অন্তরঙ্গ বন্ধু জয়চন্দের ভ্রাতার পুত্র লাখণু রাণাকে সসৈন্তে সঙ্গে লইয়। মৃগয়ার ছল করিয়া কনোজ ত্যাগ করিলেন। পথে সসৈন্তে সন্ন্যাসীর বেশ ধারণ করিয়া কীৰ্ত্তি-সাগরের একতীরে ধুনি জালাইয়া বসিয়া ছিলেন । চোহান সামন্তর দেখিল রাজকুমারী এক গাছতলায় বারুদ পাতিয়া তাহার উপর চকমকি লইয়া দাড়াইয়া আছেন, ও তাহার চতুদিকে সন্ন্যাসীরা অদ্ভুত কৌশলে যুদ্ধ করিতেছে। তাহার অগ্রসর হইতে সাহস করিলেন না। উদন ও লাখনের সহিত যুদ্ধে পরাজিত হইয়া পৃথ্বীরাজ পলাইয়া গেলেন। চন্দ্রাবলী, কিন্তু, উদনের যুদ্ধ-কৌশল দেখিয়া তাহাকে চিনিয়া ফেলিলেন। এই ঘটনার কয়েক মাস পরে পৃথ্বী আবার আক্রমণ করিয়া চনেীল রাজ্যের পশ্চিমাংশ জয় করিয়া লইলেন। sk প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড' অতএব এরূপ স্বযোগে যে কেবল মুসলমানেরাই সুন্দরী সংগ্ৰহ করিত তাহা নহে, হিন্দু ক্ষত্রিয়েরাও করিত। সম্ভবতঃ মুসলমানের এই হিন্দু ক্ষত্রিয়দের অন্থকরণ করিয়াছিল মাত্র। তবে, প্রভেদ এই ছিল ষে হিন্দু রাজারা কন্যা হরণ করিয়া শাস্ত্রমত বিবাহ করিতেন, ও ক্ষত্রিয়দের মধ্যে এইরূপ হরণ-বিবাহই প্রচলিত ও সম্মানিত ছিল। কিন্তু মুসলমানের দাসী করিয়া রাখিত বলিয়া অনেক কন্যা আত্মহত্যা করিত। * . মৃজাপুর ও কাশীর মধ্যে যে ক্ষত্রিয় বীরেরা মুসলমানদের সহিত যুদ্ধ করিয়া রমণীদের রক্ষা করিয়াছিল ও যুদ্ধে দেহ রক্ষা করিয়াছিল তাহাদের প্রতিমূৰ্ত্তি ঐ প্রদেশে আজ পর্য্যন্ত পূজিত হয়। মুসলমানদের চক্ষুর অন্তরালে কুলবালাদের রাখিবার জন্য অবরোধ-প্রথার কঠোরতা বৃদ্ধি করা হইয়াছিল। কিন্তু এ অবরোধ-প্রথা সম্রাস্ত হিন্দু-পরিবারে মুসলমান-আক্রমণের পূৰ্ব্বে ষে ছিল তাহারও যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। অবরোধ-প্রথা খৃষ্টজন্মের ৫।৬ শত বৎসর পূৰ্ব্বে, বুদ্ধদেব ও জৈন তীর্থঙ্কর মহাবীর-স্বামীর সময়ে ছিল, তাহ জৈন সাহিত্যের নানা গল্পে প্রমাণিত হয় । জৈন সাহিত্যে আছে যে মহাবীর-স্বামীর সময়ে, মগধের সাম্রাজ্য স্থাপিত হইবার পূৰ্ব্বে বৈশালী একটি প্রবল রাজ্য ছিল। সেই রাজবংশের এক রাজকন্যা একদিন অন্তঃপুরের রাজ-উদ্যানে একাকিনী বেড়াইতেছিলেন। হঠাৎ একজন ধনবান দুষ্ট বণিকের দৃষ্টিতে পড়িলেন। বণিক তাহাকে হরণ করিয়া পলাইল। পথে যাইতে যাইতে আপন উগ্রস্বভাব স্ত্রীর কথা ভাবিয়া রাজকন্যাকে এক গভীর বনে ত্যাগ করিয়া চলিয়া গেল। দস্থ্যরা রাজকথাকে ধরিয়া কৌশাম্বীর এক অপত্যহীন শ্রেষ্ঠীর কাছে দাসীরূপে বিক্রয় করিল। শ্রেষ্ঠ রাজকন্যাকে আপনার কন্যারূপে পালন করিতে লাগিল। কিন্তু শ্রেষ্ঠ-পত্নী সন্দেহ করিয়া তাহাকে কষ্ট দিত। একবার স্বামীর অনুপস্থিত থাকার কালে কন্যার মাথা মুড়াইয়া শৃঙ্খলাবদ্ধাবস্থায় এক অন্ধকার ঘরে বন্দিনী করিয়া রাখিয়াছিল। এই সময়ে মহাবীর-স্বামী নগরে বিচরণ করিতেছিলেন। রাজকন্তু কোনও মতে পলাইয়া । র্তাহার আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিল। এই কন্যা পরে প্রসিদ্ধা