পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Y >8 অবলম্বন করুন, এবং অন্য সকলকে ৪ তদ্রুপ উপায় অবলম্বনে প্রবৃত্ত করুন। আগেই বলিয়াছি, যে-স্ব জেলার উন্নতি করিতে হইবে, তাহার অধিবাসী মাতুষগুলির হৃদয়-মনের পরিবর্তন উন্নতির মূলসূত্র । মানুষগুলি যদি এখনকারই মত অজ্ঞ, চেষ্টাইন, সদাচরণ ও অসদাচরণ সম্বন্ধে জ্ঞানহীন ব। উদাসীন এবং পরস্পরের প্রতি বিশ্বাসহীন থাকে, তাহা হইলে আরব্য-উপন্যাসের আলাদিনের আশ্চৰ্য্য প্রদীপের মত ঐন্দ্রজালিক শক্তি দ্বারা যদি কেহ ঐ জেলাগুলিকে নন্দন-কাননে পরিণত করে, তাহা হইলেও দেখা যাইবে, ষে, কিছুকাল পরে আবার এইসব অঞ্চলের দুর্দশ হইয়াছে। উন্নতি এমন একটি জিনিষ নয়, যে, একবার পাইলে ঠিক সেই অবস্থাতেই বরাবর থাকে। সামান্য দৃষ্টাস্তের দ্বারাই ইহা বুঝা যায়। একটি খুব স্বন্দর খুব মজবুং বাড়ী যদি কাহাকেও দেওয়া যায়, এবং যদি সে প্রত্যহ তাহ পরিষ্কার না করে এবং মধ্যে মধ্যে তাহ মেরামত না করায়, তাহা ইলে তাহা কয় দিন স্থনর থাকে, এবং কত বৎসরই বা তাঙ্গা টিকিয়া থাকে ? যদি কোথাও একটি ভাল পুকুর প্রতিষ্ঠা করা যায়, কিন্তু যদি তথাকার লোকের এখনকার মত আবর্জনা নিষ্ঠাবন মলমূত্রাদি দ্বারা তাহার জলকে দূষিত করে এবং মধ্যে মধ্যে তাহার পক্ষোদ্ধার না করায়, তাহা হইলে ঐ পুকুর কতদিন মামুষের ব্যবহারের যোগ্য থাকে ? কাহাকেও প্রবাসী—বৈশাখ, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড · যদি বেশ উর্বর জমি দেওযু হয়, কিন্তু সে যদি ক্রমাগত বংসরের পর বৎসর তাহাতে শস্য উৎপাদন করিতে থাকে অথচ সার না দেয়, তাহা হইলে তাহার উৎপাদিক শক্তি কত.দিন থাকে ? ইউরোপে, আমেরিকায়, জাপানে . এক এক বিঘা জমি হইতে যে যে শস্ত যত পরিমাণে জন্মে, ' ভারতবর্ষে তাহা অপেক্ষা অনেক কম জন্মে। তাহার একটি কারণ উপযুক্ত সার না দেওয়া । বাকী কারণ চাষের অন্যান্ত বিজ্ঞান-সন্মত উপায় অবলম্বন না কুরা। সংক্ষেপে বলিতে গেলে, মানুষের একবার কোনপ্রকারে উন্নত অবস্থায় পৌছিলেই চলিবে না, সেই উন্নত । অবস্থা বজায় রাখিবার জন্য তাহাকে সৰ্ব্বদা সজাগ ও সচেষ্ট থাকিতে হইবে । চুম্বক। নিজেদের দুরবস্থা সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করা ও অপরসকলকে সেই জ্ঞান দেওয়া ; চেষ্টা করিলে দুরবস্থা দূর করিয়া উন্নতিলাভ করা যায়, ঈশ্বরের ইহাই মঙ্গল নিয়ম, এই বিশ্বাস দৃঢ় ও উজ্জল করা ; প্রত্যেক বিষয়ে উন্নতির উপায় সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করা ; সেইসকল উপায় অবলম্বন করা ; উন্নত অবস্থা বজায় রাখিবাধ জন্য সৰ্ব্বদ অবহিত ও সচেষ্ট থাকা —এইগুলি উন্নতির মূল-স্বত্র। বঙ্গের ক্ষয়িষ্ণু জেলাগুলির মধ্যে বাকুড়া ক্ষয়িষ্ণুতম। এইজন্য ইঙ্গার কথা আগে লিপিতেছি। অন্তগুলির সম্বন্ধেও পরে লিখিবার ইচ্ছা আছে। শ্রী রামানন্দ চট্টোপাধ্যান্ধ বাঁকুড়ার উন্নতি বাঁকুড়া জেলা বঙ্গের ক্ষয়িষ্ণুতম জেলা। . ইহার দুরবস্থার কথা গত চৈত্রমাসের প্রবাসীতে “বঙ্গের ক্ষয়িষ্ণুতম জেলা” নামক প্রবন্ধে লিখিয়াছি। ইতার উন্নতি করিতে হইলে কি কি উপায় অবলম্বন করিতে হইবে, সে-বিষয়ে দুচার কথা বলিব। আগেকার প্রবন্ধে বলিয়াছি, উন্নতি করিতে হইলে প্রথমেই মানুষকে সুঝির্ডেওঁবুঝাইতে হইবে, যে, তাহার দুরবস্থা হইয়াছে। এইজন্য দুরবস্থার জ্ঞান আবশক। জ্ঞানলাভ ও জ্ঞানদান নানা রকমে হইতে পারে। যদি কাহারও যথেষ্ট টাকা ও লোক থাকে, তাহা হইলে তিনি বহুসংখ্যক বক্তা নিযুক্ত করিয়া জেলার গ্রামে গ্রামে লোক পঠাইয়া বক্তৃতা দ্বারা সকলকে তাহাদের দুরবস্থার কথা জানাইতে পারেন, ঈশ্বরের মঙ্গল নিয়ম অনুসারে তাহারা চেষ্টা করিলে উন্নতি করিতে পারে