পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই বিশ্বাস জাগাইয়৷ তুলিতে পারেন, উন্নতির উপায়সকল বলিয়া দিতে এবং তাহ অবলম্বন করিতে পরামর্শ দিতে পারেন। অবশ্য বক্তাগণ ম্যাজিক লণ্ঠন ব্যবহারও করিতে পারেন । কিন্তু- এত বেশী টাকা ও লোক কাহারও নাই। এত বেশী টাকা ও লোক কাহারও না থাকিলেও, যাহার যাহা আছে উাহার সাহায্যেই এইরূপ চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু জ্ঞান একবার দিলেই তাহা চিরকুাল মানুষের মনে থাকে না, সদিচ্ছা একবার মানুষের জন্মিলেই তাহ চিরকাল থাকে না, বা প্রবল থাকে না; পুনঃ পুনঃ স্মরণ করিবার ও করাইবার প্রয়োজন হয়। প্রত্যেক মানুষের এইপ্রকার স্মরণের সমুচিত ব্যবস্থা লেখা-পড়া জানিলে সহজে হইতে পারে। পুস্তক পুস্তিকা পত্রীতে যাহা লেখা থাকে, তাঙ্গ আমরা যতবার দরকার পড়িয়া মনে রাখিতে পারি। এইজন্য আমরা যে দিকেই উন্নতি করিতে চাই না কেন, সকল অধিবাসী লেখাপড়া জানিলে সেই চেষ্টা করিবার জন্য সকলকে উদ্বুদ্ধ যত সহজে করা যায়, অন্য কোন উপায়ে তাহী করা যায় না। কোন দিকে উন্নতির চেষ্টা আরম্ভ করিবার আগে আবালবৃদ্ধ-বনিতা সকলকে লেখাপড়া শিখাইয়া ফেল, তাহার পর ঐ চেষ্টা কর,—আমরা এরূপ পরামর্শ দিতেছি না। কারণ, বস্তুতঃ সকল বিষয়ে উন্নতি পরস্পরসাপেক্ষ। একটি দৃষ্টান্ত লউম। স্বাস্থ্য রক্ষা করিতে হইলে "উপযুক্তরকম থাকিবার ঘর, খাদ্য, বস্থ, পরিষ্কার রাস্ত, ঘাট, পুকুর, নর্দমা এবং স্বাস্থ্যরক্ষাবিষয়ক নিয়মসকলের জ্ঞান চাই। এই সব পাইতে হইলে যথেষ্ট ধন চাই। ধন উপার্জন করিতে হইলে জ্ঞান চাই ও শ্রমপটু সুস্থ চাই, সংচরিত্র চাই । জ্ঞান লাভ করিতে হইলেও আবার বেতন পুস্তকাদির দাম প্রভৃতির জন্য টাকা চাই । অতএব, গাছ আগে না বীজ আগে, বলা যেমন কঠিন, তেমনি সৰ্ব্বাঙ্গীণ উন্নতি • করিতে হইলে কোন দিকে চেষ্টা প্রথমে করিতে হইবে, তাহা স্থির করা যায় না। কিন্তু তাহ স্থির না করিলেও গতি নাই। সকলরকম চেষ্টারই স্বত্রপাত একই সমিতি বা লোকের দ্বারা কিম্বা ভিন্ন ভিন্ন সমিতির ও লোকের দ্বারা একই সময়ে আরন্ধ হইতে পারে। বাকুড়ার উন্নতি ১১৫ . আমরা আলোচনার সুবিধার জন্য ভিন্ন ভিন্ন দিকের উন্নতির বিষয় পরে পরে বলিব বটে, কিন্তু সকল "দিকেই চেষ্টা করিতে হইবে। যাহার যে যে দিকে চেষ্টার স্ববিধ বা ঝোক বেশী, তিনি, অন্য কাহারও অন্য দিকের চেষ্টার বাধা না দিয়া বা বিরোধী না হইয়া, সেই সেই দিকে চেষ্ট করিবেন । শিক্ষা বাকুড়া জেলার ১০,১৯,৯৪১ জন লোকের মধ্যে মোট ১,১২,২৮৪ জন লিখিতে পড়িতে পারে। বাকী নয় লক্ষ সাত হাজার লোককে লেখাপড়া শিথাইতে হুইবে । ৫,১০,৬০৭ জন স্ত্রীলোকের মধ্যে মোটামুটি ৪৮০০ স্ত্রীলোক লিখিতে পড়িতে পারে। বাকী পাচ লক্ষ পাচ হাজারকে লেখা-পড়া শিথাইতে হইবে। মোটামুটি পাচ লক্ষ নয় হাজার পুরুষের মধ্যে মোটামুটি এক লক্ষ সাত হাজার লেখা-পড়া জানে। বাকী চারি লক্ষ দুই হাজার পুরুষকে লেখা পড়া শিথাইতে হইবে। যে-সব ছেলে ও মেয়ের বয়স এখনও কম আছে, তাহাদের জন্য যথেষ্টসংখ্যক সাধারণ বিদ্যালয় ও পাঠশালা স্থাপন করিয়া সকল ছেলেমেয়েকে তথায় পাঠাইবার ব্যবস্থা করিতে হইবে । কিন্তু যাহারা প্রাপ্তবয়স্ক হইয়াছে, সাধারণ পাঠশালা ও বিদ্যালয়ে যাইবার যাহাদের বয়স নাই এবং দিনের বেলা রোগার করিতে হয় বলিয়৷ যাহাদের সেখানে যাইবার সময়ও নাই, তাহাদের জন্য নৈশ বিদ্যালয় প্রভূতির বন্দোবস্ত করিতে হইবে । এত লোকের শিক্ষার বন্দোবস্ত করা খুব বৃহৎ ব্যাপার । কিন্তু তাহাতে ভয় পাইলে চলিবে না। আরম্ভ যত সামান্যভাবেষ্ট হউক, ভগবানের উপর বিশ্বাস রাখিয়া' করিতে ইষ্টবে । স্কুলে যাইবার যাঙ্গদের বয়স আছে, তাঙ্গদের জন্য বঁকুড়া জেলায়, উচ্চ ইংরেজী বিদ্যালয় হইতে আরম্ভ করিয়া নিম্ন প্রাইমারী পাঠশাল পর্য্যন্ত মোট শিক্ষালয় ১৯২৩ সালের ৩১শে মার্চ ১৩৯৭টি ছিল। তাহাতে মোট ছাত্রছাত্রী ছিলু ৪৩৮৩৯ জন -ছাত্র నినె •8్కల్హో ৪৭৯১ । ইহাতে বুঝা যাইতেছে, যে, বালিকাদের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার খুব কম হইয়াছে, বালুকদের অষ্টমাংশের