পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* ১ম সংখ্যা ] বর্তমানে কলেজটির ছাত্রসংখ্যা ৪৯৯ । প্রায় অৰ্দ্ধেক ছাত্র বঁাকুড়া জেলার হইলেও ইহা বাংলার অন্য সব জেলার ও কাজে লাগে । ২০৯ জন ছাত্র বঁাকুডগর, ১৯ জন মেদিনীপুরের, ১৭ জন বীরভূমের, ৩৩ জন মানভূমের, ৮২ জন বৰ্দ্ধমানের, এবং বাকী ১৩৯ জন অন্যান্য জেলার । ইহাদের মধ্যে হিন্দু ৪৮৭, মুসলমান ৪ এবং দেশী খৃষ্টিয়ান ৮ জন। খৃষ্টিয়ানদিগের মধ্যে একজন সাওতাল ও একজন হাড়ি জাতীয়। হিন্দুদের মধ্যে ৪টি ছাত্র শুড়ি * ७्र कैलू । . কলেজের অধ্যাপক-নিয়োগ-নীতি উংকৃষ্ট । কর্তৃপক্ষ জানেন, যে, বাকুড়া জেলার অধিবাসী এবং এই কলেজের প্রাক্তন ছাত্র লোকদের ইহার প্রতি দরদ বেশী হইবে । শিক্ষাদাতাদের মধ্যে আট জন বাকুড়া জেলার, এবং সাত জন কলেজের প্রাক্তন ছাত্র । কলেজের হাতার দুটি ছাত্রাবাসে ১৫৭ জন ছাত্র থাকে। প্রত্যেকের এক-একটি স্বতন্ত্র কক্ষ । আরো ছাত্রাবাসের খুব প্রয়োজন আছে । কলেজ ও ছাত্রাবাস কলেজেই উৎপন্ন বৈদ্যুতিক শক্তি দ্বারা আলোকিত হয়। উহার বৈজ্ঞানিক পরীক্ষাগারের আসবাব এবং কোন কোন সরঞ্জাম বাকুড়াতেই নিৰ্ম্মিত । কলেজের কয়েকজন ছাত্র সহরে একটি নৈশ বিদ্যালয় চালাইয়া থাকে। বঁকুড়া সহরে অন্তঃপুরিকাদের শিক্ষার জন্য কিছু ব্যবস্থা আছে। শিক্ষয়িত্রীর বেতন গবর্ণমেণ্ট দেন । , মিউনিসিপালিটী মাসিক ২০ টাকা সাহায্য করেন। এই প্রশংসনীয় চেষ্টার আরও বিস্তৃতি আবশ্বক। বাকুড়া • ব্রাহ্ম-সমাজের তত্ত্বাবধানে একটি নৈশ বিদ্যালয় ও একটি শিশুদের নীতি-বিদ্যালয় পরিচালিত হয়। তদ্ভিন্ন ম্যাজিক লণ্ঠন সহযোগে নানাবিধ শিক্ষা দিবার এবং বাউরী বালকদিগের মধ্যে কাজ করিবার চেষ্টাও হইতেছে। বিষ্ণুপুর পণ্যশিল্প বিদ্যালয়ের বিষয় পরে লিখিতেছি। • কৃষি আমরা চৈত্রমাসের প্রবন্ধে দেখাইয়াছি, যে, বাঁকুড়া জেলায় বাংলা দেশের মধ্যে সৰ্ব্বাপেক্ষা কম বৃষ্টি হয়, প্রতি বাঁকুড়ার উন্নতি እ>ዓ . বর্গমাইলে সৰ্ব্বাপেক্ষা কম ফসল জন্মে, এবং প্রতি বর্গমাইলে লোকসংখ্যাও সৰ্ব্বাপেক্ষা কম। এই জেলায় চাষের যোগ্য জমি যত আছে, তাহার অল্প অংশেই চাষ হয় ; জল সেচনের বন্দোবস্ত করিতে পারিলে বাকী সমস্ত জমিতেও চাষ হইতে পারে। তাহা হইলে এ-জেলার লোকসংখ্যা কমিবে না, বরং বাড়িবে। বৃষ্টি এ-জেলায় কম হয় । সুতরাং আকাশ হইতে যে জল পড়ে, তাহা ধরিয়া রাখিবার বন্দোবস্ত করা উচিত। সমস্ত বৃষ্টির জল ধরিয়া রাখা সম্ভবপর নহে । কারণ, তাহার অনেক অংশ খাল ও নদী বাহিয়া চলিয়া যায়, কতক মাটির নীচে যায়, ইত্যাদি। কিন্তু পুকুর, দীঘি, বাধ, প্রভূতি নামে অভিহিত নানাপ্রকার জলাশয়ে অনেক জল ধরিয়া রাখা যাইতে পারে। তা ছাড়া, ছোট ছোট যেসব খাল, “জোড়", প্রভৃতিতে সম্বৎসর অল্প অল্প জল বহে, তাহাতে উপযুক্ত স্থানে দরকার-মত পাথরের, ইটের বা মাটির বাধ দিলে বড় জলাশয় বা কৃত্রিম হ্রদ প্রস্তুত হইতে পারে। তাহা হইতে খাল কাটিয়া জল লইয়া গিয়া বিস্তর জমিতে জল সেচন করা যাইতে পারে । - বাকুড়া জেলায় বর্তমান অধিবাসীদের পূর্বপুরুষদিগের এই উভয় দিকেই দৃষ্টি ছিল। এখনও এই জেলায় অনু্যন ত্রিশ হাজার জলাশয় আছে। তাহার মধ্যে অনেকগুলির নাম বধ । ইহার অধিকাংশ বহুকাল পঙ্কোদ্ধার না হওয়ায় ভরাট হইয়া গিয়াছে । কতকগুলির পাড় ভাঙ্গিয়া যাওয়ায় বা জল সেচনের জন্য কাটিয়া পুনৰ্ব্বার বাধিয়া না দেওয়ায় তাহাতে জল সামান্তই থাকে। এইগুলির পঙ্কোদ্ধার করা প্রয়োজন। তম্ভিয়, খাল বা জোড় নামক ছোট নদীগুলিতে বাপ দিয়া জল সঞ্চয় করিবার প্রাচীন দৃষ্টান্তও এ-জেলায় আছে। জলসেচনের জন্য সুদীর্ঘ কুত্রিম খাল-খননের দৃষ্টান্তও আছে। কিন্তু অতীতকালে যাহা ছিল, পঙ্কোদ্ধার, মেরামত প্রভৃতির অভাবে তাহাদের অধিকাংশ হইতে কোন সুফল এখন পাওয়া যাইতেছে না। বরং অনেক স্থানে তাহ রোগের কারণ হইয়া রহিয়াছে। অধুনা পুরাতন জলাশয়গুলির পক্ষোদ্ধার ও মেরামতের জন্য শৃঙ্খলাবদ্ধ চেষ্টার স্বত্রপাত হইয়াছে। কুমার রমেন্দ্র