পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* ১ম সংখ্যা } রঙীন ছবি আজকাল সব দেশে মাসিক হইতে দৈনিক পৰ্য্যন্ত নানা কাগজে দেখা যায়। এই ফ্যাপ্তান হইতে অম্বুমান হয়, যে, রঙীন ছবির আদর আছে । কিন্তু “রঙীন” মানুষরা সৰ্ব্বত্রই অবজ্ঞার পাত্র, “বিবণ” মানুষরাই সৰ্ব্বত্র শ্রেষ্ঠ বলিয়া বিবেচিত। ইহার কারণ কি ? : 象 ৯২৪ সালের হুইটেকার পঞ্জিকা বলেন, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে ১৯১১ সালে মোট ছয় কোটি “বিবর্ণ” মানুষ , ছিল । বাকী সাইক্ৰিশ কোটি “রঙীন” মাচুর্য । এই ছয় কোটি মানুষ অন্য সাইব্ৰিশ কোটির প্রভূ । অবশ্য ইহা ঠিক, যে, মোটের উপর ঐ ছয় কোটির মধ্যে যত লোকের বৈজ্ঞানিক, যান্ত্রিক ও অন্যবিধ জ্ঞান আছে, এবং দলবদ্ধতা আছে, অন্য সাইভ্রিশ কোটির মধ্যে তাহ। নাই । এই তথ্যের মধ্যে ক্ষমতার আধিক্য ও অল্পতার কারণের কিছু সন্ধান পাওয়া যায়। তাহা হইলেও মৌলবী আব্দুল করিম ও ঐযুক্ত চিত্তরঞ্জন দাশ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কৰ্ত্ত হইলে “রঙীন" লোকদের স্ববিধা হইতে পারিত। তাঙ্গার চাকুরী এবং সাম্রাজ্যিক অন্য সবরকম সুবিধা ও ক্ষমতার শতকর। ৮৬ ভাগ পাইত এবং “বিবর্ণ”দিগকে ১৪ ভাগে সন্তুষ্ট হইতে হইত। প্রকৃতি ও বিধাত এখনও ভাল করিয়া ষ্ট্যাটিষ্টিক্স -বিদ্য। আয়ত্ত করিতে ন পারায় কেবল সংখ্যা অম্বুসারে সাংসারিক ক্ষমতা ও মুখ-গ্লুবিধার ভাগ-বথর হইতেছে না । এই অবিচারের প্রমাণ আর এক দিক্ দিয়া দেখুন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে হিন্দুদের সংখ্য। একুশ কোটির উপর, মুসলমানদের দশ কোটি, খৃষ্টিয়ানদের আট কোটি, বৌদ্ধদের এক কোটি কুড়ি লক্ষ, ইত্যাদি । কিন্তু আট কোটি খৃষ্টিয়ানের ক্ষমত ও ঐশ্বধ্য অন্য সব লোকদের সমষ্টির ক্ষমতা ও ঐশ্বৰ্য্যের চেয়ে বেশী । এবং হিন্দু ও মুসলমান উভয়েই পরাধীন হইলেও ১০ কোটি মুসলমানের সম্বন্ধে যে ভয়ের ভাব আছে, একুশ কোটি হিন্দুর সম্বন্ধে তাহা নাই। সেইজন্য কখন কখন মনে একটু সন্দেহ হয়, যে, সংখ্যাধিক্যই সম্ভবতঃ দাবী সাব্যস্ত করিবার একমাত্র উপায় নহে । -

বিবিধ প্রসঙ্গ—রবীন্দ্রনাথের পুর্ব-এশিয়া ভ্রমণ S89 রবীন্দ্রনাথের পূর্ব-এশিয়া, ভ্রমণ আজকাল স্কুলের ছেলেরাও জানে, যে, পুরাকালে ভারতীয় সভ্যতার প্রভাব এশিয়া মহাদেশের মধ্য, পূর্ব ও দক্ষিণ অংশে এবং প্রশাস্ত ও ভারত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জে বিস্তৃত হইয়াছিল । এখনও তাহার নিদর্শন অনেক দেশের ও দ্বীপের প্রাচীন মন্দিরাদিতে দেখিতে পাওয়া যায়। এই প্রমাণ সাধারণ লোকেরাও বুঝিতে পারে । পণ্ডিতবগ আরও প্রমাণ ঐসব দেশের ধৰ্ম্ম, সাহিত্য, নানাবিধ শিল্প এবং আচারব্যবহার হইতেও আবিষ্কার করিয়াছেন। প্রধানতঃ বৌদ্ধ ভিক্ষু ও শিক্ষকগণ ভারতীয় জ্ঞান বিজ্ঞান সভ্যতা এশিয়ায় বিস্তার করিয়াছিলেন । ভারতবষের সহিত এশিয়ার অদ্য দেশগুলির সম্বন্ধ থাকায় কেবল যে তাহারাই উপকৃত ইষ্টয়াছিল, তাহা নয় ; ভারতবর্যেরও উপকার হইয়াছিল । বহুশতাব্দী পরে একজন ভারতীয় মনীষী চীনদেশে ভারতের বাণী প্রচার করিবার জন্য নিমন্ত্রিত হইয়াছেন । পেকিন বিশ্ববিদ্যালয় রবীন্দ্রনাথকে তথায় বক্তৃত করিতে আহবান করিয়া আপনাদের হৃদয়মনের উৎকর্যের পরিচয় দিয়াছেন। যে জাতি অন্য জাতিসকলের মধ্যে যত বেশী পরিমাণে সাধারণ মানবত্ব দেখিতে পাইয়। নিজ আচরণ দ্বারা তাহা স্বীকার করে, সে জাতি তত শ্রেষ্ঠ । উদারভাবে নানা মত, আদর্শ, ও সভ্যতার আলোচনা করিয়৷ তাহার সার অংশ নিজের করিয়া লইতে পারা আধ্যাত্মিক উৎকর্ষের উপর নির্ভর করে । কোন মাতধ দি পরিচিত অপরিচিত আগস্থকদিগকে নিজের বাড়ীতে স্থান দিয়া তাহাদের যথোচিত আদর যত্ন করেন, তাত হইলে তাঙ্গকে আমরা অতিথিপরায়ণ বলি ও তাহার আতিথেয়তার প্রশংসা করি । সেইরূপ যে জাতি নানা মত চিন্তা ভাব আদর্শ প্রভৃতির জন্য মনের দ্বার খুলিয় রাখে, তাহার মানসিক আতিথেয়ত আছে বলিয়া আমরা প্রশংসা করি । পৃথিবীর মধ্যে এখনও দুইটি বড় দেশে পর-মতসহিষ্ণুতা, পরমত সম্বন্ধে ঔদার্য্য এবং মানসিক আতিথেয়ত্ব । বিশেষভাবে বিদ্যমান আছে। ভারতবর্ষ ও চীন সেই দুইটি দেশ। ভারতবর্ষে মধ্যে মধ্যে হিন্দুমুসলমানের