পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] ইহা ছাড়াও তিনি"নানা ইব”এই ভাষা ব্যবহার করিয়াছেন। ইহার অর্থ "যেন নানা” । ইহা দ্বারা তিনি বুঝাইতেছেন যে লোকে যে ব্রহ্মে নানাত্ব দেখে ইহা ভ্ৰমাত্মক । সাধারণ মানব সৰ্ব্বত্রই নানাত্ব দেখে কিন্তু জ্ঞান দ্বারা বুঝিতে হইবে যে “কুত্ৰাপি নানাত্ব নাই।” উপসংহার যাজ্ঞবল্ক্য তিনটি স্থলে নিজ মত ব্যাখ্যা করিয়াছেন – ( ১ ).মৈত্রেয়ীর নিকট,( ২ ) জনক-সভায় প্রকাশ্ব বিচারে, , ৩ ) জনক রাজার নিকট । আমরা তিনটি প্রবন্ধে এই-সমুদায় মত ব্যাখ্যা করিয়াছি। আলোচনা করিয়ু স্বামরা তাহার মতের বিষয়ে যে সিদ্ধান্তে উপনীত হইয়াছি তাহা এই :– ( > ) এক মাত্র আত্মাই বৰ্ত্তমান এবং এই আত্মাই ব্রহ্ম । মানবাত্মাতেই প্রথমে আত্মার জ্ঞান হয় । - কিন্তু লোকে এই আত্মাকে ক্ষুধ তৃষ্ণ শোক মোহ জর ও মৃত্যুর অধীন বলিয়া মনে করে । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আত্মা এই-সমুদয় দেহ-ধৰ্ম্মের অতীত। এই ধে আত্ম। ইনিই ব্ৰহ্ম । (ミ) এই আত্মা অন্তর্বাহ-ভেদ-রহিত। আত্ম হইতে পৃথকৃ কিংবা দ্বিতীয় কোন বস্তু নাই । সুতরাং আত্মা বাহরহিত r ইহার অন্তরে কোনপ্রকার ভেদ নাই। দৃষ্টান্ত দ্বারা বুঝাইতে হইলে, আমরা আকাশের দৃষ্টান্ত দিতে পারি। . আকাশ যেমন সৰ্ব্বত্রই একপ্রকার, ইহাতে যেমন কোনপ্রকার ভেদ নাই, আত্মার প্রকৃতিও ঠিক সেইপ্রকার। আত্মা ‘একরস’, প্রজ্ঞানঘন । 德 ( \o ) আত্মার বহির্ভাগে কোন বস্তু নাই। আত্ম হইতে পৃথক্ বা দ্বিতীয় বস্তু নাই ইহাই ঋষির মত। কিন্তু আমরা প্রত্যক্ষ দেখিতেছি—এই জগৎ রহিয়াছে। ইহা কিপ্রকার ঐ সিদ্ধান্ত করিতে হইবে—এ-জগৎ ভ্ৰমাত্মক ; ইহার বাস্তব সত্তা নাই। যাজ্ঞবল্ক্যের মূল দার্শনিক মত গ্রহণ করিলে অঙ্কপ্রকার সিদ্ধান্ত করিবার কোন উপায় নাই। ঋষি নিজেও অনেক স্থলে এইপ্রকার সিদ্ধাস্ত ব্ৰহ্মবাদ ు(tఫి করিয়াছেন । কিন্তু আবার কোন কোন স্থলে এজগতের বাস্তব সত্ত ও আত্ম হইতে পৃথক বস্তুর অস্তিত্ব স্বীকার করিয়াছেন ( বৃহঃ ৩৭ ) { অবশ্যই বলিতে হুইবে ইহাতে হইয়াছে। “আত্ম-বিরোধ” ( 8 ) যাজ্ঞবল্ক্যের মতে আত্মার অস্তরে কোন প্রকার ভেদ নাই। কিন্তু আমরা প্রত্যক্ষ করিতেছি আত্ম বহুত্বপূৰ্ণ । ইহাতে কত ভেদ ;–কত ভাব, কত চিন্তা, কত ইচ্ছা! ধাজ্ঞবস্ক্যের মত গ্রহণ করিলে এই ভেদ এবং ভেদজ্ঞানকে ভ্ৰমাত্মকই বলিতে হইবে ঋষি নিজেও এই ভেদকে অসত্য বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন । ‘প্যায়ুতীব, লেলাধর্তব’ ( বৃহঃ ৪।৩।৭ ) ইত্যাদি বচন দ্বার। আত্মার চিম্বা ও কাৰ্য্য প্রভৃতিকে ভ্ৰমাত্মক বল হইয়াছে। ( & ) যতক্ষণ আমাদিগের দ্বৈত-জ্ঞান কিংবা দ্বৈতরূপ ভ্রম থাকে, ততক্ষণই আমাদিগের প্রতি এই উপদেশ– "সেই আত্মাকে দর্শন শ্রবণ মনন ও নিদিধ্যাসন করিতে হইবে।” এস্থলে আমাদিগকে কল্পনা করিয়া লইতে হয় যে আত্মা যেন একটি দ্বিতীয় বস্তু, এবং অপর বস্তুকে যেমন জ্ঞানের বিষয়ীভূত করা যায়--এই আত্মাকেও ভেম্ণি জ্ঞানের বিষয়ীভূত করিতে হইবে । ( 9 ) কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে এই দ্বৈতমূলক জগতেও আত্মাকে দশন শ্রবণ মননাদি করা যায় না । যে দেখে সেই যে আত্মা, তাহাকে আবার দেখিবে কে ? সেই ধে দেখে ! যে শ্রবণ করে সেই যে আত্মা, তাহাকে আবার শ্রবণ করিবে কে ? সেই যে শ্রবণ করে ! এইরূপ আত্মাকে মনন ও করা যায় না। আত্মা নিত্যই বিষয়ী, তাহাকে জ্ঞানের বিষয়ীভূত করা যায় না। এইজন্য যাজ্ঞবল্ক্য বলিয়ছেন—বিজ্ঞাতারম্ অরে কেন বিজানীয়াৎ ( বুহ: ২।৪।১৪ ; ৪।৪।১৫ )—বিজ্ঞাতাকে কিপ্রকারে জানিবে ? ( , ) আত্মা দেশকালের অতীত । কিন্তু অনেক স্থলে