পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$98 ভাল, আমার সঙ্গে খুবই মাখামাথি । লতিকার সঙ্গে আমার ভাব হয়ে গেল। একদিন লতিকা এবাড়ীতে বেড়াতে এলে আমার ঘরে টাঙান একটি ছবির প্রশংসা করতেই চিত্রকরটি যে আমারই দেওব এ-পরিচয় দেবার লোভ সাম্লাতে পারলেম না। লতিকা তার আরো ছবি দেখবার আগ্রহ প্রকাশ করায় আমার চাবি দিয়ে ষ্টুডিওর তালা খুলে তাকে দেখালেম । ঠাকুরপে তখন বেরিয়েছিলেন । শিল্পে র্তার ওস্তাদী হাত, প্রদর্শনীতেও ঢের পদক পেয়েছেন। লতিকা ভারি খুলী হ’ল তার আঁকা ছবি দেখে’ । ঠাকুরপোর অনুপস্থিতিতে ষ্টুডিওতে ঢোকা অমার্জনীয় অপরাধ, কারণ ‘অনার্টিষ্টের আনাড়ী হস্তাপণে নাকি আটের চোখ কাণ হ’য়ে যার । লতিকা আনন্দের আতিশয্যে ছবিগুলো যে-ভাবে হাংড়ে দেথছিল আমার ভয় হ’ল আজ ঠাকুরপো ফ্যাসাদ বাধাবেন ; কিন্তু তিনি ফিরে এসে এতটুকুও বিরক্তি প্রকাশ করলেন না। ঠাকুর-পো খেতে বসে’ বললেন—“কাকে নিয়ে ষ্টুডিওতে গিয়েছিলে ?” তাকে খুনী কবুবার জন্তে বল্‌লেম—“রত্নাকর-বাবুর ভাগ্নী লতিকা। ভারি প্রশংসা করলে তোমার ছবিগুলোর । সব ত আর দেখান গেল না । ঠাকুরপে পেতে খেতে নললেন—“বাইরেরগুলো ভালে নয়। রোঙ্গের চাবী তোমার রিংএ নেই বুঝি ?" র্তার মুথে এ-রকম অনুমতি নুতন । ঘণ্ট-খানেক পরে ঠাকুরপোর জন্যে খাবার-জল রাখতে গিয়ে দেখি ঘরটি ওলটপালট করে ফেলেছেন, যার ফলে বাইরের ছবি দেরাঙ্গে, দেরাজের ছবি বাইরে এসেছে ! যে ছবিগুলো প্রদর্শনীতে পুরস্কৃত হয়েছে, ময়লা হবার ভয়ে সেগুলো তিনি কাগজে মুড়ে দেরাঙ্গে রাখতেন, আজ সেগুলোর বাইরে স্থান পাবার কারণ বুঝতে আমার দেরী হ’ল না। পরের দিনে লতিকা আসতে আমি নিজে থেকেই তাকে উপরে নিয়ে গেলাম। বেচার শিল্পীটি যার জন্যে অত মেহন্নত কবে ষ্টুডিও গুছিয়েছেন সেই শিল্পী-প্লেয়সীর’ প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, `වව) [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড পায়ের আলপনা ও-ঘরে একবার না পড়লে শিল্পের অপমান হয় । هي ঠাকুরপো দুরের কোন পাহাড় দেখতে যাবেন বলে’ বেরিয়েছিলেন । এ-স্নযোগে লতিকার কাছে রবি বাবুর সোনার তরীর সেক্ট গানটা শিখে নিতে ইচ্ছা হ’ল । ঠাকুপোর হাৰ্ম্মোনিয়াম্ ষ্টুডিওতেই ছিল। লতিকার গান শেষ হ’লে তখুনি তা শিখতে চেষ্টা করলেম, কিন্তু হার্শ্বেনিয়ামে আমার বিদ্যার দৌড় “কতকাল পরে” ও এই শ্রেণীর দু-একটা গানের স্বরলিপি অবধি ; কাজেই লতিকার কাছ থেকে এগানটির স্বরলিপি লিখে’ ভবিষ্যতে তা সাধ বার জন্যে নীচ থেকে আমার গানের খাত আনতে ছুট্‌লেম । বাইরে যেয়ে দেখি ঐ দিক্কার জানালার কাছে ঠাকুরপো দাড়িয়ে, তার মাথাটি কাধের উপর যেন ভেঙে পড়েছে। আমার পায়ের শব পেয়ে চম্কে উঠে তিনি সিড়ি বেয়ে ছুটে পালালেন । আমার ভারি হাসি পেলে । চোরের মত বাইরে না দাড়িয়ে ঘরে যেয়েও ত তিনি গান শুনতে পারতেন। লতিকা স্কুলে-পড়া শিক্ষিতা মেয়ে, আমি অনুরোধ করলে ভদ্রতার খাতিরে সে নিশ্চয়ই তার সামনে গান করত।. আর-একদিনের কথা। বিকেলের দিকে নীচের ঘরে আমি আর লতিকা গল্প করছিলেম । হঠাৎ ঠাকুরপোর হাকাইকিতে উপরে যেতে হ’ল । তিনি তখন ছাদের উপর ক্যামের গুছিয়ে ফোটো তুলবার জন্যে প্রস্তুত হচ্ছিলেন। আমি অবাক হ’য়ে বললাম—“কার ফোটো তোলা হচ্ছে ?” d তিনি বললেন—“তোমার। নতুন আঁক। স্ক্রিন্ট। কালই থিয়েটার-পার্টির লোকেরা নিয়ে যাবে। তা ব্যাকগ্রাউণ্ড, করে চমৎকার ফোটো হবে। যাও শীঘ্র প্রস্তুত হ’য়ে এসে ।” আমি অবাকু হয়ে বদলাম—“এখুনি ?” তিনি তাড়া দিয়ে বললেন—“এখুনি নয় ত কি ? এর পরে আলো নিভে যাবে।” স্কিনের আগে দুখানি চেয়ার দেখেই আমি আদত কথাটা বুঝে নিলেম । লতিকাকে নিয়ে এসে যখন বসলেম, তখন দিনের আলো নিড়ে যাওয়ার ভয়ে ফোটো গ্রাফারটিকে একটও ব্যস্ত দেখা গেল না । তিনি লfশশল