পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ) বসবার ভঙ্গিমা নিয়ে এত মাথা ঘামালেন যে ঐ নিভেযাওয়া রোদের তাপেই আমাদের মাথা ফাটুবার উপক্রম হ’ল । ক’দিন পরে কি কাজে ঠাকুরপোর ঘরে গিয়ে দেথি তিনি তন্ময় হয়ে কি অঁাকৃছেন, নতুন কি তার তুলি থেকে বেরুচ্ছে দেখবার জন্যে পিছন থেকে উকি মেরে দেখি সেদিনকার তোলা ফোটো থেকে লতিকার একখানি আলাদা ছবি তৈরী হচ্ছে। আমার উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি এমুনি বিবর্ণমুখে তা উপুড় করে' রাখলেন য়েন চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে গেছেন ।. বেচারা যে ফুলশরের ঘায়ে জর্জর হয়েছে এর পরে সে-সন্দেহ করা বোধ করি অন্যায় কিছু নয়।. রত্নাকর-বাবুর স্ত্রীকে দিয়ে লতিকার মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব করে একখান। চিঠি লিথ ব কি না ভাবছি। পাত্র পক্ষের বেশী গরজ দেখানোট শোভা পায় না, কিন্তু অবস্থ৷ যেমন দাড়িয়েছে, সে বিচার করা চলবে না হয়ত । লতিকার কথা মামা-বাবুর পীড়াপীড়িতে স্কুলের ছুটি হ’তে যখন তার পশ্চিমের নতুন-কেনা বাড়ীর উদ্দেশ্যে বেরুই, তখন ভাবিনি আমাদের বোর্ডিংএর দারোয়ান মূৰ্ত্তিমান নোংরামি বণ্ট, সিংএর দেশটা এত সুন্দর। পথ-ঘাটের প্রশংসা আমি করছিনে, বাংলার শহরগুলোর স্বগসুবিধ, এখানে নেই, কিন্তু যা আছে তা বাইরের অন্ধবিধাগুলো ছাপিয়ে উঠবার পক্ষে যথেষ্ট। সত্যি, পাহাড়গুলোর দৃপ্ত কি মহান চারিদিক্কার শালবনের ভিতর থেকে যে পাহাড়গুলো আকাশের পানে মাথ৷ তুলে উঠেছে সেগুলো দেখে মনে হয় যেন সত্যযুগের তপোবনে ধ্যানমগ্ন ঋষিরা বসে আছেন। দোতলার উপর দাড়ালেই পাহাড়গুলো দেখা যায়। কোনটা বড়, কোনটা ছোট। বড় বড় পাহাড়ের ঠিক তলায় ছোট্ট, পাহাড়গুলোকে মনে হয় যেন শিশুপাহাড় মায়ের র্যাটু ধরে কোলে উঠবার আবদার করছে। দূরের লম্বা পাহাড়ের সারিটাকে প্রথম দিন আমি মেঘ বলে’ ভুল করেছিলেম। পাহাড় ছাড়া বোধ করি চন্দ্র কষ্ট্রিপথের ১৬৫ সূর্য্যের আলোর খেলা অনুভব করা চলে না। ভোরে সন্ধ্যায়, পূর্ণিমা রাতে এখানে যে সৌন্দর্ঘ্য হৃষ্টি হয়, তা বোঝাতে হ’লে আমার কবি হওয়া দরকার। থাক, দুদিনের জন্য বেড়াতে এসে আর কবি হ’য়ে কাজ নেই।. ও-বাড়ীর প্রতিভার সঙ্গে ভারি ভাব হ’য়ে গেছে । দিব্বি বৌটি ! সে স্কুলে পড়েনি, কিন্তু তাকে অশিক্ষিত৷ বল চলে না । মেশবার ক্ষমতা তার আশ্চর্ধ্যি, দুদিনে আমাকে এমন আপনার করে তুলেছে যেন আমাদের কতকালের চেন । ভারি ভালো মেয়েটি। তার স্বামী বড়লোক নন, যা উপার্জন করেন, তাতে তার শুয়ে বসে’ সময় কাটানো চলে না, কিন্তু খাটুনীর ভিতর যে হাসিটুকু তার ঠোটের পাশ থেকে উছলে পড়ে তাতে মনে হয় তার কোন ও অভাবই নেই। তার ভিতরকার ঐ যে পরিপূর্ণ আনন্দের ধারা সেইটিই তাকে এত মিষ্টি করেছে। তার স্বামীর একটি ডাক্ট আছে, তার উপর প্রতিভার যা টান বোধ করি আপনার ভাইয়ের উপরও মানুষের অত টান হয় না। লোকটি চিত্রকর । ছবি আঁকার নেশায় ডুবে তিনি নাকি বাইরের কোনও খোজ-খবর রাখেন না । তার কখন কি দরকার তাও নাকি তার মনে থাকে না এমনি আনমন। তিনি। তাষ্ট তার বৌদিকে তার তালাসি করতে হয় মায়ের মতন। প্রথম দিন তাকে যথন দেখি ভেবেছিলেম লোকটা হয় পাগল, নয় হতভাগা । ছাদের উপর চাদের তলায় দাড়িয়ে আমি পাহাড়ের শোভা দেখছিলেম। হঠাৎ দেখি লোকটা যেন ষ্টা কবে? আমায় গিলছে । ভারি রাগ হয়েছিল তার অশিষ্টতায় । কিন্তু পরের দিন প্রতিভাদের বাড়ী বেড়াতে যেয়ে তার ঘরে একখানি ছবি দেখে? যথন জানতে পারলেম তাঁর চিত্রকর ঐ লোকটি, তখন আমার মনের তিক্তত উবে গেল। চমৎকার চিত্রটি প্রতিভ উপরে নিয়ে গিয়ে তার দেওরের ষ্টুডিও দেখালে। *া, চিত্রকর বটে তার দেওর : চিত্র কম দেখিনি, আর্টসম্বন্ধে একটু জ্ঞানও ছিল, বুঝলেম একে আর্টিং বল যেতে পারে। লোকটির উপর শ্রদ্ধা হ’ল । প্রতিভা তার সম্বন্ধে খুল সার্টিফিকেট দিলে, তা