পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“রিক্ত” সেনি একটা মোটা কাগজের ভাড়া লইয়া বসিয়ছিলাম। এই পলিটিক্যাল কেসের বাগুিলটা কিছুদিন হইতে আমার কাছে আসিয়া পড়িয়া ছিল, এটাকে ষ্টাডি করিয়া প্রথম আদালতে আমাকেই ‘কেস্টা ওপৰ্ম্ম করিতে হুইবে । লাগজে মনঃসংযোগ করিলাম। কয়েক পৃষ্ঠ পঢ়িবার পরই একট। নাম আমার চোগে পড়ায় আমি চম্বকাই উঠিলাম। এ কি ! এ যে সেই নাম, সেই চিরপরিচিত নাম, যা আমার শত কাজের ভিতরও আমার অন্তবের অভ্যন্তরলোক দীপ্ত রেখা টানিয়া রাখিয়াছে ! তাও কি সম্ভব ? সে কি ! সেই কি অবশেষে এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট হইয়া, গুরুতর অপরাধে অড়িযুক্ত হইয়াছে ? আর আসাকে কৰ্ত্তবাদীয়ে তাঙ্কারই বিরুদ্ধে অভিযোগ চালাক্টতে হইবে । না, এ হয়ত সে थ, পৃথিবীতে দুইজনের কি এক নাম থাকিতে পারে না ? মনকে বুঝাইলাম যে আমার এই আসামী আমার পরিচিত কেহই না ; ইহাদের দুইজনের কেবলমাত্র নামেরই সাদৃশ্য আছে । মনটা বিচলিত হইয়। পড়িয়াছিল, কিছুতেই তাহ আর ত কাগজে নিবিষ্ট করিতে পারিলাম না। চারিধার হইতে কতগুলি এলোমেলো কথা আমার মনের ভিতর ঘোলট পাকাইয়া তুলিতে লাগিল। একে একে জীবনের কাহিনী মনের সম্মুখে ভাসিয়া উঠিল। শৈশবটা আমার সকলের মতনই আননা ও হাসির ভি ক্লর দিয়াই কাটিয়া গিয়াছিল। যৌবনে পা দিবার আগেই আমার এক সঙ্গিনী জুটিয়াছিল, সে বেণু। বেণু আর আমি সমবয়সী। অল্প বয়স হইতেই তাহার সহিত আমার আলাপ । মনে পড়ে ছোটকালে একদিন থেলিতে খেলিতে তাকে বিরক্ত করায় সে রাগিয়া আমার গালে চটপট চড় বসাইয়া দিয়াছিল ও খাম্‌চাইয়া আমার নীকের ডগা ইষ্টতে থানিকটা মাংস উপড়াইয়া ফেলিয়াছিল। তাহার সেই অত্যাচার আমি নীরবে সহ করিয়াছিলাম, ফিরিয়া তাহার গায়ে হাত তুলিবার পর্য্যস্ত চেষ্টা করি নাই । বেণু ছিল আমার সমবয়স্ক, সে ও আমি এক ক্লাসেই পড়িতাম। তাহার স্কুল ভাল না আমার স্কুল ভাল, মেয়ের ভাল ন ছেলের ভাল—এইরূপ মান-রকম তুমুল তর্ক প্রায়ই আমাদের মধ্যেই হইয়। গিয়ছে, কিন্তু কোন দিন ইঙ্গার কোন মীমাংসায় আমরা উপনীত হইতে পারি নাই। আমাদের শৈশবের এই প্রীতি ও মেলামেশা শৈশব পার হইবার সঙ্গে সঙ্গে কমিয়া যায় নাই, এ-বিষয়ে আমাদের পিতা-মাতাও কোন দিন কোন কথা বলেন নাই। বড় হইয়াও আমরা উভয়ে উড়যেব সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠভাবে মিলিতাম । বেণু ৰে সুন্দরী, একথাট। আমি একদিন হঠাৎ আবি স্কার করিয়া ফেলিলাম। তথন আমরা সেকেণ্ড ক্লাসে পড়ি, স্কুল হইতে ফিরিতে সেদিন আমার দেরী হইয়াছিল। বাসায় ফিরিয়া তাড়াতাড়ি কিছু জলযোগ করিয়৷ আমি বেণুদের বাসার উদ্দেশ্যে ছুটিলাম। বেণুদের বাসায় যখন পৌছাইলাম তখন প্রায় সন্ধ্যা ঘনাইয়া আসিয়াছে। পশ্চিমাকাশে শেষ চুম্বন আঁকিয়া দিয়া প্রেম-বিহবল নয়নে অরুণদেব পৃথিবীর পানে শেষ দৃষ্ট চাহিয়া লইতেছেন তিনি যেন পৃথিবীর মায়া কাটাইয়াও কাটাইতে পারিতেছেন না । বেণু বারান্দায় দাড়াইয়াছিল, বোধ হয় আমারই অপেক্ষায় । আমাকে দেখিয়া আমার অভ্যর্থনার জন্ত হাত বাড়াইয় সে অগ্রসর হইল। হাসিয়া বলিল “এত দেরী হ’য়ে গেল তোমার আজ ; বাবা এতক্ষণ তোমার জন্য বসে বসে এই বেরিয়ে গেলেন ; চলো পিসী তোমার জন্য ভিতরের বারান্সায় বসে আছেন।” হঠাৎ একটা নতুন কিছু আমার চোখে আসিয়া পড়িল আমি দেখিলাম লেণু অসামান্য রূপসী । বুকের ভিতর একটা

  • هاشميمية