পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ]

  • জাদিসমাজের শীর্ধমণি মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও তদ্বংশীয় অনেকে, ইংরেজী ন্যাশনাল পেপারের সম্পাদক বাবু নবগোপাল মিত্র, “হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠতা"-প্রণেতা প্রসিদ্ধ বাবু রাজনারায়ণ বস্ব প্রভৃতি “মধ্যস্থ”সম্পাদক মনোমোহন-বাবুর পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এই পত্রিক প্রথমে সাপ্তাহিক আকারে প্রকাশিত হইত। এক বৎসর পরে সম্পাদকের "অস্বস্বত-নিবন্ধন ইহা পাক্ষিক ও শেষে মাসিক আকারে পরিণত হয় ।

উছার বার্ষিক মূল্য ডাকমাণ্ডল সমেত ৩w• ছিল। “প্রাচীন হিন্দুসমাজের গোড়ামি ও নবীন-ভাবাপন্ন যুবকদের চাপল্য নিবারণ-কল্পে উভয়ের মাঝামাঝিভাবে এই ‘মধ্যস্থ' পত্রিকা যথোচিত চেষ্টা করিবে" সম্পাদক মহাশয়ের এইরূপ সংকল্প ছিল। শ্ৰী অক্ষয়কুমার বস্তু বিদ্যাবিনোদ সাহিত্যভূষণ, ভূতপূৰ্ব্ব “মধ্যস্থ" পত্রিকায় সহকারী সম্পাদক ও কাৰ্য্যাধ্যক্ষ ( ఆ6 ) সংস্কৃত রামায়ণ ও মহাভারত প্রক্ষিপ্তাংশ-বিবর্জিত সংস্কৃত বা তাহার বঙ্গানুবাদ রামায়ণ ও মহাভারত একখানিও নাই। “বঙ্গবাসী" সংস্করণ রামায়ণ ও তাহার বঙ্গানুবাদ এবং নীলকণ্ঠীয় টকা-সম্বলিত সংস্কৃত মহাভারত ও স্বৰ্গীয় কালীপ্রসন্ন সিংহ মহাশয়ের অনুদিত মহাভারত প্রক্ষিপ্ত-বিবর্জিত নহে। রামায়ণের উত্তরাকাও সমস্তই প্রক্ষিপ্ত । বাহুল্য-ভয়ে কেবল প্রসিদ্ধ একটি স্থান নির্দেশ করিতেছি । শূদ্র তপস্ত করিয়াছিল বলিয়া ব্রাহ্মণ-বালকের মৃত্যু এবং হুদ্ধেতু শুদ্ৰ তপস্বী শমুকের শিরচ্ছেদ করিবার গল্পটি যে নিছক প্রক্ষিপ্ত তাহাতে সন্দেহের অবকাশ নাই । শূদ্রের তপস্তা হেতু ব্ৰাহ্মণ-বালকের মৃত্যু হইলে সমুদায় ব্রাহ্মণ-বালকেরই মৃত্যু হওয়া উচিত ছিল। তাহ না হইয়। কেবল একটির মৃত্যু হইল কেন ? স্বন্দরাকাণ্ডে (৪৮ সর্গ ৭-১২ শ্লোক ) দেখা যায় রামের জন্মের বহুপূৰ্ব্বে কুস্ত নামক মহৰ্ষির পুত্রের দশবর্ষ বয়সেই মৃত্যু হইয়াছিল। তখনও শূত্র তপস্ত কবে নাই। তবে মহর্ষি কুন্ত ঋষির দশবর্ষ-বয়স্ক পুত্রের মৃত্যু হইয়ছিল কেন ? এই গল্পে বল হইয়াছে--"সত্য যুগে ব্ৰাহ্মণ, ত্রেত। যুগে ক্ষত্রিয়, দ্বাপর যুগে বেষ্ঠ এবং কলিযুগে শূদ্রের তপস্তায় অধিকার" (উত্তরাকাও ৮৭ সর্গ ২১ ২৮ শ্লোক)। ত্রেতাযুগে রামের জন্মের বহু পূর্ধ্বের বৈষ্ঠ ও শুদ তপস্বীর কথা কিন্তু রামায়ণের অযোধ্যাকাণ্ডে রহিয়াছে । রাজা শাখ মনধানে যে তাপসকুমারকে হুখ কৰিছিলেন সেই তাপস ব্লৈপ্ত এবং ঐ তাপস-কুমার উহারই শুদা পত্নীর গর্ভসমুদ্ভূত (অযোধ্যাকাও ৬৩ সর্গ ৫১ গ্লোক)। অনুলোমাহ মাতৃবর্ণ (বিষ্ণু ১৬ অঃ ২ শ্লোক ) স্বতরাং বৈষ্ঠ তাপসের এই পুত্র শূদ্র । এই পুত্রও কিন্তু তাপস এবং এহ্মবাদী ছিলেন (৬৪ সর্গ ২৪ শ্লোক) । অতএব ত্রেতা যুগে বৈষ্ঠ শূদ্রের তপস্তা নিষিদ্ধ ছিল না। পরস্তু বেদেও অনেক শুদ্ৰ ঋষির রচিত বহু মন্ত্র রহিয়াছে। বেদ কিন্তু সত্য যুগের। তপস্ত না করিলে ঋষি হওয়া যায় না। বেদমন্ত্ররচয়িত পুত্র যখন ঋষি, তখন সত্য যুগেও পূদ্রের তপস্তার অধিকার ছিল। অতএব কলিযুগ ব্যতীত অপর যুগে শূদ্রের তপস্তার অধিকার নাই ইহা আদৌ সত্য নহে। স্বতরাং শূত্রর তপস্তা হেতু ব্ৰাহ্মণ-বালকের স্বত্যু হওয়ার গল্পটা প্রক্ষিপ্ত । অপর কাণ্ডে রাম-সীতার যে বয়স-সংখ্যা রছিয়াছে তাহীও প্রক্ষিপ্ত । তাপসবেশে রাবণ পঞ্চবটী বনে রামের আশ্রমে উপস্থিত হইলে অতিথি মনে করিয়া সীতা তাপসবেণী রাবণকে বলিয়াছিলেন—“দ্বাদশ বর্ষ হইল আমি ইঙ্গ কুকুলে আসিয়াছি অর্থাৎ রামের সহিত আমার বিবাহ . বেতালের বৈঠক సిd হইয়াছে। এক্ষণে আমার বয়স ১৮ বৎসর এবং আমার পতি রামের বয়স ২৫ বৎসর (অরণ্যকাও ৪৭ সর্গ ১০ শ্লোক ) । সীতার বয়স ১৮ বৎসর হইতে ইক্ষ, কু-কুলে আসার ১২ বৎসর বাদ দিলে অবশিষ্ট থাকে ৬ বৎসর। অতএব দেখা যাইতেছে বিবাহ সময়ে সীতার বয়স ছিল মাত্র ৬ বৎসর। কিন্তু হরধনু ভাঙ্গিবীর সময় রাজা জনক বিশ্বামিত্ৰ ঋষিকে বলিয়াছিলেন— গীত “বৰ্দ্ধমান।" অর্থাৎ যৌবনসম্পন্ন হইলে অনেক রাজা আসিয়া সীতার পাণি প্রার্থনা করিয়াছিলেন (আদিকাণ্ড ৬৬ সর্গ ১৫ শ্লোক ) ৷ ছয়-বৎসর-বয়স্ক বালিকাকে পূর্ণযুবতী বলা যায় কি ? বিশ্বামিয় ঋষি যখন যজ্ঞ রক্ষার্থ দশরণের নিকট হইতে রামকে লইয়া যান, তখনই রাম হরধনু ভঙ্গ করেন। দশরথের নিকট হইতে লইয়া যাইবার সময় দশরথ রামকে পঞ্চদশ বৎসরের বালক বলিয়াছিলেন (আদিকাণ্ড ২• সর্গ ২ শ্লোক) এই পনর যৎসর এবং বিবাহের বার বৎসর মোট হয় ২৭ বৎসর বয়সে রামের বনগমন । কিন্তু সীতা যলিয়াছিলেন বনগমন-সময়ে রামের বয়স ২৫ বৎসর। বিবাহের পূৰ্ব্বে সীতা যেমন পূর্ণযুবতী ছিলেন, রামও পূর্ণযুবক ছিলেন (আদিকাণ্ড ৭২ সৰ্গ ৭ শ্লোক)। এবং বিবাহন্তে রামসীতা একাস্তুে বিহার করিতেন (অদিকাণ্ড ৭৭ সর্গ ১৪ শ্লোক)। যুবক যুবতী না হইলে একাস্তে বিহারের কথা বাল্মীকি বলিতেন না। পনর বৎসরের বালকের ছয় বৎসরের বালিকা লইয়া একাস্তে বিহার আদিকবি বাল্মীকিৰ বর্ণনা কথনষ্ট নয় । অতএল রামসীতার বয়স যে প্রক্ষিপ্ত ইহাতে BBDD DDBBB BBS BBS BBBBBB BBD BB BBDD পক্ষপাতী কোনও ধুরন্ধরের দ্বারা রামায়ণে প্রক্ষিপ্ত হইয়াছে। গণিতবিজ্ঞানে তাহার জ্ঞান এলদ্বিধ পনর এবং বার যোগ করিলে যে ২৭ হয় ইহাও তাহার জ্ঞান নাই । এবং পলর ও ছয় বৎসর বয়সের বালকবালিকাকে যুবকযুবতী বলা যায় না তাহাও উহার মাথায় খেলে নাই। অতএব প্রক্ষিপ্তাংশ-বিবর্জিত সংস্কৃত কি তাহার বঙ্গানুবাদ রামায়ণ নাই। বৰ্দ্ধমানের মহারাজা স্বৰ্গীয় মহতাব চন্দ, বাহাদুর এসিয়াটিক সোসাইটির মুদ্রিত সংস্কৃত মহাভারত অবলম্বনে কয়েক পর্কের বঙ্গানুবাদ করানোর পর হস্তলিখিত প্রাচীন ৫ খান মহাভারত সংগৃহীত হইলে তাহার সহিত এসিয়াটিক সোসাইটির মুদ্রিত সংস্কৃত মহাভারতের পাঠবৈষম্য দর্শন করিয়া তাহা পরিত্যাগ করেন । তাঁহাতে উচ্চার বহু অর্থক্ষতি হয় এবং ঐ সংগৃহীত প্রাচীন পুথির পাঠ মিলাইয়া সংশোধনাস্তে মুদ্রিত করাষ্টয় তাহারই বঙ্গানুবাদ করাইয় বিতরণ করিয়াছিলেন। বঙ্গবাসী এই বঙ্গানুবাদ মুদ্রিত করিয়া অল্পমূল্যে বিক্রয় করিতেছেন। এবং বদ্ধমানের মহারাজারও বোম্বাই-মুদ্রিত এবং কলিকাতার কঁসিারিপাড় নিবাসী স্বৰ্গীয় তারকনাথ প্রামাণিকের হস্তলিপিত সংস্কৃত মহাভারতের সঙ্কিত পাঠ ঐক্য করিয়া নীলকণ্ঠের টীকা সমেত প্রকাশ করেন। কাজেই এই মহাভারতের সহিত বদ্ধমানের মহারাজার অনুদিত ও বঙ্গবাসীর মুদ্রিত মহাভারতের মিল মাঠ। বৰ্দ্ধমানের মহারাজা এপিয়াটিক সোসাইটির মহাভারত হইতে অনুদিত পৰ্ব্বগুলি বহু অর্থ ক্ষতি স্বীকার করিয়াও পরিত্যাগ করিয়াছিলেন। স্বৰ্গীয় কালীপ্রসন্ন সিংহ মহাশয় এশিয়াটিক সোসাইটার মুদ্রিত সেই পাঠ-বৈষম্য পূর্ণ সংস্কৃত মহাভারত অবলম্বনেই অঙ্গুলীদ করাষ্ট্ৰয়ছিলেন । সে অনুবাদও সংক্ষেপ। কুতরাং যথাযথ অনুবাদ বলা বায় না। অতএব সংস্কৃত কি তাহার বঙ্গানুবাদ কোন রামায়ণ ও মহাভারতই প্রক্ষিপ্তাংশ-বিবর্জিত নয়। কোন কোন পর্কে ৪৫ অধ্যায় পর্যাস্তুও প্রক্ষিপ্ত রঙ্গিরাষ্টে । ۔۔ লী বৈকুণ্ঠনাথ দৈৰ • ( ১৬৭ ) প্রবাসীর চৈত্র সন্ধ্যায় বেড়ালের বৈঠক স্তম্ভে ১৬৭ নং উত্তরে জীযুক্ত সরলকুমার অধিকারী মহাশয় বরোদা কলা-ভবন টুেক্‌নিকেল ইন্‌ষ্টটিউটে