পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. রাজপথ | > 8 || সমস্ত দিনটা স্বরেশ্বর নানা কৌশলে নিজেকে ভুলাইয়া রাখিল । সজনীকান্তের সহিত কথোপকথন এবং তদুর্ভূত চিস্তা যাহাতে তাহার চিত্ত অধিকার করিতে না পারে তজ্জন্য সে সমস্ত দিনের মধ্যে একবারও নিজেকে অবসর দূিল না। গৃহে যতক্ষণ রহিল তারাসুন্দরী ও মাপবীর সহিত গল্প করিয়া কাটাইল । দ্বিপ্রহরে মাণিকতলা ষ্ট্রীটে তাতশালায় নিজেকে নিরবসরভাবে ব্যাপৃত রাখিল এবং তৎপরে প্রয়োজনে এবং অপ্রয়োজনে গুঙ্গ হইতে গুহান্তরে ঘুরিয়া ঘুরিয়। রাণি নয়টার সময়ে গৃহে ফিরিয়া আসিল । কিন্তু অতিরি সমাপন করিয়া সে যখন শয্যায় গিয়া আশ্রয় লষ্টল তখন সারা দিন পরিয়া যাঙ্গাকে নানা উপায়ে রোধ করিয়াছিল তাহাকে আটুকাইয়। রাগিবার আর কোন ও উপায়ই খুজিয়া পাইল না । ক্ষুধাৰ্ত্ত কীট-পতঙ্গের মত দুণিবার চিন্তা রাশি তাহার চিত্ত জুড়িয়া বসিয়া দংশন করিতে লাগিল । কিন্তু দংশনের যন্ত্রণ হইতেও তাহার বেশী যন্ত্রণ হইল এই কথা ভাবিয়া, যে দংশন হইতে নিজেকে রক্ষা করিবার মতন কোন ও শক্তি বস্তুতঃ তাহার নাই ! সমস্ত দিন সৰ্ব্বপ্রকার চিন্তা হইতে কেমন করিয়৷ সে নিজেকে মুক্ত রাখিয়াছিল তাহা স্মরণ কবিয়া এখন সে স্পষ্ট বুঝিতে পারিল যে সেরূপে ভুলিয়া থাকার মধ্যে শক্তির কোনও পরিচয় ত ছিলষ্ট না, পক্ষান্তরে ভদ্বার। শক্তির অভাবই ব্যক্ত হইয়াছিল । নিজেকে ভুলাইয়। রাখিয়াছে বলিয়৷ যতক্ষণ সে মনে করিতেছিল ততক্ষণ যে প্রকৃতপক্ষে সে অপরকেই ভুলাইয়া রাখিয়াছিল একথা বুঝিতে তাহার বাকী রহিল না ; এবং বুঝিতে পারিয়ার্ক নিজের দুৰ্ব্বলতা উপলব্ধি করিয়া তাহাৰ স্বায়ু-প্রবণ হৃদয় অপরিমেয় লজ্জায় ও নৈরাষ্ঠ্যে ভরিয়া গেল । নিদ্রার জন্য দীর্ঘকাল বৃথা সাধনা করিয়া বিরক্ত হইয়৷ সুরেশ্বর ছাদের উপর মুক্ত আকাশতলে আসিয়। দাড়াইল । গভীর নিশীথে পৌষমাসের শীত-সংক্ষুব্ধ কলিকাতার স্তন্ধ রাজপথে দীপাবলী তখন পাংশু হইয়! জলিতেছিল, এবং উপরে কৃষ্ণাষ্টমীর নিম্প্রভ-চন্দ্রালোকে তারকাশ্রেণী মার্জিত মণির মতন চক্চক্ করিতেছিল । একটা উজ্জল তারকার প্রতি স্বরেশ্বর বহুক্ষণ ধরিয়া অন্যমনস্ক হইয়া চাহিয়া রহিল ; তাহার পর সহসা যখন খেয়াল হইল যে আকাশের তারক। অলক্ষিতে ধীরে ধীরে কোনও চকিত নেত্রের কৃষ্ণ-তারকায় পরিণত ইষ্টবার উপক্রম করিয়াছে তপন সে নিরতিশয় বিরক্তি-ভরে পরিত্যক্ত শয্যাতেই ফিরিয়া গেল ! পরদিন প্রভাতে সুরেশ্বরকে দেখিয়া ভারণস্বন্দরী উংকষ্ঠিত হইয়া বলিলেন, “অমুখ করেছে নাকি সুরেশ ? এত শুকনে দেখাচ্ছে কেন ?” সুরেশ্বর মৃদু হাসিয়া বলিল, “না, অস্থখ কিছু করেনি মা ! কাল রাত্রে ভাল ঘুম হয়নি তাই বোধ হয় শুকনো ፴፬ጓዝሯጮ፴ [” “ঘুম ভাল হয়নি কেন ? জেগে প্রবন্ধ লিখেছিস্ ?” সুরেশ্বর মাথ নাড়িয়া স্মিত-মুখে বলিল, “ত হ’লে কাল বুঝি সারা রাত শুকনো দেখাত ন ম । কোন ও কাজ নিয়ে রাত জাগৃলে আমার কষ্ট হয় না ।" স্বমিত্রীদের লইয়া সুরেশ্বরের কাহিনী তারাসুন্দরীর, সবট জান না থাকিলেও, সবট অবিদিত ও ছিল না । মাধবার নিকট যতটুকু শুনিয়াছিলেন তাঙ্গর সহিত হয়েশ্বরের ঘুম না-হওয়ার কোনও কাৰ্য্য-কারণের যোগ কল্পন। না করিয়া তিনি এমনিই জিজ্ঞাসা করিলেন, “হ্যা রে সুরেশ, আজ কাল ত আর সুমিত্রাদের কোন ও কথা বলিসনে ? তাদের বাড়া আর যাসনে বুঝি ?” তারাসুন্দরীর এই প্রশ্নে সুরেশ্বর মনে-মনে ঈষৎ চিন্তিত ミミぶ。 இ.