পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা ] কাঠি হন্তে লইয়া বিমান-বিপরী স্মিতমুখে বলিল, “এই কাঠিটার মুখে যতটুকু বারুদ আছে ততটুকুই যথেষ্ট।" খোলা বাণ্ডিলটা বিমানবিহারীর সম্মুখে স্থাপিত করিয়৷ স্বরেশ্বর বলিল, “বেশ তা হ’লে পরীক্ষা ক’রে দেখা যাক, কিন্তু তার আগে হতোটা কতখানি ওজনে আছে তা দেখে রাখা দরকার।” বলিয়। বিমানবিহারীকে কোন কথা বলিবার অবসর না দিয়া সুরেশ্বর ত্বরিতপদে ভিতরে প্রবেশ করিল। দাড়িপাল্লা- ৪ বার্টুখারা-হস্তে সুরেশ্বরকে সিড়ি দিয় নামিতে দেখিয়৷ মাধবী বলিল, “এসব কি হবে দাদা ?” “কাজ আছে ; পরে বল্ব ।" বলিয়া সুরেশ্বর প্রস্থান করিল। মাধবী কৌতুহলী হইয়। স্তরেশ্বরের পিছনে পিছনে বৈঠকখানার দ্বারপাশ্বে আসিয়ু৷ দাড়াইল । দাড়িপাল্লা-হস্তে সুরেশ্বরকে প্রবেশ করিতে দেখিয়। বিমানবিঙ্গারী হাস্য করিয়৷ বলিল, “তুমি সে সত্য-সতাই দাড়ি পাল্লা নিয়ে এসে হাজির কবুলে সুরেশ্বর ” সুরেশ্বর ঈযং বিরক্তিভরে বিমানবিহারীর প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া কহিল, “ত। ত করলাম। কিন্তু তুমি কি এতক্ষণ শুধু মিথ্য অভিনয় করছিলে ?” সুরেশ্বরের তিরস্কারে মনে মনে অসন্তুষ্ট হইয়া বিমানবিহারী বলিল, “আমি না হয় মিথ্য। অভিনয় করছিলাম, কিন্তু তুমি যে সত্যই অভিনয় করতে আরম্ভ করলে!” সুরেশ্বর প্রবলভাবে মাথ। নাড়িয়া বলিয়া উঠিল, “না, না, অভিনয় নয় বিমান ! কথাটাকে বাজে কথা দিয়ে চাপ। দিতে গেলে চলবে না। আজ বাস্তবিকই আমার পক্ষে একটা কথা বোঝাবার, আর লোমার পক্ষে সেই কথাটা বোঝবার স্বধোগ উপস্থিত হয়েছে। শক্তি যে কত কমে অবস্থা-বিশেষে ব্যর্থ হ’য়ে যেতে পারে তার একটা দৃষ্টান্ত তুমি আজ নিজেই উপস্থিত করেছ।” বলিয়৷ স্বরেশ্বর প্রথমে স্থমিত্রার প্রস্তুত স্থত৷ ওজন করিয়া দেখিল, ” তংপরে তাহ হইতে কয়েক গুচ্ছ বিমানবিহারীর সম্মুখে স্থাপিত করিয়া বলিল, “এই রইল সুমিত্রার হাতে-কাটা কয়েক-গোছা স্বত, আর তোমার হাতে রয়েছে দেশলাই মের বান্ধ। তুমি বলছ তার একটা কাঠিই এই স্বতাটুকু রাজপথ ఫిలి) ভস্ম করে দিতে পারে ; আর আমি বলছি তোমার কাঠি-ভরা সমস্ত বাক্সটাই শে-বিষয়ে একেবারে অক্ষম। পরীক্ষা করে দেখ কার কথা ঠিকৃ, আর কার কথ। ভুল।” বিমানবিহারী হাসিয়া উঠিয় বিদ্রুপের স্বরে বলিল, “হঁ্য, এ একটি দুরূহ সমস্যা বটে ! পরীক্ষা করে’ না দেখলে কিছুতেই বলা যাবে না ! একটা দেশলাইয়ের কাঠি জালিয়ে ধরিয়ে দিলে এ স্থতাটা পুড়ে যাবে তুমি কি তা’ অস্বীকার কর ?” সুরেশ্বর সবেগে বলিল, “আমি কিছুই স্বীকার বা অস্বীকার করছিনে ? আমি শুধু দেখতে চাই যে তোমার দেশলাইয়ের কাঠিতে সুমিত্রার কাট। স্থত বাস্তবিকই পুড়ে ছাই হ’য়ে যেতে পারে কি না। সব জিনিসের হিসাবই অত সহজ ধারায় চলে না বিমান! পৃথিবীতে যত মানুষ আছে ততগুলা তরবার তৈরী হ’লেই সকলের গলা কাটা পড়ে মা !” এবার আরও অধিক জোরে হাসিয়া উঠিয় বিমান লিল, “অতএব আগুন ধরিয়ে দিলে এটুকু স্বত পুড়বে ন ? বাঃ বেশ চমৎকার যুক্তি ত ? এ ন্যায়-স্বত্রও তোমাদের চবুক কেটে বার করেছ নাকি ? অমাবস্যার দিন চাদ ওঠে না অতএব রসগোল্লা থেতে মিষ্টি লাগে, এইরকম তোমার যুক্তি ।” এবি দ্রুপে কিছুমাত্র অপ্রতিভ ন হইয়া স্বরেশ্বর শান্ত অথচ দৃঢ় ভাবে বলিল, “ত। আমি জানিনে, আমি শুধু এই জানি যে তোমার দেশলাইয়ের কাঠিতে সুমিত্রার স্থতা পুড়ে ছাই হ’তে পারে, এ তুমি এখনও প্রমাণ করতে পারনি ’ এবার আর না হাসির বিমান বলিল, “একথা বারবার ব’লে তুমিই বা কি প্রমাণ কােছ তা ত জানিনে ! কাপাস তুলে আর দেশলাইয়ের কাঠির মধ্যে দাহ-দহিক সম্পর্ক আছে তাও তোমাকে প্রমাণ করে দেখাতে হবে নাকি ?” সুরেশ্বর পূর্ব-ভঙ্গীতে বলিল, “সে তোমার ইচ্ছে ! কিন্তু না দেখালে কিছুতেই প্রমাণ হবে না যে তোমার দেশলাইয়ের কাঠিতে স্থমিত্রার স্থত। পুড়ে ছাই হ’তে পারে। আর আমি দু-মিনিট অপেক্ষা কুরব, তার পব স্বতে তুলে রেখে দেবে।”