পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা] সরকারী ও সৰ্বকারের সাহায্য-প্রাপ্ত বা জানিত শিক্ষালয়-সকলের যে-সব দোষ আছে, সেই-সব দোষবর্জিত ষথেষ্টসংখ্যক জাতীয় বিদ্যালয় স্থাপিত ও পরিচালিত না হওয়ায় আমরা প্রথমোক্ত শ্রেণীর শিক্ষালয় সকলের বর্জনের ও উচ্ছেদ সাধনের পক্ষে আগেও ছিলাম না, এবং এখনও নাই ; কারণ, আমাদের মতে ঐ-সব শিক্ষালয় দ্বারা অবিমিশ্র অকল্যাণ হয় নাই, কল্যাণও হইয়াছে ও হইতেছে। ঐ শিক্ষালয়গুলি যখন আছে, তখন উহার পরিদর্শনও চাই। স্কুলপরিদর্শনের ব্যবস্থা সব সভ্য দেশে আছে ; উহার প্রয়োজনীয়তা বুঝাইবার আবঙ্গকতা নাই। কিন্তু ইহাও ঠিক, যে, পরিদর্শকদের ংখ্যা খুব বেশী বাড়ান হইয়াছিল—তাহার অভিপ্রায় কতকটা রাজনৈতিক গোয়েন্দা-গিরি, কতকটা অস্তবিধ । কেবল শিক্ষার উৎকর্ষ-রক্ষণ ও-বৃদ্ধির জন্য যত আবশ্বক, সেইরূপ-সংখ্যক স্বশিক্ষিত ও বিচক্ষণ পরিদর্শক রাখিয়৷ বাকী লোকদিগকে বিদায় দিলে ভাল হইত। চিকিৎসকদের সম্বন্ধে বক্তব্য এই, যে, সরকারী অর্থাং গবর্ণমেণ্টের ডিষ্ট্রিক্ট বোর্ডের ও মিউনিসিপ্যালিটির দাতব্য চিকিৎসালয় ও হাসপাতাল-সমূহের কাজ করিবার জন্য সরকারী চিকিৎসকের প্রয়োজন আছে। তা ছাড়া, এমন কোন কোন স্থান আছে, যেখানে কেবল রোগীর বাড়ী গিয়া চিকিৎসা-দ্বারা প্রাপ্ত দর্শনীতে ভাল ডাক্তারের পোষায় না, অথচ সেখানে ভাল ডাক্তার থাকা আবশুক । সেই-সব জায়গায় সরকারী ডাক্তার চাই । • किब्ल्ल গবর্ণমেণ্টের শক্তি-ও প্রভাব-বৃদ্ধির উপায় এইরূপ একটি মত প্রচলিত আছে, যে, গবর্ণমেণ্ট, দেশ-হিতকর যাহা কিছু করেন বা করান, তাহার দ্বারা জনসাধারণের হৃদয়-মনের উপর নিজের প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার করেন, এবং তাহার দ্বারা পরোক্ষভাবে নিজেদের প্রভুত্ব বজায় রাখিয়া স্বার্থ-সিদ্ধি করেন । আমরা এই মতটিকে সম্পূর্ণ অলীক বা ভিত্তিহীন মনে করি না। গবর্ণমেন্টের এই প্রভাব ও আধিপত্য-বিস্তার-চেষ্টায় বাধা দিতেও আমাদের আপত্তি নাই। কিন্তু আমরা বলি, বিবিধ প্রসঙ্গ— গবর্ণমেণ্টের শক্তি ও প্রভাব বৃদ্ধির উপায় - যে, বিদেশীদের কর্তৃত্বের পরিবর্তে আমাদের জাতীয় কর্তৃত্ব স্থাপন করিতে আমরা কেন চাই, তাহা দেশের লোক ভাল করিয়া না বুঝাতেই, গবৰ্ণমেণ্টের উক্তৰূপ প্রভাবু-বৃদ্ধি-চেষ্টাকে আমরা ভয় করি। ইংরেজ-প্রভুত্ব নষ্ট করিয়া জাতীয় প্রভুত্ব স্থাপন করিবার কারণ ও প্রয়োজন সাক্ষাৎ-ও পরোক্ষভাবে দেশের লোককে বুঝাইয়া দিবার জন্য, খবরের কাগজে গবৰ্ণমেন্টের দোষোঘাটন ও সমালোচনা হইয়া থাকে। দোষ স্বাহ আছে, তাহা দেখান অবগু কৰ্ত্তব্য। কিন্তু ইংরেজ গবর্ণমেণ্টের যদি কোন দোষ-ত্রুটি না থাকিত, তাহা হইলেও আমরা জাতীয় কর্তৃত্ব চাইতাম । কাৰণ, একএকজন মানুষের পক্ষে নিজের নিজের কাজ চালাইবার ক্ষমতা থাকা এবং কাজ চালান যেমন মন্থন্তত্বের চিহ্ন, এক একটি জাতিরও নিজের নিজের কাজ চালাইবার ক্ষমতা থাকা ও তাহা চালান, তেমনি তাহাদের মহন্তত্বের প্রমাণ । যে জাতি নিজেদের কাজ চালাইতে পারে না, তাহার মনুষ্যত্ব-হিসাবে হীন । এই জন্ত, আমাদেরই দেওয়া ট্যাক্স হইতে যে-ধে রাষ্ট্রীয় কাজ চালাইবার সরকারী বন্দ্রোবস্ত বা আয়োজন আছে, আমরা সেইসব দ্বারা নিজেদের কাজ উদ্ধার করিবার পক্ষপাতী। দৃষ্টান্ত দিতেছি। সরকারী ডাক-বিভাগের বন্দোবস্ত আমাদের কাজে লাগাইয় আমরা দেশময় আমাদের মত প্রচার করিতেছি। সৰ্বকারী রেল-রোডের সাহায্যে রাজনৈতিক নেতার বুকুতাদি করিয়া বেড়াইয়া নিজেদের কার্য্য উদ্ধার করিতেছেন। কিন্তু একথা কেহই বলিতে পারেন না, যে, সংবাদপত্র-সম্পাদক সকলেই বা রাজনৈতিক আন্দোলক সকলেই সৰ্বকারের মন্ত্ৰমুগ্ধ গোলাম হইয়া পড়িয়াছেন। অবশু, যদি কোন সরকারী বন্দোবস্তু বা আয়োজম নিজেদের কাজে লাগাইতে হইলে জাতীয় হীনতা বা অপমান স্বীকার করিতে হয়, তাহা হইলে তাহা করা উচিত নয় । অসহযোগীদের মধ্যে একটা কথা চলিত আছে, যাহার মর্থ এই যে, তাহারা যাহা করিড়েছেন, তাহ আমলাতন্ত্রের সহিত রক্তপাতহীন যুদ্ধ, পশিব বা-জাতীয় বলের পরিবর্তে র্তাগর আত্মিক বলের দ্বারা আমলাতন্ধের