পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*; ৩য় সংখ্যা ] কিন্তু কিরূপে এ অসম্ভব সম্ভবে পরিণত হইল সে-সম্বন্ধে গোড়াতেই দুই-একটি কথা বলিয়া রাখিতেছি। ইহা পূৰ্ব্বেই জানা ছিল যে আলকাত রাকে বিশেষ আকার-বিশিষ্ট কোন পাত্রে রাখিয়া তাপের সাহায্যে পরিশ্রুত (distill) করিলে “ন্যাপথা” (coal maptha) নামক মেটে তৈল-জাতীয় এক-প্রকার পদার্থ পাওয়া যায় ও ইহা জালানীরূপে এবং আলো-উৎপাদনার্থে ব্যবহার করা যায়। বস্তুতঃ এই “ন্যাপথা” (Goal tar naptha) হইতেই মনীষী ইংরেজ রাসায়নিক ফ্যারাডে ১৮২৫ খৃষ্টাকে বিশুদ্ধ বেনজিন ( Benzont ) প্রস্তুত করেন। ইহা অতি তরল ও সহজ-দাহ । অতঃপর ১৮৪৮ খৃষ্টাব্দে জর্জ ম্যানসফিল্ড নামক একজন ইংরেজ যুবক রাসায়নিককে এই ন্যাপ থার রহস্য-ভেদের জন্য নিয়োজিত করা হয়। ম্যানসফিল্ড, বহু গবেষণার পর আবিষ্কার করিলেন যে আলকাতরার পরিস্রবণ-কালে ( during the process of distillation ) Rosco ক্রমিক উচ্চতা-অনুসারে নিম্নলিখিত দ্রব্যগুলি প্রথম পাত্র হইতে পরিশ্রুত হইয়৷ পাত্রাস্তরে জমা হয়, যথা— বেনজিন্‌ টলুয়িন (Tolmone), জাইলিন (xylene), কাৰ্ব্বলিঙ্ক অ্যাসিড, ন্যাপথালিন, অ্যানখাসিন্‌, (anthracone) 8 lubricating oils ; “If I 28 N offIĘ আলকাতরার স্বানে “পিচ" নামক একপ্রকার কালে পদার্থ অবশিষ্ট থাকে এবং ইহা হইতে বার্ণিস ও জুতার কালি হয়, ও

  • flar -

রাজপক্ষ ধূলি-শূন্ত করার কাজে ও কাষ্ঠ-সংরক্ষণের কাজে ইহ জালানীরূপে ব্যবহৃত হয়। शाकरेऽ,डयन দিব্যচক্ষে দেখিতে পাইলেন যে এই আলকাতরার hরিস্রবণ-কার্য্যের সহিত ভবিষ্যৎ মানবজাতির ভাগf ও স্বর্থ-স্বচ্ছদ ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। অতঃপর তাহার চেষ্টায় উক্ত কাৰ্য্যের জন্য একটি বিরাট কারখানার প্রতিষ্ঠান হইল ও কাজকৰ্ম্ম উত্তমরূপেই চলিতে লাগিল। কিন্তু ১৮৫৫ খৃষ্টাব্দে একদিন অসাবধানতাবশতঃ তৈলে আগুন লাগিয়া যায়। চোখের সাম্নে সাধের প্রতিষ্ঠানটি বিনষ্ট হইয়া যায় দেখিয়া অসীম সাহসে ম্যান্সফিল্ড, আগুন নিবাইতে যাইয়া আর ফিরিতে পারেন নাই। এইরূপে ১৮৫৫ খৃষ্টাৰে লণ্ডনে একটি অমূল্য কয়লার কেরামতি ఇసిసి জীবনের অবসান হয়। আজ যে-শিল্পের জন্য কোটি । কোটি মূদ্রা ও লক্ষ লক্ষ নর-নারী নিয়োজিত, তার সাফল্যের মূলে যে একটি ইংরেজ যুবকের জীবনাহুতি । নিহিত আছে তাহা হয়ত অনেকেই জানেন না । ঠাণ্ড বেনজিন্‌ নাইটিক্‌ ও সালফিউরিক এ্যাসিডেরণ মিক্‌শ্চার মিশাইলে নাইট্রো বেনজিন (Nitro-benzene) ; নামক এক-প্রকার স্বগন্ধ তৈল প্রস্তুত হয় । ইহা নানাবিধ স্থগন্ধি-করণ-কায্যে ব্যবহৃত হয়, বিশেষতঃ সাবান প্রস্তুত করায় । ইহাই “মিরেবেন এসেন্স" (Essence mirabane). Wići; ëzitte Vanilline afne পদার্থের সঠিত মিশাইয়া “White heliotrung" নামক অত্যুৎকৃষ্ট স্বগন্ধি দ্রব্যটি প্রস্তুত হয়। কিন্তু অ্যানিলিন্‌ (Aniline) প্রস্তুত কাৰ্য্যেই নাইট্রো বেনজিন প্রধানতঃ আবখ্যক হয়। কুচি কুচি করিয়া কাট-লৌহ ফলক ও হাইড্রোক্লোরিকৃ এসিডের সহিত নাইট্রো বেনজিন্‌ ! মিশাইয়া উত্তমরূপে নাড়িলে aniline তৈরি হয়। অতঃপর জলীয় বাপদ্বারা ইহাকে শোধন করা যায়। নানাবিধ রঞ্জন দ্রব্য প্রস্তুভ করার জন্য বৎসরে বইসরে লক্ষ লক্ষ মণ Aniliu। আজ প্রস্তুত হইতেছে। কিন্তু মাহুষের তৈরী সৰ্ব্বপ্রথম কৃত্রিম রংয়ের আবিষ্কারের একটু ইতিহাস এই প্রসঙ্গে বলা দরকার মনে করি । যে-সময়ের কথা বলিতেছি তখন কুইনিন অতি উচ্চ মূল্যে বিক্ৰী হইত। ঠিক এই সময়ে ১৮৫৬ খৃষ্টাব্দে ডাঃ উইলিয়ম পাকিন নামক অষ্টাদশ-বর্ধ-বয়স্ক একটি বালক কুইনিন আবিষ্কার কার্য্যে নিযুক্ত হয়। একজন অপরাহ্নে সারাদিনের পরিশ্রমে ব্যর্থ-মনোরথ ও নিরুৎসাহ হইয়া, পার্কিন যে-সব ঔষধপত্র লইয়া কাজ করিতেছিলেন তাহার সকলগুলিই একটি পাত্রে মিশাইলেন ও তৎক্ষণাৎ অনিৰ্ব্বচনীয় আনন্দের সহিত দেখিতে পাইলেন যে অতি’ মনোহর উজ্জল রং বিশিষ্ট এক-প্রকার পদার্থ পাত্রের নীচে জমা হইয়াছে। ইহাই স্ববিখ্যাত মভ (mauve) বা । মেজেণ্টা (magenta) রং । এই আবিষ্কারের কথা তথন দিকে দিকে ছড়াইয়ু পড়িল । অতঃপর রাসায়নিকদের অদম্য চেষ্টায় একটি একটি করিয়া হাজাররকমের রং আবিষ্কৃত হইয়াছে ও সে-সব প্রস্তুত করার জন্ত বিরাট ।