পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• ১ম সংখ্যা ] সে ঐশ্ন বিপদজনক রকম পুমে পড়িল, সেই কথাই এখন বলী হইবে । নরহরি আজকাল মেডিক্যাল কলেজে পড়ে। পিতা ঠিক করিলেন পুত্র ডাক্তার হইলে তাহার প্রতিপত্তি সহরে অক্ষুণ্ণ থাকিবে ; সুতরাং পুত্র, ডাক্তার হইবার পক্ষে সকলপ্রকার অনুপযুক্তত থকা সত্বেও, পিতৃআজ্ঞ পালনার্থে মেডিক্যাল কলেজে চলিল। কিন্তু এখানে যেমন একটুকে অtহত ভেকের উপর ছুরি চলাইতে বুরহরির সবিশেষ বেদন বোধ হইত, অপরদিকে তেমনি মহপাঠিনী অনেকগুলি থাকাতে ভেকের সহিত তাঙ্গার সন্ধুইভৃতি দেখাইবার অবসর অত্যধিক ছিল না। সহপাঠিনীদিগের মধ্যে উনেকেই নরহরির নিকট অপারীর ন্যায় কুপসী প্রতীয়মান হইতেন, কেনন ক্ষুদ থাকিলে রন্ধনের দোষত্রুটি সহসা দৃষ্টিগোচর হয় না । নরহরির নিকট প্রেমে পতন একটা নৈতিক প্রয়েছেন, একট। বিশেষ কৰ্ত্তব্যের রূপ ধারণ করিয়াছিল । সুতরাং সে লে সহপাঠিনী স্ববসনার সঙ্গিত ভালবাসায় পড়িবে তাহার আর আশ্চৰ্য্য কি ? কিন্তু সবসন। তাহার সেই গোপন ভালবাসার কারণ হইলেও, সে বিষয়ে তাহার কোনো জ্ঞান ছিল না । শত শত ছেলের মধ্যে যে একজন বিশেষ করিয় তাহারই জন্ত ঢেউ খেলাইয়। টেড়ী কাটে, অভিনব সাজে শীর্ণ দেহ সজ্জিত করে ও ক্লাসের কৰ্ত্তব্য অবহেল। করিয়৷ .তাহারই সৌন্দৰ্য্য উপভোগে তন্ময় হইয় থাকে, তাই তিনি জানিবেন কি করিয় ? শত শত টেড়ী সাজসঙ্গ ও আকুল চাহনির মধ্যে কোনগুলির মূলে তিনি নিজেই রড্রিয়াছেন তাহা না বুঝিলে কি স্থবসনাকে দোযী করা চলে ? নরহরি তfহার নিকটে বসিবে বলিয়া সকল কায্য ফেলিয়, প্রক্সি দেওয়া ভুলিয়া, প্রত্যহ অনেক সময় থাকিতে ক্লাসে যাইতে আরম্ভ করিল ও কখনো তাহার নিকটে আসিতে পারিলে ব্যাকুলনয়নে তাহার দিকে চাহিয় সশব্দে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিত । কিন্তু মৃবসন চেতনাহীনের স্থায় নরহরির সকল চেষ্টা, সকল নীরব আবেদন অগ্রাঙ্ক করিয়া আপনমনে পড়াশুনায় ব্যস্ত থাকিতেন। * এই প্রকারে ছয় মাস কাটিয়া গেল । রঙ্গরির জীবন “জীবন-মরুভূমি” శ్రీ নিরাশার বিষে জর্জরিত হইয়া উঠিল। প্রত্যেক দিন । দিব|-অবসানে সে বিদেশী হারিকেন নিবাইয়া দিয়া প্রদীপ জালিয়। উপন্যাসে যেরূপ বিবরণ আছে, সেইরূপ করিয়া মনোকষ্টে “আহত বৃশ্চিকের ন্যায়” ছট্‌ফট্‌ করিত। শত শত নায়ক তাহার পূৰ্ব্বে যেরূপ ধূলায় পড়িয়া কাদিয়াছে, নরহরিও, সেই বিশাল প্রেমসেবক সংঘেরই একজন বলিয়, নিত্য কখন ধুলায় লুটাইয়া ও কথন প্রচণ্ডরূপে বুক চাপড়াইয়৷ ক্ৰন্দন করিয়া সংঘধৰ্ম্ম পালন করিত। কষ্টে ও আবেগের তাড়নায় তাহার মুখ বিবর্ণ, আকৃতি বিকৃত ও চুল সজারুর কাটার মত খাড়া হইয়। উঠিত। সে কোকিল ডাকিলে কঠোর কৰ্ত্তব্যের খাতিরে সজোরে দীর্ঘনিশ্বাস না ফেলিয়া জল গ্রহণ করিত না। আকাশে মেঘ দেখিলে ভাঙ্গর “উদ্বেল হৃদয়" মুদরের পানে চাহিয়৷ সুবসনীর কট। চোখদুটিকে “কাজল তাগি” বলিয়। মনে পড়াঙ্গ ত । প্রেমের নিত্যকৰ্ম্মপদ্ধতি পালনে তাঙ্গার দিন বেশ কাটিয়া যাইতেছিল কিন্তু একদিন মুহূৰ্বের মোহে ষ্ট্রলিয়। সে একটা নিৰ্ব্বদ্ধিতা করিয়া ফেলিল। সেদিন কলেজের একজায়গায় সিঁড়ি দিয়া নয়হরি নামিয় আসিতেছিল। মনে তাঙ্গর একটা শান্ত নিৰ্ব্বিকার ভাবই বিরাজ করিতেছিল। হঠাৎ দেখিল স্ববসনা সিঁড়ি দিয়া উপরে উঠতেছেন । দেগা মাত্র তাহার মনে পড়িল সেই উপন্যাসটির কথা, যাহার নায়ক সিড়ি দিয়া গড়াইয়৷ নায়িকার পদতলে পড়ার ফলে উভয়ের মিলন অসম্ভব-রকম সহজ হইয়া যায়। নরহরি হঠাৎ কিপ্রকার পাগলের মত হইয় গেল। তাহার মনে হইল, এখনি সে স্ববসনার পদতলে পড়িয়া হয় আত্মবলিদান দিবে, নয় তাহার প্রেমলাভে সক্ষম হইবে । কলেজের একজন ছেলে, যে নিৰ্দ্দোষ আমোদ বলিয়ালজিক পড়িত এবং পরে নরহরির ‘ব্লড প্রেসবৃ’ সম্বন্ধে মত প্রকাশ করিয়াছিল, সেই ছেলেটি, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল । সে বলে ব্লুে সে দেখিল সিড়ির উপর দাড়াইয়। নরহরি হঠাং কিরকম যেন করিতে লাগিল । তাহার মুখখান বিবর্ণ হইয়া গেল এবং চক্ষুন্থটি একটু টেরা হইয়া যেন মাসিকার দোষগুণ পরীক্ষ, আরম্ভ * করিল। কিছুক্ষণ টতুি হঠাৎ নরহরি একেবারে তিন