পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তয় সংখ্যা ] . আত্মত্যাগে দুলালী তাকে বাচিয়ে তুলেছে। দুলালীর পাণ্ডু মুখের দিকে চাইতেই নন্দর চোখ ছাপিয়ে জল এসে পড়ল। দুলালীর চোখেও আজ আনন্দীশ্রী—সে যে তার স্বামীকে বাচিয়ে তুলেছে! অশ্রতে আজ অশ্রু চিনে নিলে, চোথের জলের মাঝখানে আজ তাদের সত্যিকারের শুভ দৃষ্ট হয়ে গেল। দুলালী জানত—নর্দর ওষুধ সে বিনামূল্যেই পেয়ে । এসেছে। কিন্তু ষামিনী-বাৰু যে তার সহানুভূতির দান দুলালীর নামে খরচ-খাতায় জের টেনে টেনেই এসেছেন তা তার ধারণাই ছিল না। নন্দ তখন একটু-আধটু কাজ করবার শক্তি পেয়েছে। দুঃখী মানুষ—বাড়ী বসে থাকৃলে ত আর চলবে না, তাই সকাল-সকাল খেযেই সে কাজে বার স্থ’য়ে গেছে। হঠাৎ দুপুর বেলায় ডাক্তার-বাবুর ঔষধের মূল্যের দাবী এসে পড়ল দুলালীর কাছে । তা এমনই ঘৃণ্য - যে দুলালীর অন্তরাত্মা তাতে সায় দেওয়া দূরে থাক তার মনের মধ্যে একট দারুণ ধিক্কার জেগে উঠল। তাড়াতাড়ি নিজের কুঁড়ে-ঘরের দ্বাররুদ্ধ করে সে একেবাবে মেঝের উপর লুটিয়ে পড়ল—আৰ্ত্তকণ্ঠে বলে’ উঠল—“ভগবান—এও শেষে শুনতে হ’ল!” পূজোর বড় দেরী নেই । নন্দ দূরের হাটে দুলালীর জন্য একথান পছন্দসই শাড়ী কিনতে গেছে । দুলালী পরি বার বলে দিয়েঞ্চে সন্ধ্যর আগেই যেন সে খড়ী ফেরে। দারুণ রৌগ তার সামর্থ্যও আর বড় বেশী ছিল না। স্বতবাং কিরতি' বেলায় মাঝ-পথেই সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল । অস্থথের পর এতখানি পথ হাটায় সে শ্রান্ত হ’য়ে পড়েছিল। যাই হোক দু-পা জোর জোর চলে এসে যখন সে দূর হতেই দেখলে কুটার-মধ্যে মাটির প্রদীপটা তখনও মিটমিটি জলছে—তখন আনন্দে সে শ্ৰান্তির কথা ভূলেই গেল । এত নিকটে সে তবুও যেন বোধ হচ্ছিল বড় দূর । ঐ ! ঐ কুটীরে তার জুলালী তারই অপেক্ষায় প্রদীপ জেলে বসে আছে। —আছে কি ? হঠাৎ নন্দর দু-গণ্ড বয়ে' অশ্রীর উৎস ছুটে গেল—কি এক অজানা আশঙ্কায় তার প্রাণটা দুলালী AA MMA AAAA AAAA AAAA SAAAAAS SAAAMS SSSSSS কিন্তু একে লুড় মানুষ, তার উপর । ף מס\ আঁৎকে উঠ ল দৌড়ে উঠানের মাঝ-খানে এসে ভীতিবিজড়িতকণ্ঠে ডাক দিলে—“দুলালী।" তার ব্যথাং সহাহভূতি দেখিয়ে দিগন্ত হতেও প্রতিধ্বনি উঠল— ‘লালী’ । নীরব অন্ধকার উঠানে দাড়িয়ে সে আর একবার ডাক দিলে—“দুলালী” । , শূন্য আকাশ হতে সেই শব্দ উঠল—“লালী । ঘরের স্তিমিত আলোকটা উজ্জল করে দিয়ে আবার সে ব্যাকুল-ভাবে ডাক দিলে—“ছলু” । সাড়া নেই—শব্দ নেই—শুধু প্রাণহীন পিতল-কাসার বাসনগুলার মধ্য হতে বেজে উঠল তার ব্যথার মুরের ঝঙ্কার । বাইরে এসে আকাশবাতাস পূর্ণ করে তার সব শক্তি এক করে’—বার বার ডাক দিলে—‘দুলালী—দুলালী, কোন উত্তর নেই। শুধু প্রতিধ্বনি তার কাতর আহবান দিকদিগন্তে বয়ে নিয়ে গিয়ে অনন্তের মাঝে ছড়িয়ে দিলে । বৃক্ষের উপর হতে একটা পেচক বার দুই বিকট চীৎকার করে নন্দর মাথার উপর দিয়ে উড়ে গেল । , - দুলালী নেই –নন্দর হৃদয়ভেদী হাহাকার অর্ধস্থগু গ্রামবাসীদের কাছে সংবাদ নিয়ে গেল—দুলালী নেই। দুলে পাড়ার আদর্শ ঘরণী—সদা-শাস্তুশীলা চিবু লাজময়ী —নন্দর জীবন-সঙ্গিনী—জুলালী নেই ?—বিস্ময়কেও যে বিস্মিত ক'রে তুলে ! নিদ্রা ভেঙে গেল। শয্যা ছেড়ে সব ছুটে" এল নন্দর উঠানের মাঝে । বনেঝোপে—বাগানে-বাগানে—-বিলে-পুকুরে—সকলের ঘরে ঘরে খোজ হ’ল—দুলালী কই ? সকলের বিনিদ্র রজনী কেটে গেল শুধু তারই তল্লাসে । কোন খোজই তার মিল্ল না । ভোরের আলোর সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের কারো আর জানতে বাকী রইল না—দুলালী নেই। দুলালী কই ? নন্দর বুক ভেঙ্গে গেছে— থাকে থাকে আৰ্ত্তনাদ ক’রে উঠে—দুলালী কই ? তার ভাঙা ঘরের অধিষ্ঠাত্রী—শেষ জীবনের সম্বল— নয়নের আলো—সে দুলালী কই ? রোগ-শয্যায় কল্যাণময়ী—দুঃখ-কষ্টে মমতাময়ী—জীবনে তার ব্যথার ব্যর্থী—সে দুলালী কই? নন্দ কেবল চোখের জল ফেলে আর খুজে বেড়ায় তার লালীকে আংরি