পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

N)* o পাপরের কড়ি, ভাঙা থামের অংশ বারভূইয়াদের বাংলা থেকে, রাজা প্রতাপাদিত্য রায়ের বাংলা থেকে বর্তমান যুগের আলোয় উকি মারছে। দীঘির যে ইষ্টক-সোপানে সকাল-সন্ধ্যায় তখন অতীতযুগের রাজবধূদের রাঙা পায়ের অলক্তক রাগ ফুটে উঠত এখন সেখানে দিনের বেলায় বড় বড় বাঘের পায়ের থাবার দাগ পড়ে, গোখুরা কেউটে সাপের দল ফণা তুলে বেড়ায়। এখানে কিন্তু বহুদিন থেকে একটা অদ্ভূত ব্যাপার ঘটে থাকে। স্থপুর রাতে গভীর বনভূমি যখন নীরব তয়ে যায়, হিন্তাল হিজল গাছের কালে গুড়িগুলো অন্ধকারে যখন বনের মধ্যে প্রেতের মত দাড়িয়ে থাকে, প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড সন্দ্বীপ চ্যানেলের জোয়ারের ঢেউয়ের আলোকোৎক্ষেপী লোনা জল খাড়ির মুখে জোনাকীর মতন জলতে থাকে, তখন খাল দিয়ে নৌকা বেয়ে যেতে যেতে মোমমধুসংগ্রাহকেরা কতবার শুনেছে অন্ধকার বনের এক গভীর অংশ থেকে কারা যেন আৰ্ত্তস্বরে চীৎকার করছে,— ওগো পথযাত্রীরা, ওগো নৌকাযাত্রীর, আমরা যে এখানে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেলাম, দয়া করে আমাদের তোলো—ওগো আমাদের তোলো । ভয়ে বেশী রাত্রে এপথে কেউ নৌকো বাইতে 5ांग्न नां । শ্ৰী বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় নবশিক্ষা চিকিৎসা-তত্ত্বের ইতিহাস ধার অধ্যয়ন করেছেন তারা বলেন যে, এক-একটা বিশেষ চিকিৎসা-প্রণালীর আবির্ভাব ও প্রভাব কাৰ্য্য-কারণ-পরম্পরায় কিছুদিনের জন্যে তিরোহিত হ’লেও অনেক সময়ে সামান্তমাত্র উন্নত ও পরিবর্তিত আকারে নূতন করে সভ্য-সমাজে গৃহীত হয়ে ” ৰাকে। সময় বিশেষে যুগ ধৰ্ম্মই কোন প্রণালীর আদর বা অবহেলার অন্ততম কারণ বলে’ নির্দেশ করা যেতে পারে। শিক্ষার ইতিহাসেও এরূপ উদাহরণ স্থলভ নয়। সৰ্ব্ববিষয়ে উন্নতি সত্ত্বেও কোন-একটি বিশেষ ক্ষেত্রে একই প্রণালী বারবার ক’রে ফিরে আসছে এ কথা মনে করবার পক্ষে বাধা থাকলেও একথা সত্য যে তা ফিরে জাসে অবশু স্থান ও কালের বিশিষ্টতার প্রভাবকে স্বীকার ক’রে । যুরোপ ও মার্কিনে প্রচলিত বিভিন্ন শিক্ষা-পদ্ধতির আলোচনা করলে দেখা যায় যে, কোনটারই আবির্ভাব আকস্মিক নয় অথবা প্রত্যেকের সঙ্গে প্রত্যেকের কোন যোগ নেই এমন নয়, বরং বিভিন্ন প্রণালীর অন্তর্গত ঐক্যই বর্তমান প্রচলিত প্রণালীগুলির যুগোপযোগিতা ও সার্থকতার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। দেশ-বিদেশে প্রচলিত সমস্ত প্রণালীগুলির সম্যকৃ অনুশীলনে ইহা স্পষ্টই দেখা যায় যে বিভিন্নতা সত্ত্বেও এসকলের মধ্যে বৈষম্য নেই—শিক্ষার উদ্দেশ্য ও গতি একই দিকে। শিক্ষক, ছাত্র ও অধীত বিষয় এই তিনের সম্মিলনে শিক্ষা। এতদিন মানুষের বিশেষ নজর ছিল শিক্ষক ও বিষয়ের দিকে; এবং ছাত্র ও বিষয়ের জুড়ি হাকাতে গিয়ে, শিক্ষক, বহুবার বিপথেই শিক্ষাব রথ চালিয়েছেন, কারণ আগ্রহ-বিড়ম্বনায় ছাত্র পড়েছে পিছনে ও বিষয় এসেছে সামনে। কাজেই বেতের সঙ্গে ছাত্রের পরিচয় হয়েছে যে-পরিমাণে ছাত্র ও বিষয়ের মধ্যে ব্যবধান বেড়েছে, সেই-পরিমাণে, উভয়ের মধ্যে যোগ-সাধনের ধারাবাহিক স্বসঙ্গত কোন চেষ্টাই হয়নি। বর্তমানে এ-ধারা বলেছে, এখন ছাত্র এসেছে সামনে–শিক্ষকের মুখ্য ও বিশেষ দৃষ্টি সে আকর্ষণ করেছে। কিন্তু বিষয়কে বাদ দিলে ত শিক্ষা হয় না, তাই বৰ্ত্তমান শিক্ষণ-পদ্ধতির বিশেষত্ব এই যে ছাত্র ও বিষয়ের ভিতরকার সম্বন্ধটা বিশেষ ক’রেই স্বীকৃত হয়েছে এবং সে মিলন যাতে স্বসঙ্গত ও সার্থক হয় সেই