পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] শাস্ত্রগুলার দিকে এক নূতন চোখে দৃষ্টিপাত করিতে স্বরু করিবে। ভারতের ভূত, ভবিষ্যৎ, বর্তমান সম্বন্ধে যুবক ভারত বহু বুজ রুকি এবং কুসংস্কার বর্জন করিতে শিখিবে । তুলনামূলক সমাজ-বিজ্ঞান-বিদ্যা কিছু কিছু করিয়া ভারত-সন্তানের পেটে পড়িতে থাকিবে । 驗 মর্গ্যান, মার্কস্, বা এসেল্স্ কাহারও মত বা বাণীই বেদবাক্য নয়। সকলের কথাই তথ্যের জোরে কষিয়া দেখা আবশ্যক । কিন্তু ইহাদের রচনায় উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় অদ্ধের সমাজ-চিন্ত পুষ্ট হইয়াছে । এখনো এইগুলার দাম বিজ্ঞানের বাজারে ঢের । এই কারণে ভারত-সন্তানের পক্ষে এইগুলা জানিয়া রাখা দরকার। ১৯২৪ সালের পূৰ্ব্বে এঙ্গেলসের গ্রন্থ ংলায় অনুদিত হয় নাই, ইহা লজ্জার কথা। এই ধরণের আরও অনেক গ্রন্থ এতদিনে বাংলা ভাষায় পাওয়া উচিত ছিল । বিগত অৰ্দ্ধ শতাব্দীতে প্রাচীন সমাজ সম্বন্ধে বহু গবেষণা হইয়াছে। সম্প্রতি কয়েক বৎসর ধরিয়া নিউইয়র্কে এইসকল গবেষণার ফল নানা গ্রন্থে প্রচারিত হইতেছে। হাইজার এবং প্লিনি গডার্ড এই তিন জন লেখকের রচনবালী পাঠ করিলে মর্গ্যানের পরবত্তী কালের সকল সিদ্ধান্ত ইংৰেজিতে পাওয়া যায়। সেইসকলের চুম্বক-প্রকাশ এই ভূমিকায় চলিতে পারে না ।

  • ( মানব-জাতির শৈশব সম্বন্ধে তুলনা-মূলক আলোচনা এঙ্গেলসের গ্রন্থের প্রথম কথা । তুলনাসিদ্ধ ইতিহাসহিসাবে এই রচনা এক উৎকৃষ্ট নিদর্শন । আর-এক তরফ হইতে এই কেতাব স্বধী-মহলের শ্রদ্ধা পাইয়া থাকে। সে ইতিহাসের আর্থিক ব্যাখ্যা ব সভ্যতার আর্থিক ব্যাখ্যার তরফ ।

এই “আর্থিক ব্যাখ্যা” “ভৌতিক” ব্যাখ্যা ইত্যাদি ধরণের “ব্যাখ্যা’টা কি বীজ ? এঙ্গেলসের গ্রন্থ স্বয়ংই এই ব্যাখ্যা-প্রণালীর প্রয়োগ-ক্ষেত্র। কেতাবটা ঘাটিলেই s२ ) কার্ল মাক্স ও ফ্রিডরিশ এঙ্গেলস ১৯২০-২২ রবার্ট লোহিব, আর্থার গোল্ডেন বহুকাল চলিয়াছে । \ව8°ව් ফলেন পরিচয়ুতে । সেই ব্যাখ্যা-প্রণালী প্রচারের উদ্দেশ্যেই এই কেতাব বাংলায় দেথা দিল । ভারতবাসীর পক্ষে “আগিক ব্যাখ্যা” হজম করা কিছু কঠিন। কেননা লেখায়, বস্তৃতায়, পাঠশালায়,বাক্বিতণ্ডায়, কবিতায়, ইতিহাসে, খবরের কাগজে, মায় রাষ্ট্রনৈতিক আন্দোলনের সভায় সভায় ও আমাদের পণ্ডিত এবং জননায়কগণ আমাদিগকে দুই পুরুষ ধরিয়া একটা মাত্র বুধনি শেখাইয়া আসিয়াছেন। সেই বুখ নির মোট কথা এই—“হিন্দু-মুসলমান আমলে নর-নারীরা ইহলোকের ধার ধারিত না । তাহারা পরলোক লইয়াই মসগুল থাকিত । আমাদের পূর্ব-পুরুষগণ ছিলেন পুরামাত্রায় আত্মিক । sে}তক জগৎট। তাহাদের জ্ঞান ও কৰ্ম্মের বহিভূত ছিল। যদিও বা কিছু অন্তর্গত ছিল তাহাও ধৰ্ত্তব্যের মধ্যে নয় ।” ( تد ) প্রাচীন ভারতের লোকগুলা যে মানুষ ছিল, ইহাদেরও যে রক্ত-মাংসের শরীর ছিল, অতএব রক্ত-মাংসের স্বধৰ্ম্মও হিন্দু-মুসলমানদিগকে নিয়ন্ত্রিত করিত— এই কথা বিশ্বাস করা আমাদের উনবিংশ শতাব্দীর পণ্ডিতগণের পক্ষে সম্ভবপর হয় নাই । তাহারা ছিলেন বোধ হয় প্রায় সকলেই ইতিহাসের “আত্মিক ব্যাখ্যার” ধুরন্ধর, অধাত্মবিদ্যার পাড় বিশেষ। সভ্যতার এবং মানবজীবনের একবগগ আত্মিক ব্যাখ্যা পাশ্চাত্য মুল্লুকেও পাশ্চাত্য পণ্ডিতদের বুখনিটাই ভারতীয় সমাজ-সংস্কারক এবং ইতিহাস-লেখক-মহলে প্রচলিত হইয়াছিল । এই একবগ্গা আত্মিক ব্যাখ্যার উপর চাৰুক লাগানো হইয়াছে ১৯১৪ সালে প্রকাশিত মৎপ্রণীত “পজিটিভ ব্যাকগ্রাউণ্ড অব হিন্দু সোসিয়োলজি” অর্থাৎ হিন্দু সমাজ-তত্বের বাস্তব-ভিত্তি-নামক গ্রন্থে ( পানিনি-কাৰ্য্যালয়, এলাহাবাদ ) । এই গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ডের প্রথম ভাগ বাহির হইয়াছে ১৯২১ সালে । ভারতীয় মানুষের ক্ষিধে পায়, ভারতীয় মাহুষ পায়ে ইাটিয়া চলে, ভারতীয় মানুষ জমি-জমা লইয়া মারামারি করে, ভারতীয় মানুষ লড়াই করিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ দিতে চায়, ভারতীয়