পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭(t૨ তার উৎকর্ষ প্রকাশ পায়, হয়ত সে-সমস্ত আলোচনা করতাম কিন্তু জোর করে, সাধন হয় না। ইন্দ্রদেব সুন্দরকে পাঠিয়ে বলে' দিলেন, তপস্তা কোরো না। তাতে প্রাণ বড় শুষ্ক হয়ে যায়। মাঝে মাঝে স্বন্দরের দূত পাঠিয়ে তিনি সে সাধনা বিক্ষিপ্ত করে দেন। ইতিহাস একথার সাক্ষী দিয়েছে। বুদ্ধদেব যখন তপস্ত করেছেন তখন বলেছেন—পেলুম না। কখন পেলেন ? স্বজাত হাতে করে যখন অন্ন দিলেন। সে কি অন্ন, সে কি শেঠের অন্ন ? তার ভিতর ভক্তি ছিল, ঐতি ছিল, সেবা ছিল, সৌন্দৰ্য্য ছিল, সে পায়স-অল্পের ভিতর মাধুৰ্য্য ছিল। তাই যোগীকে দিলেন। ইন্দ্রদেব কি সুজাতাকে পাঠাননি ? তিনি বলেছেন, তোমার শুষ্ক তপস্তা থেকে ব্ৰহ্ম পাবে না, ইড়া পিঙ্গল নাড়ীটিকে পাবে না। তিনি দেখেন প্রেমের, আনন্দের উৎস, সেখান থেকে যখন পাত্ৰ ভরে এনে দেন তখন বুঝব প্রেমের মূল্য কি, সৌন্দৰ্য্য কি, রস কি। সে-দিন তপস্বী তপস্তায় পাস হয়েছেন ধে-দিন বলেছেন অপরিসীম প্রেমে বাধতে পালে আপনার ভিতর ব্ৰহ্মকে পাবে। ('hristএর কাছে মার্থ ও মেরী ছুটি স্ত্রীলোক এসেছিল। মার্থ কাজ-কৰ্ম্মে ব্যস্ত। তার সেবা প্রভৃতি চিল, সে ধর্শ্বের জন্ত ব্যস্ত ছিল। মেরী কিছু করে না, সে (hrist এর পারে তার বহুমূল্য গন্ধ-তেলের পাত্রটি ভেঙে ফেলে দিলে। সবাই বললে —আহা কি লোকসান করলে 1 এর চেয়ে ঢেলে দিলে ভাল ছিল। ওটা আর কোনরকম সৎকর্থে লাগত। (!hrist বললেন, না-ত নয়, তার এই জিনিষের প্রয়োজন নেই। এই যে সাবনা এ অহেতুকী। যখন একজন নারী বিচার না করে' হিসাব না করে প্রয়োজন চিন্তা না করে চেলে ফেলে দিলে। সে বলেছে—আমি জানিনে কি হ’ল, আমি সমস্ত পায়ে ঢেলে দিলাম-এতে কি প্রেমের রূপ দেখতে পেলাম না ? এই ত তপস্ত পুর্ণ হ’ল । একটা অবাস্তুর কথা এতক্ষণ বলেছি। আসল কথা যা বলতে এসেছি—সে হচ্ছে স্কুল মাষ্টারের কথা। ভাবছিলুম ছন্দ প্রভৃতি রচনার কাঠাম ( গঠন ? ) সম্বন্ধে কিছু বল য। ইন্দ্রদেব আমার গলিতে বাণী বাজিয়ে দিলেন। মনে পড়ল আমি স্কুল মাষ্টার নই, সেজন্য আপনাদের কাছে একথা বলতে এলুম। মানুষ তার সমস্ত সৌন্দৰ্য-রচনার ভিতর যখন আপনার ভিতরকার পূর্ণতার রসকে রূপ দিতে চেষ্টা করেছে, তখন সে কি না করেছে ? সে ত নিমন্ত্রণের উত্তর দিয়েছে, না দিলে তার সঙ্গে আীয়তা হবে কি করে ? তিনিই যদি সব দেন, ওঁাকে যদি ফিরিয়ে দিতে না পারি, তবে গরীবের মতোপনয়ে আনন্দ কি ? তিনি আনন্দধামের দূত পাঠিয়ে নিমন্ত্রণ করেছেন, আমাকেও নিমন্ত্রণ করতে হবে-আনন্দের নিমন্ত্রণ করতে হবে। এ রাসযাত্রায় আতিথ্য আমাকে করতে হবে। ষ্ঠাতে আমাতে এক জায়গায় সমকক্ষতা প্রকাশ করতে হবে। স্বৰ্গলোক তিনি পাঠিয়ে দেবেন, আমরা ভোগ করব, তা হবে না, একরূপ স্বৰ্গলোক আমরাও তৈয়ার করব। জ্ঞানে প্রেমে সৌন্দর্য্যে কল্যাণে সেবার আত্মত্যাগে আমরাও স্বৰ্গলোক স্বষ্টি করব । তিনি বৈকুণ্ঠ থেকে এসে সে আনন্দের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন। র্যাহারা গুহার ভিতর এতকাল ছিলেন তাহারা গুহার ভিতরকে চিত্র-বিচিত্র করেছেন, বলেছেনতোমার স্বষ্টি আছে, আমার স্বষ্টি দেখে যাও, ওস্তাদকে ডেকে বলেছেন —তোমার বীণা বাজাও, আমার হাতেও বীণ আছে, শুনে যাও। যিনি আনন্দরূপকে জগতে বিস্তার করেছেন, অমৃতলোকের যিনি কৰ্ত্ত, উাকে গুহার ভিতর নিয়ে এসেছেন। অমরাবতীকে অবজ্ঞা মানুষ করে, মানুষ যখন ধনসম্পদের বড়াই করে তখন তিনি বলেন—অভিপে হত। লঙ্কা, সেখানে তার মনে অবজ্ঞা নেই। যেখানে চিরদিনের স্বষ্টি রয়েছে, যুগযুগাত্ত্বের সকল বিপ্লব অতিক্রম করে যা থাকৃবে সে অমরাবতীকে স্বষ্টি করুবার কাজে যারা লাগেনে উারা নানা-রকম বাণী বাজান। বঁাশীতে রাশীতে কোথায় চলে যাই—একথা আমার প্রবাসী—আষাঢ়, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড নিজের অন্তরের” জানন্দ ও বেদন থেকে আমি আজকে জানালুম। আজ আমার আর কিছু বলবার নেই।* ( পল্লীশ্ৰী, বৈশাখ ১৩৩১ ) শ্ৰী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বৌদ্ধধৰ্ম্ম-প্রচারে বাঙ্গালী আজকাল বাঙ্গালী দেশে বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব বাহির করিতে হইলে প্রত্নতত্ত্ববিদগণের গবেষণার প্রয়োজন হয়। কিন্তু এমন এক সময় ছিল যখন আমাদের এইদেশে বৌদ্ধ ধর্শ্বের শ্রেষ্ঠ পণ্ডিতগণ জন্মগ্রহণ করিয়া বঙ্গভূমিকে পবিত্র করিয়াছিলেন। সেইসকল মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিতগণের পদতলে বসিয়া শত সহস্র ছাত্র শাস্ত্রাদি অধ্যয়ন করিত। র্তাহীদের বিদ্যা ও জীবনের পবিত্রতার খ্যাতি দেশ হইতে দেশান্তরে ব্যাপ্ত হইয় পড়িত। স্বদুর চীন, তিব্বত প্রভৃতি রাজ্য হইতে ধর্শ্ব ও জ্ঞান-পিপাসু ছাত্রগণ তাছাদের নিকট শিক্ষা লাভ করিবার জন্ত আগমন করিত। তাহারা আবার কৃতবিদ্য হইয়া স্বদেশে যাইয়া এইসকল গুরুর যশ কীৰ্ত্তন করিত। তাহ শুনিয়া সেখানকার রাজারা ঐ বিশ্ববিশ্ৰুতকীৰ্ত্তি পণ্ডিতদিগকে নিজ নিজ রাজ্যে লইয়া গিয়া ধৰ্ম্ম সংস্কার ও প্রচার করাইবার জস্ত, উহাদের আহবান করিতে লোক প্রেরণ করিতেন। কোন পণ্ডিত যা বাইতেন, আর কেহ বা এত ব্যস্ত থাকিতেন যে বিদেশগমনের সময় পাইতেন না—তবে উপদেশাদি প্রেরণ করিতেন । সাহেবই হউন আর বাঙ্গালীই হউন, আমাদের দেশের র্যাহারা ইতিহাস রচনা করিয়াছেন, তাহারা কেহই এইসকল পণ্ডিতদের কাহিনী সবিস্তারে বর্ণনা করেন নাই। উহাদের দৃষ্টি কেবলমাত্র রাজনৈতিক ইতিহাসের প্রতিই নিবদ্ধ আছে। বাঙ্গালার (tiltural history বা সভ্যতার ইতিহাস জানিতে হইলে, শিক্ষা ধৰ্ম্ম ও পণ্ডিতমণ্ডলীর বিবরণ সংগ্রহ করা যে কতদূর প্রয়োজন, তাহা তাহারা ভুলিয়া যান। তাই আমরা দেপিতে পাই যে, রাজা শশাঙ্ক সম্বন্ধে যাহারা সম্পূর্ণ এক অধ্যায় লেখেন, তাহারা ঐ নৃপতিরই সমসামরিক, বৌদ্ধ ভারতের তদানীন্তন গুরু বাঙ্গালী শীলভদ্র সম্বন্ধে ছুই-চারি পংক্তি লেখাও স্থান ও সময়ের অপব্যয় মনে করেন। পাল-সাম্রাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাস সম্বন্ধে তিন-চারখানি প্রামাণ্য গ্রন্থ রচিত হইয়াছে : কিন্তু সেই সময়ের মহাপণ্ডিত শাস্ত রক্ষিত ও অতীশ দীপঙ্কর শ্ৰীজ্ঞান সম্বন্ধে দুই তিনটি উৎকৃষ্ট প্রবন্ধও এপর্য্যন্ত রচিত হয় নাই। একমাত্র মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় ব্যতীত অপর কাহারও দৃষ্টি এবিষয়ে এপর্য্যন্ত পতিত হয় নাই। খৃষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দী হইতে আরম্ভ করিয়া ষোড়শ শতাব্দী পৰ্য্যন্ত বাঙ্গালী যে কেবলমাত্র বৌদ্ধধর্মের অনুসরণ করিত তাহী নহে, সে চীন, তিব্বত, নেপাল, সিংহল প্রভৃতি সুদূর দেশে পরোক্ষ বা অপরোক্ষভাবে বৌদ্ধধৰ্ম্ম-প্রচারে সহায়তা করিয়াছে । धुंधैग्न गर्छ लडांकौष्ठ रात्रएन॰ ५नषांछ, बिना, शांखिrठा ठांब्रrठब्र মধ্যে এক শ্রেষ্ঠ স্থান অধিকার করিত। যে-যুগে কর্ণসুবর্ণের বীর নৃপতি শশাঙ্ক বঙ্গের বাহিরেও রাজ্য বিস্তারের প্রয়াস পাইয়াছিলেন, সেই যুগেই বাঙ্গালীর আদি-গৌরব শীলভদ্র জীবিত ছিলেন। শীলতা সমতটের এক ব্রাহ্মণ রাজবংশে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথম বয়সে তিনি দস্তভঙ্গ, দন্তদেব বা দস্তুসেন নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি অল্পবয়সেই

  • স্ত্রীযুক্ত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের বিগত ৩রা মাচ্চ তারিখে সেনেট হলে প্রদত্ত বক্ততা ।