পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vరిసెe প্রবাসী—াষাঢ়, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড শাস্ত্রের নামে চলিতে থাকে। ১৯১৭ খৃঃ হইতে ১০৩০ খৃষ্টাব্দের মধ্যে এ দেশে আলবেরুনী-নামক একজন বিদ্বান মুসলমান আসেন। তিনি সে-সময়ে এদেশে প্রচলিত বিজ্ঞান, দর্শন ইত্যাদি সম্বন্ধে অনেক-কিছুই লিথিয়া গিয়াছেন। তাহা হইতে অনুমান হয়, যে, রসায়ন তখনই ঘোর কুসংস্কার-তিমিরে আচ্ছন্ন হইয়। পড়িয়াছিল । মুসলমান-বিজেতার হস্তে হিন্দুর অন্য অনেক কীৰ্ত্তির সঙ্গে প্রাচীন রসায়ন-শাস্ত্রের প্রামাণিক গ্রন্থাবলী প্রায় সম্পূর্ণ বিনাশ-প্রাপ্ত হয়। আমাদের দেশে এখন পরবর্তী লেখকগণের সঙ্কলিত গ্রন্থাবলী আছে। তাহাতে সঠিক বিবরণ পাওয়া অসম্ভব । কিন্তু যাহ। পাওয়া যায়, তাহাতে অনুমান এই হয়, যে, এদেশে বৌদ্ধ এবং বৌদ্ধ তান্ত্রিক-যুগের কয়েকজন রাসায়নিক ভিন্ন প্রায় অন্ত সকলেই সিদ্ধান্তমূলক বা অম্লমানাত্মক রাসায়নিক যুক্তির অবতারণাই বিশেষভাবে করিয়া গিয়াছেন, ব্যবহারিক বা ফলিত রসায়নের চর্চার ভৈষজ্যগুর বুদ্ধ গুরুত্ব বা সার্থকতা বিশেষ উপলব্ধি করেন নাই কিম্বা করিলেও তাহ ঘোযণা করেন নাই। ভৌতিক বা প্রাকৃতিক ক্রিয়া-প্রক্রিয়ার স্বক্ষভাবে পর্য্যবেক্ষণ বৌদ্ধ রাসায়নিকগণ যতটা করিয়া গিয়াছেন, তৎপরবর্তী রাসায়নিকগণ সেইরূপ না করাই এদেশে রসায়নশাস্ত্রের অবনতির প্রধান কারণ বলিয়া অকুমান হয় । বোধ হয়, বৌদ্ধ ধর্মের এক অঙ্গ জীবের দুঃখ-কষ্টনিবারণ, এই কারণে বৌদ্ধ-যুগে চিকিৎসা-শাস্ত্রের এবং ঔষধ-বিজ্ঞানের বিশেষ উন্নতির দিকে দেশের শ্রেষ্ঠ মনীষিগণের লক্ষ্য ছিল ; এবং যাহাতে উভয় শাস্ত্রের বিকাশ সহজ হয়, সেইজন্ত রাজকীয় সাহায্যে প্রত্যেক মঠ ও বিহারে দাতব্য চিকিৎসালয় এবং হাসপাতাল পরিচালিত হইত। নাগাজুন, মাওবা, রত্নঘোষ, ব্যাদি, যশোধর, নন্দী, সিদ্ধ লক্ষ্মীশ্বর, ব্ৰহ্মজ্যোতি, গহনানন্দনাথ, ভাগ্যদত্তদেব, বৃন্দ, দম্বন, গয়াদাস, মাধব, সাঙ্গধর, চক্রপাণি, ইত্যাদি হিন্দু রসায়নে প্রসিদ্ধ নামাবলীর অধিকাংশই বৌদ্ধ পুরোহিত ও শ্রমণদিগের নাম । যেসকল প্রাচীন ভৌতিক দর্শন ও রসায়নতত্ত্ববিদগণের নাম এখনও আমরা শুনিতে পাই, তাহার মধ্যে এক অতি মহা জ্ঞানী দার্শনিক সিদ্ধপুরুষের নাম, সমতল ভূমিখণ্ডে পৰ্ব্বতশৃঙ্গের ন্যায় অতি উচ্চ স্থান অধিকার করিয়া আছে। স্বদূর অতীতের ধূম ও ধুলি-জাল ভেদ করিয়া ইহার গৌরবের রশ্মি বর্তমানে আসিয়া পড়িতেছে। এই মহাপুরুষের নাম নাগাৰ্জুন। স্বশ্ৰতের বর্তমান বেশ ইহারই কৃত ; অনেক রাসায়নিক ক্রিয়া-প্রক্রিয়া, যথা তিৰ্য্যকৃপাতন, পুটপাক, উৰ্দ্ধপাতন ইত্যাদি ইহারই আবিষ্কার ; এবং পরবর্তী হিন্দু-রসায়নের গতি ইহারই নির্দিষ্ট পথে হয়। কুশানবংশীয় নৃপতি কনিষ্কের রাজত্বকালে ইনি বৌদ্ধ ধর্মের সর্বপ্রধান পুরোহিতের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। প্রবাদ এই, যে, তিনি বিদর্ভ-দেশে এক ব্রাহ্মণ-বংশে জন্মগ্রহণ করেন। কথিত আছে, সস্তানলাভের আশায় তাহার পিতার শত ব্ৰাহ্মণ ভোজন এবং দক্ষিণা দানের ফলস্বরূপে ইহার জন্ম হয়। জন্মের পর দৈবজ্ঞ পণ্ডিতগণ বলেন, ইহার আয়ু সপ্তাহকাল মাত্র। আয়ু-বৃদ্ধির নিমিত্ত শত ভিক্ষুসেবা করায় ইহঁার আয়ু সপ্ত-বৎসর-কালে পরিণত হয়। সপ্ত বৎসর উত্তীর্ণ হইবার সময় ইহার পিতা