পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] কারীর কাজটার গর্হিতত্ব পূর্ণমাত্রায় উপলব্ধি করিতে পারিতেছেন না, তাহা কোন পক্ষই ভাবিয়া দেখিতেছেন না ও বুঝিতে পারিতেছেন না । বিজাতিবিদ্বেষ এবং স্বজাতিবাৎসল্য উভয় পক্ষেরই মানস চক্ষুকে অন্ধ করিয়া ফেলিয়াছে । এরূপ কথা বলায় কোন পক্ষই আমাদের উপর সস্তুষ্ট হইবেন না জাসি ; কিন্তু মানুষকে যে-কোনপ্রকারে খুসি রাখাই সম্পাদকদের মুখ্য বা একমাত্র কৰ্ত্তব্য নহে । সুতরাং হকৃকথা বাধ্য হইয়া বলিতে হয়। মধ্যপ্রদেশে বাঙ্গালী গত ৬ই বৈশাখ রায়পুরে মধ্যপ্রদেশবাসী বঙালীদের সন্মিলনীতে শ্ৰীযুক্ত স্তার বিপিনকৃষ্ণ বস্থ মহাশয়ের যে অভিভাষণ পঠি ও হয়, তাতে তিনি তথাকার অনেক বাঙালীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিয়াছিলেন। বঙ্গের বাf. রে ; বঙ্গালীর কথ। প্রবাসীতেই প্রথম বিশেষ ভাবে નિશિક ફરિં: , શિજી રૂમ, ૭૧ દ્વાહાનો બ્રાષ્ઠિા મમિફ્રિ বৃত্তাপ্ত জানি, গু হইলে বঙ্গের বাহিরে তাহারা কি করিয়াছেন, তাহ জনে আবণ্ঠক । তাহা সৰ্ব্বসাধারণকে জানান প্রবাসীর অথ্যতম উদ্দেশ্য । এই জন্ত বস্থ মহাশয়ের অভিভাষণের কোন কোন অংশ উদ্ধৃত করিতেছি । বস্থ মহাশয় বলেন :– “আজ প্রায় ৫২ বৎসর হইল আমি এদেশে আসিয়াছি । আমি যখন এখানে আসি, তখন আমার নিতান্ত তরুণ বয়স । পৃথিবীর কৰ্ম্মক্ষেত্রে দেহ আমার প্রথম পদার্পণ। আমি জব্বলপুরে প্রথম আসি। তখন সেখানে অনেকগুলি বাঙ্গালী ছিলেন । র্তাহীদের মধ্যে কেহ কেহ আবার এদেশে একরকম চিরস্থায়ী-রূপে বাস করিতেছিলেন । অনেক বাঙ্গালী ছিলেন বটে, কিন্তু তাহীদের মধ্যে সামাজিক বা রাজনৈতিক চর্চা বলিয়৷ কোনরূপ কাজই ছিল না। ব্রাহ্ম সমাজের শাখার মতন একটি সভা ছিল । সেখানে প্রতি রবিবার কতকগুলি বাঙ্গালী মিলিয়া উপাসনা করিতেন । মনে হয় সে-দেশের ২৪টি লোকও যোগ দিতেন ; বহুদিন হইতে জব্বলপুর-বাদী সিংহপরিবারস্থ দ্বারকানাথ সিংহ মহাশয়ের যত্নে এই সভাটি স্থাপিত হয় ও প্রধানত তিনিই উপাসনা করিতেন।" জব্বলপুর সম্বন্ধে তিনি আরও বলেন :– “সেই সময়ে জব্বলপুরে একটি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয় ছিল। জানিলাম সেটি একজন বাঙ্গালীর চেষ্টা ও উদ্যোগে স্থাপিত ও তিনিই তাহার সম্পাদক ও সৰ্ব্বরকমে পৃষ্ঠপোষক। তিনি সেদেশের লোকদের মত বেশভূষা করতেন ও সেদেশের লোকদের ভাষাতেই প্রধানত কথাবার্তা করিতেন। সকলেই উহাকে মান্ত করিতেন ও ভালবাসিতেন। বুধের বিষয় তিনি এখনও জীবিত অgছন। সেদিন পৰ্যন্ত খহন্তস্থাপিত বিবিধ প্রসঙ্গ—মধ্যপ্রদেশে বাঙ্গালী 8) చి বিদ্যালয়টির সম্পাদকের কার্য্য করিয়া আদিতেছিলেন। এখন বোধ হয় বয়সীধিক্য- জনিত দুৰ্ব্বলতার জন্ত অবসর লইয়াছেন । তাহার নাম লী অম্বিকাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। জব্বলপুরে আদিয়া আমি উহারই অতিথি হই । এদেশের লোকেদের সঙ্গে কিরূপে একপ্রাণ হইয়া কাৰ্য্য করিতে হয়, তাংরি নিকট প্রথম শিক্ষা পাহ। "সাগরে তখন অনেকগুলি বাঙ্গালী ছিলেন । এমন কি ঠাহীদের যত্নে স্বামীদের সকলকে একত্রভূত করিবার ও দেশীয় ধৰ্ম্মভাব বঙ্গ, রাখিবার স্বন্দর উপায় vদুর্গোৎসব মহাসমারোহে সম্পাদিত হইত। ইহাতে সেদেশের লোকের সকলে আসিয়া যোগ দিতেন।” নাগপুরের সেকালের বাঙালীদের সম্বন্ধে বস্থ মহাশয় বলেন :– “নাগপুরে যখন আসি, তখন এখানে বাঙ্গালীর সংখ্যা খুব অল্প । যতদূর স্মরণ হয় ৫টি বা ৬টি পরিবার মাত্র ছিলেন । তাহদের মধ্যে তিনজন ডাক্তার। সেই সময় এখানে একটি মেডিক্যাল স্কুল ছিল— অল্পদিন পরে উহা উঠিয়া যায় ও আবার কয়েক বৎসর হইল পুনরায় গঠিত হইয়াছে। সেই মেডিক্যাল-স্কুলে তাহার শিক্ষক ছিলেন। তাহীদের মধ্যে একজনের নাম করিতেছি w যাদবকুষ্ণ ঘোষ । তিনি সেসময় এই সহরের প্রথম চিকিৎসক ছিলেন । বড় বড় সন্ত্রকারী কর্মচারীরা পৰ্য্যন্ত নিজেদের জন্য এমন কি নিজেদের পরিবারের জন্তুও সিবিলসার্জণকে ছাড়িয়া তাহারই চিকিৎসা পছন্দ করিড়েন। তাহাকে এ-দেশবাসী লোকেরাও বিশেষ মান্ত করিতেন ।” অতঃপর বস্ত মহাশয় আরও কয়েকজন বাঙালীর বিষয়ে কিছু বলেন :– “নবীনচন্দ্র বহু একজন এক্সটা আদিষ্ট্যান্ট কমিশনার ছিলেন— রায়পুরে তিনি কয়েক বৎসর কায্য কfরয়tছিলেন । তিfণ পুরাকালের হিন্দু-কলেজের লব্ধপ্রতিষ্ঠ জনৈক ছাত্র। স্তার রিচার্ড টেম্পল উহাকে এই দেশে আনেন । তিনি খুব দক্ষতার সহিত রাজকাৰ্য্য করেন । তাহার প্রতিভার একটি গল্প বলি । তিনি একটি জটিল খুণি-মকদ্দমা করিতেছিলেন । এ কজন বড় দস্তিক সিবিলসার্জন সাক্ষ্য দিতে আসেন। তিনি বড় বড় লম্বী লম্ব বৈজ্ঞানিক পারিভাধিক শব্দ দিয়া সাক্ষ্য দিতে আরস্ত করিলেন । তাহার ধারণা নবীনবাবু তাহীর মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝিবেন না ও তাঁহাকে যেদিকে ইচ্ছা লইয়া যাইবেন । নবীনবাবু নীরবে উiহার এজাহার লইতে লাগিলেন । সিবিল মার্জন মহাশয় সাক্ষ্য দিয়া চলিয়া যাইতেছিলেন, এমন সময়ে নবীনবাবু তাইকে একটু অপেক্ষ করিতে বলিলেন । দুই-একটা কথা জিজ্ঞাসা কবিবেন, এই বলিয়া জেরী স্বারস্ত করিলেন । ১•১৫ মিনিট পরেই সাহেব বুঝিলেন, যে, তিনি একজন অস্ত্রচিকিৎসা শাস্ত্রে বিশেষ বিশারদ লোকের হাতে পড়িয়াছেন । পূৰ্ব্বে যাহা বলিয়ছিলেন অধিকাংশ ভুল স্বীকার করিতে বাধ্য হইলেন ও ক্ষুণ্ণমনে ঘরে ফিরিলেন । লোকেরা দেখিয়া অবাক। নবীনবাবু তেজস্ব পুরুষ ছিলেন। কর্তৃপক্ষের সঠিত সময়ে সময়ে সংঘর্ষণ হইত— কিছুদিন পরে অবসর গ্রহণ করিয়া চলিয়া গেলেন । "তারাধা ও ভূতনাথের নাম আপনাবা অনেকেই জানিয়া থাকিবেন। তাহার এদেশের লোকদের উন্নতি-সাধনকল্পে অনেক কায্য করিয়াছিলেন । তারাদাস বাবু ডিষ্ট্রক্ট কেন্সিলের সভাপতি ছিলেন ও ভূতনাথ বাবু মিউনিসিপ্যালিটির সম্পাদক ছিলেন। উভয়েই দক্ষতার সহিত নিজ নিজ কাৰ্য্য অনেক দিন করেন। উভয়ের মৃত্যু রায়পুবেই হয়। তারাদস বাবুর নাম এখনও গ্রামে গ্রামে नबर হইয়া আছে।”