পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩য় সংখ্যা ] একই ধ্বনি সুচিত হয় না । এই আদর্শ অনুসারে বিচার করিলে বাংলা বা নাগরী বর্ণমালা নিখুত না হইলেও, ইংরেজী বর্ণমালা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ । এই আদর্শের অমুসরণ করিয়া আমরা “স” ও “ছ” এর প্রয়োগ সম্বন্ধে কিছু বলিব । বাংলায় ও সংস্কৃঃত ইংরেজী "এস" এর উচ্চারণ বুঝাইবার নিমিত্ত "স” অক্ষর আছে। স্বতরাং ঐ ধ্বনিটি বুঝাইবার জন্যই আবার “ছ” অক্ষরটি ব্যবহার করা অনাবশ্যক ও অনুচিত । মুসলমান, মোক্সেম, ইস্লাম্‌ ইত্যাদি ঠিক্ ধ্বনি বা উচ্চারণ অনুযায়ী বানান। ইহার জায়গায় মুছলমান, মোছলেম, ইছলাম, ইত্যাদি লিখিলে ভুল হয় । অবশ্য বঙ্গের নানা জায়গায় অনেকে “ছ” কে “স” উচ্চারণ করে বটে। কিন্তু অনেক জায়গায় “পড়া”কে বলে “পরা” ও “তাড়াতাড়ি”কে বলে “তাঙ্গা তারি” ; এবং “রাস্তা”কে বলে “আস্তা” ও “আম”কে বলে “রাম” । কিন্তু এইসব প্রাদেশিক অশুদ্ধ উচ্চারণ কেতাবে কাগজে আমদানী করা উচিত নয়। ইংলণ্ডে ইংরেজী কথার অনেক প্রাদেশিক উচ্চারণ আছে । কিন্তু সেগুলা কেবল নাটকে গল্পে উপন্যাসে কখন কখন ( সব স্থলে নয় ) কথোপকথন উপলক্ষে ব্যবহৃত হয় ৷ এবিষয়ে কাহারও কোন জেদ থাকা উচিত নয়। নতুবা কালক্রমে ছাল ও সাল, ছায়া ও সায়া, ছই ও সঙ্গ, ছাড়া ও সাড়া, ছাত ও সাত, ছাপ ও সাপ, ছরি ও সার, ছোলা ও সোল প্রভূতির মধ্যে অকারণ গোলযোগ উপস্থিত হইবে । ভাড়াটিয়া প্রতিনিধি খবরের কাগজে এই কথা লিখিত হইয়াছে, যে, সি:াজগঞ্জ প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় সম্মিলনে প্রতিনিধির সংখ্যা ধত হইয়াছিল, তাহার খুব বেশী অংশ মৈমনসিং হইতে ভাড়া করিয়া আমদানী করা হইয়াছিল, এবং তাহার দ্বারা স্বরাজ্যদলের মতের পরিপোষক প্রস্তাবসকল পাস করা হইয়াছিল। ইহাং সত্যত অনুসন্ধান করিতে আমরা অসমর্থ। কিন্তু আমরা বলিতে চাই, যে, বিবিধ প্রসঙ্গ—শ্ৰীযুক্ত আশুতোষ চৌধুরী 8२७ এরূপ অসদাচরণের অভিযোগ সত্য বা মিথ্যা যাহাই হউক, ইহার প্রতিকারের চেষ্টা করা উচিত। একটি উপায়, মোট প্রতিনিধির সংখ্যা নির্দেশ করিয়া দেওয়া, এবং লোক-সংখ্যা অনুসারে কোন জেলা ও শহরের কত প্রতিনিধি পাঠাইবার অধিকার আছে, তাহ স্থির করিয়া দেওয়া । অবশ্য এরূপ ব্যবস্থা করিলেও সৰ্ব্বত্র কোন একটা দলের লোক নানা উপায়ে কেবল নিজেদের দলের প্রতিনিধিই পাঠাইবার চেষ্টা করিতে পারে। কিন্তু তাহা হইলেও, প্রধানতঃ অধিবেশন-স্থানের বা তন্নিকটবৰ্ত্তী কোন শহরের লোকদের মতই বাংলা দেশের মত বলিয়া প্রকাশ পাইৰার সম্ভাবনা কিছু কম ट्ध । শ্ৰীযুক্ত আশুতোষ চৌধুরী শ্ৰীযুক্ত স্যার আশুতোষ চৌধুরী রাজসাহী জেলার এক প্রাচীন জমিদার-পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলিকাতা ও কেম্বুিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষালাভ করেন এবং উভয়ত্র খ্যাতি অর্জন করেন। কেন্থি জে শিক্ষালাভ করা ভিন্ন তিনি বিলাতে ব্যারিষ্টারীর জন্যও অধ্যয়নাদি করেন, এবং ব্যারিষ্টার হইয়া দেশে ফিরিয়া আসিয়া কলিকাতা হাইকোটে ব্যবহারাজীবের কার্য্য আরম্ভ করেন । আইনব্যবসায়ে কালক্রমে তাহার খুব পসার হইয়াছিল। তিনি ধখন হাইকোর্টের জঞ্জিয়তী গ্রহণ করেন, তখন তাহাকে মাসিক অনেক হাজার টাকা কম আয়ে তাহা গ্রহণ করিতে হইয়াছিল। হাইকোর্টের অরিজিন্তাল বিভাগে ভারতীয় জঙ্গদের মধ্যে তিনিঙ্গ প্রথমে বিচারপতিত্ব করেন । ১৯২১ সালে তিনি জজিয়তী হইতে অবসর গ্রহণ করেন, এবং আবার ব্যারিষ্টারী আরম্ভ করেন। কিন্তু জঞ্জিয়তী করিবার সময়েই তাহার স্বাস্থ্যভঙ্গ হইয়াছিল। কিছু কাল পূৰ্ব্বে র্তাহার পত্নী শ্ৰীমতী প্রতিভা দেবী মহাশয়ার মৃত্যুতে তাহার স্বাস্থ্য আরও খারাপ হয়। তিনি আর সরিয়া উঠিতে পারেন নাই। গত ৯ই জ্যৈষ্ঠ তাহার কলিকাতাস্থ ভবনে তাহার মৃত্যু হয় ।