পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88२ প্রবাসী—শ্রাবণ, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড কাঙ্গরও মতে তিনি আধুনিক ৰান্দা জেলার রাজাপুর - গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এই রাজাপুরে এখনও তুলসী দাসের ডিট বলিয়া একটি স্থান পরিচিত ; সেইজন্য অনেকের বিশ্বাস রাজাপুরই তাহার জন্মভূমি। কিন্তু তিনি রাজাপুর-বাসকালে অতি দরিদ্র ছিলেন। বড়বড় রাজ-প্রাসাদের চিহ্নই যখন থাকে না, তখন বুঝিতে পারা যায় না যে এক দরিদ্রের কুটীরের চিহ্ন কিরূপে থাকা সম্ভব । আমার বিবেচনায় ঐ ভিটা কাল্পনিক । নিঃসন্দেহে এইমাত্র বলা যাইতে পারে যে, তাহার যৌবনে সস্ত্রীক বাসস্থান কোন বড় নদী (গঙ্গা বা যমুনা )-তীরে কোনও গ্রামে ছিল । তুলসীদাস যে ব্রাহ্মণ ছিলেন, তাহ নিঃসন্দেহ ; কিন্তু কোন শ্রেণীর ব্রাহ্মণ ছিলেন নিঃসন্দেহে বলা যায় না। একস্থানে তিনি স্বয়ং বলিয়াছেন যে, তিনি পরাশরগোত্রীয় দ্বিবেদী। ইহা ছাড়া আর কিছুই নিঃসন্দেহে বলা যায় না। তবে রাজাপুরে বা ঐ অঞ্চলে সরযুপারী ব্রাহ্মণদের বাস দেখিতে পাওয়া যায়, সেইজন্য অনেকে অনুমান করেন যে তিনিও সরযুপারী ছিলেন। কিন্তু তাহার বাস যদি রাজাপুরে না হইয়া অন্য কোন স্থানে হয়, তবে এ অনুমানও ঠিক নহে । জীবনী-লেখকের তাহার পিতা-মাতার নামও লিখিয়াছেন । পিতার নাম আত্মারাম, মাতার নাম কলসী । কিন্তু এ নামগুলি কোনও প্রামাণিক গ্রন্থে পাওয়া যায় না। সম্ভবতঃ কল্পিত। কল্পিত বিবেচন৷ করিবারও যথেষ্ট কারণ আছে। অকৃবর বাদশার বাল্যাবস্থার অভিভাবক বেরাম খার পুত্র নবাব আবদুলরহিম খানখান তুলসীদাসের ভক্ত ও বন্ধু ছিলেন । তিনি স্বয়ং কবি ছিলেন ও কবির আদর করিতে জানিতেন । র্তাহার অসাধারণ দান-সম্বন্ধেও অনেক গল্প শুনিতে পাওয়া যায় (১)। তিনি তুলসীদাসকে ( ১ ) পাস ভাষায় কবিতা লিখিয়া কবির তাহার কাছে যাহ। পারিতোধিক পাইত, তাহার পরিমাণ বেশী হইত। হিন্দী ভাষার কবিরাও বড় কম লাভ করিতেন না । একবার, এক ব্ৰাহ্মণ এক কবিতা পাঠ করিলেন, তাহার তাৎপৰ্য্য এই যে এক চক চকিকে বলিতেছে—“এইবার দিগ্বিজয়ী নবাব স্বমেরু পৰ্ব্বত জয় করিতে शांश्ऊरश्न, ठिनि निन्छब्र अप्रैौ श्tदन ! शर्मिष्ठछे श्रुर्नषग्न किख কখনও কিছু দিতে পারেন নাই বলিয়া দুঃখ করিতেন। ত্যাগী মহাপুরুষ বলিতেন—আমি ভিক্ষুক ব্রাহ্মণ, এক পোয় অল্প হইলেই আমার যথেষ্ট ; আমি তোমার দান গ্রহণ করিয়া কি করিব, কোথায় রাখিব, কেবল চোরের উপদ্রব বাড়িবে বই ত নহে। একবার এক দরিদ্র কন্যাদায়গ্রস্ত ব্রাহ্মণ তুলসীদাসের কাছে সাহায্য ভিক্ষা করিল। তিনি স্বয়ং কপর্দকহীন ; তিনি একখানি কাগজে একপদ কবিতা লিখিয়া ব্রাহ্মণকে দিলেন, বলিলেন, নবাব খান-খানার কাছে লইয়া যাও ; যদি তোমার অদৃষ্টে থাকে, কিছু পাইবে । নবাব ঐ কাগজ দেখিয়া ব্রাহ্মণকে এত ধন দিলেন যে, কন্যাদায় হইতে মুক্ত হইয়া সে চিরজীবন মুখে কাটাইতে পারে ও কবিতার পাদ পূরণ করিয়া তুলসীদাসের কাছে পাঠাইয়া দিলেন। তুলসীদাস লিখিয়াছিলেন “স্বরতিয়, নরতিয়, নাগতিয়, সব চাহত, অস হোয়।” নবাব পদ পূরণ করিলেন “গোদ লিয়ে হুলসী ফিরে, তুলসী সে স্থত হোয় ।” অর্থাৎ “কি দেবতা, কি নর, কি নাগ-স্ত্রীরা সকলেই ইচ্ছা করে এমন হউক ৷” নবাবের উক্তি :– “হুলসী কোলে করিয়া ঘুরিয়া বেড়ায় ( ও ইচ্ছা করে ) তুলসীর মত পুত্র হউক।” এই পদ হইতে কেহ কেহ অনুমান করেন যে তুলসীর মাতার নাম হুলসী ছিল। কিন্তু ঐ পদের আর-এক সহজ অর্থ সম্ভব। অর্থাৎ “কোলে করিয়া উল্লাসিত হইয়া বেড়ায় ( ও ইচ্ছা করে ) তুলসীর মত পুত্র হউক ৷” “হুলসী” শব্দ এখনও যুক্তপ্রদেশে প্রচলিত, ও “উল্লাসিত”র অপভ্রংশ। আমার বিবেচনায় এখানে এই অর্থই সমীচীন। “হুলসী” তুলসীর মাতার নাম ধরিতে গেলে কষ্ট-কল্পনা করিতে নবাব এমন দাতা যে একদিনেই তাহ দান করিয়া ফেলিবেন, তাহ হইলে সুর্ধ্য আর অস্ত যাইতে স্থান পাইবে না। অতএব রাত্রি হইবে না, আমাদের আর বিরহ-কষ্ট সহ করিতে হইবে না।” এই কবিতার নুতন কবিকল্পনা শুনিয়া নবাব কবির বয়স জিজ্ঞাসা করিয়া জানিলেন, ৩৫ বৎসর। তিনি কোষাধ্যক্ষকে আজ্ঞা করিলেন, পণ্ডিতকে আজীবন পাঁচ টাকা প্রাত্যহিক দাও। যুক্তপ্রদেশে পূর্ণায়ু ১২• ( বিংশোত্তর দশা মতে ) বৎসর ধরা হয় । সেই হিসাবে জন্মপত্রিকা দেখিয়া ১২• বৎসর পূর্ণ হইতে যত দিন বাকী আছে তাহার ৫\ প্রাত্যহিক হিসাবে টাকা দিলেন। পাঠক একবার হিসাব করিয়া দেখিবেন একটা কবিতার মূল্য কত হইল।