পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ፃ8 দূরে সিন্ধ নদীর জল প্রপাত দৃষ্টিগোচর হয় । এই জল প্রপাতের বিষয় কবি ভবভূতি নিজের নাটকে বর্ণনা করিয়াছেন । ' ' পবায়ার কিছু নিম্নে দুই মাইল দূরে মহুয়র ( মধুমতী ) সিন্ধের সহিত আবদ্ধ হইয়াছে। ইহার ঘে-স্থানে আলিঙ্গন-পাশে বদ্ধ হইয়াছে ঠিক সেঙ্গ সঙ্গমের উপর একটি শিবলিঙ্গ আছে যাহার উল্লেখ কবি সুবর্ণবিন্দু নামে নিজের নাটকে করিয়াছেন । সিন্ধু ও পাৰ্ব্বতী নদীসঙ্গম-পদ্মাবতী মালতী-মাধবের বর্ণনার সহিত দেখিতে গেলে পবায়াকে পদ্মাবতীর অপভ্রংশ বলিতে পারা যায়। ভবভূতির বর্ণনা ও বৰ্ত্তমান পবায়ার প্রাকৃতিক দৃপ্ত এই দুইয়ের শোভায় এতদূর সামঞ্জস্য আছে যে নিঃসন্দেহে আমরা পবায়াকে পূৰ্ব্বকালের মহানগরী পদ্মাবতী বলিতে পারি। উইলসন ও কানিংহাম্ সাহেব যে-সব স্থানের বর্ণনা দিয়াছেন ও ধেসব জায়গ| তাহার পদ্মাবতী বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন—সেসব স্থানের প্রাকৃতিক দৃষ্ঠ-সম্পদে শু পবায়া-পল্লীতে ঢের তফাং । পবায়া গ্রামের গ্রামবাসীদিগের মুখে শুনিতে পাহ, তাঙ্গার বংশপরম্পরা হইতে শুনিয়া আসিতেছেন, অতি প্রবাসী – শ্রাবণ, ১৩৩১ { ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড প্রাচীনকালে তাহাদের এই ক্ষুদ্র গ্রাম একটি বিশাল মহানগরী ছিল। রাজাদিগের নামের মধ্যে ধুধুপাল ও পুণ্যপালের নাম পল্লীবাসীদিগের মুখে শুনিতে পাওয়া যায়। তাহার বলে ইহারাই এ-স্থানের প্রতাপশালী চক্রবর্তী রাজা ছিলেন। বহুদিন অবধি ইহা নাগবংশীয় রাজাদিগের লীলাক্ষেত্র ছিল, কিন্তু শেষে কিছু দিনের জন্য পরমার-বংশ র্তাহাদিগের কীৰ্ত্তি লোপ করিয়াছিলেন। এই পরমারবংশীয় রাজাদিগের মধ্যে উপরে লিখিত দুইজনের নাম পাওয়া যায়। গোয়ালিয়র দুর্গও বহুদিন অবধি এই পরমার-বংশীয় রাজাদিগের অধীনে ছিল । রাজা পুণ্যপাল এইস্থানে একটি দুর্গ নিৰ্ম্মাণ করান ও নদী-সঙ্গমের উপর স্বদৃপ্ত ঘাট বাধাইয়া দেন। ইহা এখনও বৰ্ত্তমান । পবায়ু পল্লীতে যাইলে দেখিতে পাওয়া যায়—উন্মুক্ত নীলাম্বরতলে, শ্যামদুৰ্ব্বাদলে আচ্ছাদিত কত শত উচ্চ অট্টালিকার স্তুপীকৃত আবর্জনা পড়িয়া পুরাতন গৌরবের পরিচয় দেওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করিতেছে । পূৰ্ব্বে চতুৰ্দ্দিকু হইতে নদী আসিয়া নিজের স্নেহালিঙ্গনে প্রাচীন পদ্মাবতীকে বেষ্টিত করিয়া রাখিয়াছিল—নিজেদের স্নিগ্ধ-ধারায় নগরের সৌন্দর্য্যের বৃদ্ধি করিয়াছিল। প্রত্নতত্ত্ববিৎ গাদে সাহেব যখন পবায়া আবিষ্কার করেন, তখন সেই স্থানের ভগ্ন বিশাল ভবন-সমূহ হইতে তিনি অনুমান করিয়াছিলেন—কোন সময়ে ইহা একটি বড় নগর ছিল । তিনি খনন করিয়া ও গ্রামবাসীদিগের নিকট হইতে যতগুলি প্রাচীন মুদ্র পাইয়াছেন, সবগুলিই নাগবংশীয় রাজাদিগের। প্রাচীন মূৰ্ত্তি যতগুলি পাওয়া গিয়াছে, তাহা হইতে স্পষ্ট জানিতে পারা যায় ঐ স্থানটিই পদ্মাবতী । অতএব ইহাতে কোন সন্দেহ নাই যে, এইখানে কখন না কখন প্রবলপ্রতাপশালী এক রাজ্য প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছিল ; কিন্তু তাহা অল্পকালের মধ্যেই ধ্বংসদশায় নিপতিত হইয়াছে ।