পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] · বাংলার বিভক্তি ও কারক 8Ե-ծ নরে বা নরেতে ; ‘কেবল বহুবচন’ বিভক্তি (১) নরেরা, (২) নরদের বা নরদিগের, (৩) নরদের বা নরদিগকে । ইহার মধ্যে 'নরেরা’ নির’-এর ‘কেবল বহুবচন’রূপ এবং নরদের বা নরদিগের’ ও ‘নরদের বা নরদিগকে? যথাক্রমে "নরের’ ও ‘নরকে’এর কেবল বহুবচন রূপ । অতএব বাংলা ভাষার প্রকৃতি-অনুসারে “নর” শব্দের নিম্নলিখিত প্রকার রূপ হওয়া উচিত । সাধারণ কেবল বহুবচন ১ম বিভক্তি নর নরেরা ২য় ” নবের মরদের (নরদিগের) ৩য় ” নরকে নরদের (নরদিগকে) s ... " নরে (নরেতে) ৪র্থ বিভক্তির কেবল বহুবচন’ রূপ নাই । তার পর কারক। সংস্কৃতে ছয়টি কারক আছে, স্থতরাং বালাতেও ছয়টি কারক পাকিতেই হুইবে, ইহাই শুইতেছে আমাদের ব্যাকরণকারদের যুক্তি। এখন দেখা যাক কারক পদার্থটা কি । ‘ক্রিয়ান্বয়ি কীরকম ক্রিয়ানিমিত্তত্বং কীরকম্ অর্থাং ধাঙ্গ ক্রিয়ার নিমিত্ত অথবা বে পদের সহিত ক্রিয়ার অন্বয় হয় তাহাই কারক। |ষ্ট হইতেছে সংস্কৃত কারকের সংজ্ঞা । এখন প্রশ্ন হইতে পারে যে বিশেষণ বা অব্যয়ের সহিত ৪ ত ক্রিয়ার অন্বয় হয়, তাহাদিগকে কারক বলিব না কেন ? ইহার উত্তরে সংস্কৃত ব্যাকরণকারেরা বলেন যে, যে নাম শব্দগুলি বিভক্তিযোগে সাক্ষাৎভাবে ক্রিয়ার সঙ্গে অম্বিত হয়, তাহাদিগকেই কারক বলা যায় । তাহ হইলে বুঝ গেল যে, কোন শব্দ ক্রিয়ার সহিত অন্বিত হইলেই কারক হইবে না, কারক হইতে হইলে শব্দটি (১) নাম বা সৰ্ব্বনাম শব্দ হওয়া চাই, (২) বিভক্তি-যুক্ত হওয়া চাই, ও (৩) সাক্ষাৎভাবে ক্রিয়ার সহিত অন্বিত হওয়া চাই, অর্থাৎ অন্য কোন শব্দের সাহায্যে ক্রিয়ার সহিত সম্বন্ধ প্রকাশ করিলে চলিবে না । এইরূপে কারকের সংজ্ঞা নির্দেশ করিয়া তাহারা দেখিতে লাগিলেন ক্রিয়ার সহিত শব্দের কি কি অর্থে অন্বয় হইতে পারে। ক্রিয়া আপনাআপনি হয় না, তাহার একজন কৰ্ত্ত থাকে, ক্রিয়ার ফল কৰ্ত্তা ছাড়াও অপরকে আশ্রয় করে, ক্রিয়া সম্পন্ন করিবার ۹ سمس-ډوي 5’ දී. জন্য কৰ্ত্তাকে অপরের সাহায্য লইতে হয়, ক্রিয়াটি বিশেষ কোন দেশে বা কালে হইতে পারে—অথবা এক দেশ হইতে অন্যত্র অথবা কোন দেশের অভিমুখে হইতে পারে ইত্যাদি দেখিয় বিভক্তি ও অর্থ-অনুসারে কারককে কৰ্ত্ত, কৰ্ম্ম, করণ, সম্প্রদাম, অপাদান ও অধিকরণে বিভক্ত করিলেন । যদি এমন হইত যে এক-এক অর্থে একএকটি মাত্র বিভক্তি হইত এবং সেই বিভক্তি হইলে সেই কারকই বুঝাইত তাহা হইলে আব-কোন গোলযোগ থাকিত না । কিন্তু ব্যাকরণকারের অনেক আগে লোকের মুখে মুখে ও কলমে কলমে ভাষ| নানারূপ বিচিত্র ভঙ্গী পাইয়া আসিয়াছে সুতরাং এক বিভক্তিতে দুই-তিন কারক এবং এক কারকে দুই তিন বিভক্তি কল্পনা করিতে হইল। আবার অনেক শব্দ নানা অব্যয়যোগে ক্রিয়ার সহিত অম্বিত হইয়। কারকের অর্থ প্রকাশ করিতেছে অথচ তাহাদিগকে কারক বলা চলে না, অকৰ্ম্মক ধাতুর অধিকরণ কৰ্ম্মের বিভক্তি গ্রহণ করিতেছে তাহাকে অধিকরণও বলা চলে না, প্রভৃতি অনেক সমস্তার সমাধান তাহাদিগকে করিতে হইল । সে-স্থলে অকৰ্ম্মক ধাতুকে সকৰ্ম্মক বলিয়া এবং ভিন্ন ভিন্ন অব্যয়যোগে ভিন্ন-ভিন্ন বিভক্তি নির্দেশ করিয়া অথচ অন্য পদের সঙ্গিত তাঙ্গাদের কি সম্বন্ধ সে-বিষয়ে নীরব থাকিয়া সেগুলি একরকম করিয়া সারিয়া দিলেন । তাহারা লক্ষ্য করিলেন যে, যদি স্বত্বত্যাগপূর্বক দান করা যায় তাঙ্গ হইলে দানার্থক ধাতুর যাহাকে গৌণ কৰ্ম্ম বলা যাইত তাহার উত্তর চতুর্থ বিভক্তি হয় । সেখানে তাহারা “গৌণকৰ্ম্মে চতুর্থ বিভক্তি হয়" একথা না বলিয়া চতুর্থ বিভক্তিযুক্ত পদটিকে সম্প্রদান কারক বলিয়া অভিহিত করিলেন । আমরা উপরে দেখিয়াছি যে, শব্দের বিভক্তি ও বিভক্তি অর্থ মিশিয়া কারক হইয়াছে, কেবল বিভক্তি বা কেব অর্থের দ্বারা কারক হইতে পারে না। তাহা যদি হইং তাহা হইলে অনেক ক্রিয়াবিশেষণকে বা অব্যয়কেও কার্য বলা যাইতে পারিত। সেইজন্তই "ব্রাহ্মণায় ধনং দদাতি’:ে “ব্রাহ্মণয়” সম্প্রদান এবং “রজকং বস্ত্ৰং দদাতি’:ে রজকং কৰ্ম্ম। সেইজন্য "ভৃত্যায় কুধ্যতি’তে “ভূত্যায়