পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা] বিস্তার করিতেছে। কিন্তু হৃদয়ের নিভৃততম গুহায় গভীর যে গভীরতরের সন্ধানে নিরন্তর ডাকিয়া ডাকিয়া ফিরিতেছে তাহা কি আরও সত্যতর আহবান নয় ? এই দেহের ক্ষুধা-তৃষ্ণ যাহা আমাদিগকে কাতর করিয়া দিতেছে ইহা ব্যতীত মানব-মনে অন্য ক্ষুধাও আছে। দিগন্ত-বিস্তৃত নীলাকাশের গুরু গম্ভীর সত্তা আমাদিগকে উদ্বেলিত করে এবং আমরা দেহের ক্ষুধা-তৃষ্ণ ভুলিয়া তাহাতে মগ্ন হই । হিমালয়ের তুষার-শুভ্র মূৰ্বি আমাদিগকে কি এক অদৃষ্ঠ বিরাট অস্তিত্বের আভাস দান করে । ইতিহাসের বিচিত্র বিধানের মধ্যে আমরা কোন-এক অপূৰ্ব্ব অঙ্গুলি-নির্দেশ দেখিয়া অবাক হই । প্রেমের জন্য এই দেহ—এই রক্তমাংসকেও মানুষ বর্জন করিতে দ্বিধা বোধ করে না ! মহুত্বের নিকট সকলে অবনত-মস্তক হয় । এই যে সকলের মধ্যে অতীন্দ্রিয় সত্তা ইহার স্পর্শ যে প্রাণ পায় সে সকল ভোগ-মুখ বিসর্জন দিয়া তাহাকে হৃদয়ে উপলব্ধি করিবার জন্য ব্যাকুল হয় । আজকাল দেপিতে পাই জীবনের সঙ্গে অার্টের যে নিগুঢ় যোগ থাকা উচিত ছিল তাহা শিথিল হইয়৷ ঘাই তেছে। সত্য আর্ট ও সেইজন্য বিরল হইয়াছে। আর্ট, জীবনের সঙ্গে গভীর যোগ হারাইয়া দিন-দিন নীরস, শুষ্ক, অর্থহীন হইয়া পড়িতেছে। রং ফলান’র বাড়াবাড়ি আর্ট নয়। আপাত-মধুর স্থষ্টি আর্ট নয়। সত্য আর্ট চিরকালের বস্তু। আর্ট কথাটি আজকাল বাঙ্গালায় বহুল প্রচলিত হইলেও ইহার যে বিলাতী গন্ধ—ইহার চারিপাশে যে বহু শতাব্দীর দ্বন্দ্ব জমিয়া উঠিয়াছিল—ইহার যে জন্ম-কথা—তাহা ইহা এখনও ছাড়িতে পারে নাই । তাই প্রথমেই আমাদের আর্টের সঙ্গে প্রকৃতির যে বিরোধ তাহাই মনে পড়ে। আর্ট, প্রকৃতি হইতে বিভিন্ন। যাহা আর্ট তাহ প্রাকৃতিক নহে। ফুলটি বনে ফুটিয়া আছে—ইহা আর্ট, নহে। কিন্তু চিত্রকর যখন সেই ফুলটি নানা বর্ণের সমাবেশে তাহার পটের উপর ফুটাইয়৷ তোলেন তখন তাহা আর্ট হয়। শিশুর সরল হাস্ত আর্ট নহে—ম যে সস্তানকে স্তন্য দান করেন তাহা আর্ট নহে। কিন্তু চিত্রকর যখন শিশুর সেই সরল হাসিটুকু তাহার তুলির দ্বারা চিরস্থায়ী করিয়া দেন তখন তাহ আর্ট— আর্টের আদর্শ 8b-& তখন সেই হাসিটুকু কতকালের সম্পত্তি হইয়া থাকে। তাই ম্যাডোনার মূৰ্ত্তি আর্ট। এই কারণেই চরিত্রগত মধুরতা, স্বাভাবিক বাগ্মিতা, ব্যবহারিক জীবনে মিষ্টতী— আর্ট নহে, যদিও এইগুলি দ্বারা জীবনের সৌন্দৰ্য্য প্রকাশিত হয় । প্রশ্ন হইতে পারে তবে আর্ট কি ? আটকে সংজ্ঞায় আবদ্ধ করিতে কেহ কেহ ঘোর আপত্তি করিয়াছেন । তাহারা বলেন–জীবনকে কি সংজ্ঞার দ্বার। বোঝান যায় ? তাহীদের আপত্তির কারণ বোধ হয় আর্ট কে স্বকুমার কলাব (Fine Arts) সঙ্গে সমার্থক করার দরুন । কিন্তু শুধু আট কে Fine Artsলর সমান করিয়া লইলে চলিবে না। যদিট অনেক সময়ে এই অর্থেই শুধু এই পদ ব্যবহৃত হয়। বাহা স্বকুমার কলা হইবার উপযুক্ত নতে এমন অনেক কাৰ্য্যও আর্ট -যেমন কৃষি, ব্যবসায়। কোন-একটি জ্ঞাত উদ্দেশ্য লইয়া মানুষ যখন স্বষ্টি করে তখন সে আর্টের জন্ম দেয় । সে তাহার পথ সম্বন্ধে সচেতন, তাহার ফলাফলও সে বোঝে । উদ্দেশ্বা-বিহীন কাৰ্য্য আর্ট হইতে পারে না । স্বপ্রসিদ্ধ দার্শনিক জন ষ্টয়ার্ট, মিল <footo– “The art proposes to itself an tond to ho attained” woïîs oftěx &qx5fò উদ্দেশ্য আছে । আর্ট উদ্যে-যুক্ত কি উদেশ্ব-বিহীন এই লইয়৷ বহু মত দেখিতে পাওয়া যায় । যাহারা বলেন যে, ইঙ্গ উদ্বেত-বিহীন, তাহারা সকলেই শুধু ললিত কলার কথা ভাবেন। আর যাহারা আর্ট কে উদ্দেশ্য-যুক্ত বলেন তাহারা সকলপ্রকার আর্টের কথা ভাবেন । কৃষি বাণিজ্য, গৃহনিৰ্ম্মাণ প্রভৃতি ব্যবহারিক জীবনের আর্ট গুলির কথা তাহীদের মনে স্পষ্টভাবে বর্তমান থাকে ললিত কলা ও সৰ্ব্বপ্রকারের শিল্পকে পাশাপাশি রাখিয় দেখিলে অত বিরোধের সম্ভাবনা হইত না । কিন্তু তা বলিয়া বলা হইতেছে না যে ললিত কলা উদ্দেশ্যহীন ললিত কলার সম্বন্ধেও টলষ্টয় বলিয়াছেন যে, আর্ট মানুষে এক-প্রকার কার্য্য । মানুষ যখন পূর্ণ জাগ্রতভাে কতকগুলি বাহ চিহ্নের দ্বারা তাহার হৃদয়ের ভ অন্যের কাছে প্রকাশ করে তখন তাহার,উদ্দেশ্য থাকে ে