পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] ১৯১২ খৃষ্টাব্দে কামরূপের প্রসিদ্ধ তীর্থস্থান কামাখ্যাভূমিতে উত্তরবঙ্গ সাহিত্য-সম্মিলনীর পঞ্চম অধিবেশন হয়। সেই অবধি বঙ্গীয় ভাষাতত্ত্ব, পুরাতত্ত্ব ও সমাজতত্ত্ব সম্পৰ্কীয় গবেষণাতে আসাম প্রধান উপকরণাবলী জাগাইতেছে। সাহিত্যের এই সমুখান-যুগে বঙ্গীয় সাহিত্য-সমাজে “আসামের আবিষ্কার” ব্যাপারট। ইতিহাসতত্ত্বজ্ঞ ব্যক্তিগণ উল্লাসের সহিত আলোচনা করিবেন। কিন্তু এখনও বহু বিষয়ে বঙ্গীয় সমাজ আসাম-সম্বন্ধে কিছুই অবগত নহেন, বলিতে হইবে । আসামে বুটিশআধিপত্য স্থাপিত হওয়ার পূর্বে এখানে কাঙ্গর রাজত্ব শাসন-প্রণালী কি-রকম ছিল এবং তদানীন্তন অসমীয়া সমাজই বা কিপ্রকার ছিল, সেবিষয়ে অনেকের সুস্পষ্ট ধারণা নাই বলিলেও অতুক্তি হয় না ।* বর্তমান ক্ষুদ্র প্রবন্ধে আমরা সে-বিষয়ে যৎকিঞ্চিৎ করিতেন, তাহাদের আলোচনা করিতে চেষ্টা করিব। খৃষ্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে হ্যামদেশীয় টাইজাতি আসামে আসিয়া বিজয়-পতাকা রোপণ করেন । বেদাধ্যায়ী কামরূপনিবাসী তাহীদের সঙ্গে কোনমতেই অঁাটিয়া র্তাহীদের দুর্দান্ত অনার্য্য-শক্তির নিকটে শাস্তিপ্রিয় আৰ্য্যশক্তির পরাজয় হইল। আর্যায়। এই নৃতন আক্রমণকারীদিগের শৌর্য্য-বীৰ্য্য অতুলনীয় মনে করিয়া তা হাদিগকে “অসম’’ বলিতে লাগিলেন । সেই শব্দ অনার্য্য টাই-জাতির সস্তানের মুখে পড়িয়া ‘অহম’ ইহা হইতেই আসাম নামের ইহার প্রচার মুসলমান-সংঘর্ষণের সময় তাহারা অনার্যাজাতীয় ছিলেন । শাস্তু উঠিতে পারিলেন না। রূপে পরিণত হইল । উৎপত্তি এবং হইতেই আরব্ধ হয়।*

  • বর্ধমান প্রবন্ধকারের অসমীয়া ভাষায় রচিত “আহোমর দিন”

নামক গ্রন্থে এবিষয়ে সম্যক্ আলোচনা হইয়াছে। + ইহাই সৰ্ব্ব-সাধাবণের ধারণী । বলিয়। পরিচিত হন। আসামে আহোম-রাজত্ব কিন্তু আমার বিশ্বাস, "অ-সোম” শব্দ হইতে এই অসম বা আহোম শব্দের উৎপত্তি হইয়াছে । বিজয়ী টাইজাতীয় বীরগণ কামরূপের যে অংশে আধিপত্য স্থাপন করেন, তাহাকে সোঁমারপীঠ বলা হুইত, এবং সেই খণ্ডে সোম নামক এক জাতি বাস করার প্রমাণ পাওয়া যায়, স্বতরাং এই নুতন টাই-জাতীয় সন্তানগণ অ সোম ( অর্থাৎ সোম জাতির গণ্ডীভূত নহেন ) বলিয়া 8సి(t এই আহোম-বংশীয় প্রথম নৃপতি স্বকাফা ১২২ খুষ্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন। তাহার পে ৩৯ জন ভূপতি রাজত্ব করেন । শেষ রাজা যোগেশ্ব সিংহের সময়ে আসাম প্রদেশ ব্ৰহ্ম-দেশীয় সৈন কত্ত্বক উপদ্রুত হওয়ার কালে ব্রহ্মরাজার সঙ্গে ইয়াণ্ডা সন্ধিস্থত্রে আসাম-রাজ্য বৃটিশের হস্তগত হয়। প্রায় ছয় শত বৎসর কাল রাজা মুকাফার বংশধরে বিপুল বিক্রমের সহিত আসামে রাজত্ব করেন। খৃষ্ট চতুর্দশ শতাব্দী হইতে আসাম-অধিকারের জন্য মুসলমা বাদশাহগণের প্রবল আকাজা হয়। চতুৰ্দ্ধশব মুসলমানেরা আসাম আক্রমণ করেন, কিন্তু একবার মুসলমান সেনা-নায়কগণ আসাম অধিকার করিতে পা নাই। আওরঙ্গজেবের সময় সম্রাটের প্রিয় পাত্র মীরজ নামে সেনাপতি বিস্তর সৈন্য লইয়া আসাম জয় করিব জন্য এই দেশ আক্রমণ করিতে উদ্যত হন । কিন্তু তাহ শিক্ষিত সৈন্যেরাও অসমীয়া সেনার যুদ্ধ-কৌশলের সম্মু বেশীক্ষণ দাড়াইতে সমর্থ হয় নাই। আসামের উন্ন ংশের মহিলারাও বিপুল-বিক্রমে যুদ্ধক্ষেত্রে অবর্ত হইতেন । র্তাহাদের পরাক্রম-কাহিনী শুধু কল্পনা-স্ব অতিরঞ্জিত ইতিবৃত্ত নহে। হস্তলিখিত আসাম-ইতিঃ বা বুরঞ্জীর পাতায় পাতায় তাহার নিদর্শন পাওয়া যা আসামী সৈন্যেরা যুদ্ধেও অতিশয় দক্ষত প্রদ করিয়াছেন । বৰ্ত্তমান গৌহাটীর নিকটে ব্ৰহ্মপুত্রতটf পাণ্ডষ্টেশনের সমীপস্থ শরাইঘাট নামক স্থানে নৌযুদ্ধ হয়, তাহাতে মুসলমান সৈন্যেরা পৃষ্ঠ-ভঙ্গ দি चाँ१] श्ध्न ! খৃষ্টীয় সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে আহোম-রা অন্তবিপ্লব উপস্থিত হয় । চুলিকফ নামে এক অদূব যুবক সিংহাসনারূঢ় হইয়া প্রতিদ্বন্দ্বী রাজপুরুষদের ক্ষত বা নিষ্ঠত করিতে লাগিলেন, তন্মধ্যে গদাপাণি না জনৈক পরাক্রমশালী রাজকুমারের উপর তাহার বিদ্বে দৃষ্টি বিশেষভাবে পতিত হয়। গদাপাণি র্তাহার প গুণবতী ভাৰ্য্যা জয়মতী এবং দেবকুমারসদৃশ কুমারদ্ধ ছাড়িয়া নিরুদ্ধেশ ইষ্টলেন । রাজার দূতেবা গদাপা সম্বন্ধে সংবাদ ন! পাইয়া শহরে পত্নীকে বন্দী করিয়া র