পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১ম সংখ্যা ] স্বরেশ্বর তেমনি স্মিতমুখে বলিল, “আপত্তি শুধু ত আমারই নয় ; অন্যলোকেরও আপত্তি থাকৃতে পারে ত ?” সজনীকান্ত ব্যগ্রভাবে কহিল, “তা যদি বল ত আমার খুব বিশ্বাস তুমি গেলে কেউ আপত্তি করবে না।. স্থমিত্র "ত বরং খুলীই হবে।” - সজনীকান্তের কথা শুনিয়া কুরেশ্বর ধীরে ধীরে মাথা নাড়িয়া বলিল, “আমাকে ক্ষমা করবেন সজনীবাবু, আপনি তা হলে সুমিত্রাকে ঠিক বোঝেন না। আমি গেলে তিনি -খুলী হবেন না ; আর তা যদি হন তা হ’লে আমি তাতে দুঃখিতই হব !” .'সজনীকান্ত বিমূঢ়ভাবে ক্ষণকাল সুরেশ্বরের দিকে চাহিয়া থাকিয়া বলিল, “আমাকেও তুমি ক্ষমা কোরে স্তরেপুর, শুধু সুমিত্রীকে কেন, তোমাকেও আমি ঠিক বঝিনে ! তুমি গেলে, সুমিত্রা খুলী হ’লে তুমি দুঃখিত হবে আর সুমিত্র দুঃখিত হ’লে তুমি খুলী হবে, এসব গেলিমেলে কথার মানে আমি যদি কিছুমাত্র বুঝতে পারি তোমার শিষ্যটিও ঠিক তোমারই মত হেঁয়ালীতে কথা কইতে শিখেছে। তার কথা যেন আরও গোলমেলে ! তুমি আর যা ও না শুনে কাল যখন বললাম যে তোমাকে আজ পরে নিয়ে যাব, তখন সুমিত্রা কি বললে শুনবে ?" স্বরেশ্বরের মুখ ঈষং আরক্ত হইয়। উঠিল । দে অন্য দিকে দৃষ্টি নিবন্ধ রাখিয়াই ধীরে ধীরে বলিল, "আলজে কথা ন৷ বলাই ভাল। যা আপনি নিজে ঠিক বুঝতে পারেননি তা বলতে গিয়ে ভুল করতে পারেন।” সুনীক rন্ত হাসিয়া উঠিয়া বলিল, তা বড় মিছে বলনি। তোমাদের কথার অর্থ বোঝাই ভার। আচ্ছা, সেকথা ন হয় যাক। তোমাকে যেতে বলছিলাম কেন তা জান, সুরেশ্বর ?” - স্বরেশ্বর মাথা নাড়িয়া বলিল, “না, তা’ ত জানিনে।” সজনীকান্তের মুখে সকৌতুক হাস্য ফুটিয়া উঠিল – 'যশোর থেকে সের পাচেক ছানাবড়া এনেছি,—থেয়ে দেখতে কেমন জিনিস।” " . স্বরশ্বর মৃদু হাসিয়া বলিল, “যখন যত্ন করে সেখান থেকে নিয়ে এসেছেন তখন বুঝতেই পারছি খুব ভাল জিনিস ।” - রাজপথ ←a☾ প্রসন্ন-গম্ভীর-কণ্ঠে সজনীকান্ত বলিল, “কত দাম পড়েছে জান ?” স্বরেশ্বর একটু ভাবিয়া বলিল,“দশ-বারো টাকা হবে।” “একটি পয়সা নয়, অথচ জিনিস একেবারে পয়লা কোয়ালিটির!” বলিয়া সজনীকান্ত মুগ্ধ অপলক নেত্রে সুরেশ্বরের দিকে চাহিয়া রহিল । স্বরেশ্বর ক্ষণকাল চুপ করিয়া থাকিয় মৃছ হাসিয়া বলিল, “আমার কথা হেঁয়ালী বলে অঙ্গুযোগ করছিলেন, কিন্তু আপনার কথা যে দুর্ভেদ্য হেঁয়ালী ! পাঁচ _gর ছানাবড়ার এক পয়সাও দাম নয়। এ কি করে’ হয় ?” স্বরেশ্বরের কথা শুনিয়া উচ্ছ্বসিত রবে হাসিয়া উঠিয়৷ সজনীকান্ত বলিল, “এই বোঝ! অথচ হয় খুব সহজেই। একজন ময়রার একটা ডিক্রি জারী করাবার আছে ; তাকে বল্লাম যে বড়দিনের ছুটিতে বোনের বাড়ী যাব কিছু ছানাবড় চাই। ব্যস্, একেবারে নগদ পয়সা দিয়ে হাড়ি কিনে পাঁচ সের ছানাবড় বাড়ী পৌঁছে দিয়ে গেল ! কি বল্ব সুরেশ্বর, ডিক্রি ডিসমিসের ক্ষমতাটাও যদি হাতে থাকৃত তা হ’লে আর ছানা-বড়া নয় একেবারে সোনার বড় আদায় করতাম।” বলিয়া সজনী হাসিতে লাগিল । সুরেশ্বর বলিল, “বড় ক্ষমতার একটা আবার অসুবিধ - আছে যে যথেচ্ছা তা ব্যবহার করা চলে না । যেমনভাবে যখন ইচ্ছে ছড়ি ঘুরিয়ে বেড়িয়ে বেড়ানো চলে, কিন্তু তরোয়ালকে অধিকাংশ সময় সাবধানে খাপে পুরে’ রাখতে হয় ।” সজনীকান্ত হাসিয়া বলিল, “তা বটে ; কিন্তু ঝোপ বুঝে কোপ দিতে পারলে তরোয়াল একবার খাপ থেকে বার করলেই দিন কিনে নেওয়া যায়!” - উপমায় পরাজিত হইয়া সুরেশ্বর নিঃশব্দে হাসিতে লাগিল । “ছানবিড়া ছ'চারটে থেন্ধে খুলী হ’তে, স্বরেশ্বর।” মুরেশ্বর স্মিতমুখে বলিল, কি করব বলুন, কপালে না থাকলে আর কেমন ক ?” • * ছানাবড় খাইবার জন্ত স্থমিত্রাদের বাটী আইতে স্বরেশ্বরকে কোন প্রকুরে . সন্মত করিতে ন পারিয়া