পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* অকেজো বাঙ্গালীর সংখ্যা অন্যান্য প্রদেশের তুলনায় বাংলার লোক-সংখ্যা অধিক। বাংলার পরিধি ৭৬৮৪৩ বর্গ-মাইল, লোক-সংখ্যা ৪৬৬৯৫৩৬ জন। বাঙ্গালী ন৷ খাইয়া মরে ; রোগে মরে ; আবার বিকলাঙ্গের সংখ্য দিনদিন বৃদ্ধি পাইতেছে। বাংলার উন্মাজের সংখ্যা সকল দেশের অপেক্ষ অধিক । বাঙ্গালীকে সতর্ক হইতে হইবে। বাঙ্গলায় উন্মাদের সংখ্যা ১৮৮৯৩ জন, পুরুষ ১১১-২, স্ত্রী ৭৭৯১ : ৩১২৬৪ জন কাল, পুরুষ ১৮৯৩৯, ১২৩২৫ স্ট্রীলোক ; অন্ধ-পুরুষের সংখ্যা ১৮৭•২, অন্ধ-স্ত্রীলোক ১৪৭৬৬ ; কুণ্ঠগ্রস্ত পুরুষ ১১৪৮, স্ত্রী ৪•৭৩ ৷ প্রায় এক লক্ষ লোক সমাজের দয়ার উপর নির্ভর করিয়া জীবন ধারণ করে। ইহার উপর বেকার লোকের আবৃদার আছে। বাংলার ধন-সম্পত্তি অবাঙ্গালীর হাতে গিয়া পড়িতেছে, বাঙ্গালী শ্রমকাতর, আত্মঘাতী ; উৎসন্নের পথ রোধ করিতে হইলে একদল অধ্যবসায়ী দেশকৰ্ম্মীর অত্যুথান দরকার হইয়াছে, যাহার সেবা বলিতে এইসকল বিকলাঙ্গ নরনারীর সেবার ব্যবস্থা করিবে. সজাবদ্ধ হইয়া কৃষিজাত দ্রব্য, শিল্প শ্রমজাত সামগ্ৰী উৎপন্ন করিয়া জাতিকে সমৃদ্ধ করিবে। অর্থবল অপেক্ষ ঐক্যবলকে জাগ্রত করবে, শ্রমকে শৃঙ্খলিত করির তুলিবে। দেশে নিস্বাৰ্থ কৰ্ম্মীর বান ডাকিলে, অনেক অন্ধ-খঞ্জের মনেও উৎসাহের সঞ্চার হইবে, অলস কল্পনাপ্রিয় জাতির কৰ্ম্ম-প্রগুক্তি প্রবল হইলে, উন্মাদের সংখ্যা হ্রাস পাইবে । ( প্ৰবৰ্ত্তক, বৈশাখ, ১৩৩১ । ) মুেদিনীপুর—ময়নাগড় মেদিনীপুর জেলার তমলুক মহকুমার অন্তর্গত স্ববিখ্যাত ময়নাগড় অবস্থিত ; ইহা কংসাবতীর শাখা রাইখালী নদীর তীরবত্ত । রাইখালী নী মহিষাদলের শেষ; মাহিষ্য-রাজ উদয়নারায়ণ রায়ের পুত্র প্রতিস্মরণীয় রাজা কল্যাণ রায় কর্তৃক খোদিত । ১১৩২ খৃঃ অব্দে গজপতিবংশীয় চুড়ঙ্গদেব উৎকল জয় করিয়া তথায় সাম্রাজ্য বিস্তার করেন । রাজা কালনীরাম উহার একজন প্রধান সেনাপতি ছিলেন, তিনি ময়নার সুপ্রাচীন খ্যাতনামী রাজা ছিলেন । ময়নার রাজবংশাবলী হইতে অবগত হওয়া যায় যে, কালন্দীরাম চুড়ঙ্গদেবের আত্মীয় ছিলেন। ময়ন রাজবংশের আদি রাজা তাহার বহুপূৰ্ব্বে রাজ্য আরম্ভ করেন। বতদূর মনে হয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে ঐ বংশে রাজা গোবৰ্দ্ধনানন্দ বাহুবলীন্দ্র জন্মগ্রহণ করেন। সম্রাট আকবরের রাজত্বের প্রাকালে (আকবরের রাজত্বকাল ১০৬০১৬০৫ ) মেদনীপুরদহ উড়িষ্য-প্রদেশ মোগলের আয়ত্তাধীন হয় ; তৎপুর্বে এই প্রদেশ উড়িষ্যার সম্রাটগণের অধীনে ছিল। মেদিনীপুর জেলার প্রাচীন বালিসীতা ও তিলদীগড় ময়না-রাজাগণকর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। রাজা গোবৰ্দ্ধনানা যাহুবলীন্দ্র যখন বালিগীতা-গড়ে রাজত্ব করিড়েছিলেন, সেই সময়ে উৎকল-সম্রাটু দেবরাজ তাম্রলিপ্ত-রাজের ক্ষমতা হ্রাস দেখিয় গোবৰ্দ্ধনীনদেব নিকট কর চাহিয়া পাঠান। কিন্তু কর দিতে অস্বীকা করায় উৎকল-সম্রাটের সৈন্যগণকত্ত্বক গড় আক্রাস্ত হয় এবং ইনি ধৃত হইয়া রাজ-সমীপে নীত হন। উৎকল-সম্রাট ইহার অসামান্থ রণ-কৌশল ও সঙ্গীত-বিদ্য দেখিয়া ইহাকে উপবীত, বাণ, নিশtণ ও ডঙ্কা উপঢৌকন-সমেত “বহুবলীগ্র” উপাধি প্রদান করেন। বাহুবলীগ রাজার ময়নাগড়ে বসবাস করিতেন । পূর্বের স্বাধীন নৃপতিগ গড়জাত রাজ বলিয়। কথিত হইতেন ; ময়নাগড়ের রাজবংশ "গড়জাত রাজা নামে পরিচিত। তৎকালে শ্ৰীধর হুই নামে এক ব্যক্তি কর্ণসেনে গড়ে ছিলেন । পূৰ্ব্বে লাউসেনের গড়কে গড়ময়না বলা হইত, ইহ গৌড়েশ্বরের শাসনাধীন ছিল। গৌড়েশ্বরের স্তালিকাপতি রাজ কর্ণসে তৎকর্তৃক এই গড়ের রক্ষক নিযুক্ত হন । পরে তৎপুত্র রাজা লাউসে ইহার অধিকার প্রাপ্ত হইলে গড়ময়না" নামকরণ হয়। লাউসেনে মাতুল মহোম্মদ নামক একব্যক্তি (কোথাও কোথাও মহামদ পা দেখা বায় ) গৌড়েশ্বরের মন্ত্রীত্ব প্রাপ্ত হন। ইনি কোন কার:ে উক্ত গড় আক্রমণ করেন । লাউসেনেব অনুপস্থিতিতে তদায় রাণীদ্ব শত্ৰু-সৈন্তসহ তুমুল যুদ্ধ করিয়া অপূৰ্ব্ব শেয্য-বীর্যোর পরিচয় প্রদা করেন ; এই যুদ্ধে এক রাণ হত হন ও অপর রাণী জয়লাভ করেন পরে গৌড়রাজের অবসানে ‘গড়ময়না’ শীধর স্থইর হস্তগত হয় ও পে ময়নাগড় নামে অভিহিত হয়। যাহা হউক শ্ৰীধর হুই কর্তৃক এ নামটি প্রদত্ত হইয়াছে বেশ বুঝা যায়। এই রাজবংশের প্রথম রঙ :"রক্ষা বাহুবলীন্দ্ৰ নুতন করিয়া রাজ-বটা, গড় আদি নিৰ্মা করেন। তৎকালে ময়নগড় গভীর মৃত্ত সপ্ত এনে রাজা লাউসেনের অধিকাভুক্ত ছিল। গোবৰ্দ্ধনশৈ পীড় রাজ্য ধ্বংসের অব্যবহিত পূৰ্ব্বে ঐধর হুইকে পরাজিত করিয়া ময়নাগ: অধিকার করেন । এই ত গেল ময়নার সংক্ষিপ্ত প্রক্ষিপ্ত ইতিহাস । এক্ষণে গড়ে বিষয় কিঞ্চিৎ আলোচন করা আবিষ্ঠক । ময়নাগড়ের পরিমাপফল ৩০ শত বিঘারও অধিক। ইহার চতুর্দিকে কালিদহ পব্লিথ, বিস্তt ১৭৫ ফুট, দৈর্ঘ্যে প্রত্যেক দিকের পরিমাণ ৭৫০ ফুট। ইহা চতুর্দিকে উচ্চ ভূখণ্ড, পরিসর ২• শত ফুট দৈর্ঘ্যে প্রত্যেক দিকে পরিমাণ ১• • • হাজার ফুট ; বাহিরে মকরদহ, বিওর ১৭৫ ফুট প্রত্যেক দিকের দৈর্ঘ্য ১৪• • শত ফুট, গম্ভীরত। ৮ হইতে ১৫ ফুট উক্ত পরিথদ্বয়ে কুমার ও মৎস্তাদ আছে, উভয় পরিথার মধ্যবর্ত স্থান উচ্চ ভূখণ্ড যনাবৃত দুর্ভেদ্য পার্বত্য বঁাশের ঝাড় ও বছবি বৃক্ষাদিতে পরিপূর্ণ। এই ভূখণ্ড হরিণ, ব্যাঘ্ৰ, ময়ূর ও বিবিধ পন্থ ও সরীস্বপ প্রভৃতির বাসস্থান। স্বপ্রসিদ্ধ ইংরাজ ঐতিহাসিকগ ময়নাগড়-সম্বন্ধে অনেক বিষয় অনুসন্ধান করিয়া লিপিবদ্ধ করি গিয়াছেন। তথ্যতীত বহু বাঙ্গাল ইতিহাসে এই স্থানের বিবর প্রদত্ত হইয়াছে । ১১৯৭ সালের পূর্বেই সমগ্র সবঙ্গ ময়ন-রাজাগণের হস্ত হইে বিচ্ছিন্ন হইয়া যায়। ময়না-রাজবংশের সপ্তম রাজা ব্ৰজানন্দ বাহুবলীত্রে ○ ob"