পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ] রাজত্ব-কালে সবঙ্গ পরগণ খণ্ড-খণ্ডরাপে নীলাম হওয়ায় কতকগুলি তালুকের স্বষ্টি হয় । ইনি ১৮২২ খৃঃ পরলোক গমন করেন। তৎপরবর্তী রাজা আনন্দনারায়ণ বাহুবলীন্দ্র ইংরেজাধিকার-কালেই পরলোক গমন করেন, তদীয় পিতা রাজা জগদানন্দের শেষ জীবনে এই প্রদেশ কোম্পানীর হস্তগত হয় । ময়নাগড়ের বিবরণ কবি দ্বিজরাম, ঘনরাম চক্ৰবৰ্ত্তী, নৃসিংহ বঙ্ক, মাণিক গাঙ্গুলি রচিত পৃথকৃ পৃথক্ চরিখানি ধৰ্ম্মায়ণ ও ধৰ্ম্ম-সঙ্গীতনামক পদ্য-পুস্তকে (প্রাচীন পুথিতে ) আছে । কবিবর ভারতচন্দ্র রায় গুণাকর এই ময়নাগ ৰুক কর্ণগড় ব| কর্ণসেনের গড় বলিয়া মানসিংহের বর্ণনা করিয়াছেন। কলি ঘনরাম চক্রবর্তী মেদিনীপুরের এই ময়নাগড়ে জন্মগ্রহণ করেন । তৎপ্রণীত শ্ৰীধৰ্ম্মমঙ্গলের স্যায় বঙ্গের ভাল ভাণ্ডারে এমন মহাকাব্য আlর কি আছে ? , ইহা বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে লিখিত । আমার নিকট একখানি ঐকালের জীর্ণবস্থ-প্রাপ্ত ধৰ্ম্ময়ন আছে ; তন্মধ্যে কতকগুলি সম্পূর্ণ নূতন জিনিষ পাওয়া গিয়াছে। এই জেলার অনেকে অদ্যাবধি ময়নাগড়ের সম্বন্ধে বিশেষ কিছু জানেন নী—ইহ আশ্চর্য্যের বিষয় । ময়নাগড়ের লোকেশ্বর ও শামসুন্দর এই দুইটি মন্দির বিশেষ উল্লেখযোগ্য । ময়নাগড়ের রাজগণ দেশের কৃষিবাণিজ্য-বিস্তার-কল্পে এবং দেবসেবার্থে ব্রাহ্মণকে অনেক ভূসম্পত্তি দান করিরছেন। ( মাধবী, বৈশাখ ১৩৩১ ) শ্ৰী বিভূতিভূষণ জান। কাশীপুরের বিরূপাক্ষ বরিশাল হইতে দুই-তিন মাইল পশ্চিমে কাশীপুর গ্রাম। সেখানে একখানা অতি সুন্দর শিবমূৰ্ত্তি বিরূপাক্ষ নামে পুজী প্রাপ্ত হইতেছে । মুন্তিপানি কতদিন হইল পাওয়া গিয়াছে, কে পাইয়াছিল, কাহার বাড়ীতে বৰ্ত্তমানে পুজা হইতেছে, এইসকল খবর আমি সংগ্ৰহ করিতে পারি নাই । পাঠকবর্গের মধ্যে কেহ যদি এইসকল খবর সংগ্ৰহ করিয়া প্রক৮ করেন, তবে বড়ই ভাল হয়। মূৰ্ত্তিখানি কৃষ্ণ প্রস্তর-নিৰ্ম্মিত । আমার নিকট মুর্বিখানির যে ফোটোগ্রাফ আছে তাহ দেখিয় মনে হয়, মূৰ্ত্তিখানি চারি ফুট, সাড়ে চারিফুট উচ্চ হইবে। মুর্শ্বিখানি চতুভূজ, দক্ষিণোদ্ধহস্তে ত্রিশূল, দক্ষিণাধ হন্তে বরমুদ্রায় ধৃত জপবটা । বমোদ্ধহস্তে খট্বাঙ্গ, বামধ: হস্তে নরকপাল । মাথায় জটামুকুট, মাথার পশ্চাতে প্রভা-মণ্ডল। সকলের উপরে একটি ঙিন-থাক-ওয়াল ছাতি । প্রভt-মণ্ডলের দক্ষিণে মূধিক-বাহন গণেশ ললিতাসনে উপবিষ্ট, বামে কান্তিকেয় ময়ূর-বাহনে ধাবমান । শিবের গলায় হার, বাহুতে বাজু, প্রকোষ্ঠে বলয়, কর্ণ-ভূষণের ভারে কর্ণ ছিড়িয়া নামিয়াছে । কটিতে কটি?ঐ ও অজস্ৰ অলঙ্কার, পরনের কাপড় কিন্তু হাটুর নীচে নামে নাই। মুম্পষ্ট উদ্ধৃলিঙ্গও লক্ষ্যের যোগ্য । শিবের দক্ষিণে অভয় ও উৎপল-ধারিণী মকর-বাহিনী গঙ্গা, বামে অভয়েtৎপল-ধারিণী সিংহ-বাহিনী গেীরী । শিব কমলাসনে দণ্ডায়মান, আসনের নিম্নে বলীবর্দ হতে প। গুট।ইয়া মাথাটি ঈযং উপরের দিকে উঠাইয়া যেন বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ড-ধরের বহন-গৌরব অমুভব করিতেছে । মূৰ্ত্তিখানি বিরূপাক্ষ নামে পূজা হয়, কিন্তু বিরূপাক্ষের কোন ধ্যানের সহিতই মূৰ্ত্তির মিল পাইলাম না । কেহ উদ্যোগী হইয়া যে ধ্যানে বৰ্ত্তমানে মুৰ্বিথানির পূজা হয়, তাহ সংগ্ৰহ করিলে বড় ভাল হয় । আমার মতে এই মূৰ্ত্তি নীলকণ্ঠ বলিয়া পরিচিত হওয়া উচিত, কারণ নীলকণ্ঠের ধ্যানের সহিত মুৰ্ত্তিখানির মিল আছে। কষ্টিপাথর—ভারতের বাহিরে আয়ুৰ্ব্বেদের প্রভাব সারদী-তিলোকক্ত নীলকণ্ঠের ধ্যান এইরূপ — বালাকাযুক্ততেজসং ধৃতজটাজুটেন্দুখণ্ডোম্বলং নাগেন্দ্রে কৃতভূষণের্জপবট শূলং কপাল কৰৈ । খড়াঙ্গং দধতং ত্রিনেত্রবিলসৎপঞ্চাননং সুন্দরং ব্যস্বত্বকপরিধানমন্ত্ৰনিলয়ং শ্ৰীনীলকণ্ঠঃ ভজে । নবেদিত অযুত স্তয্যের মত তেজশলী, খণ্ডইন্দ্বার উজ্জ্বল, জটাজুটধারা, মহাকায় সৰ্পগণ দ্বারা ভূধিত, চারিবাহতে জপৰ্বট, শূল, খটাঙ্গ এবং নরকপালধারী, ত্রিনেত্রযুক্ত পঞ্চমনশালী, ব্যাঘ্ৰচৰ্ম্মপরিহিত, পদ্মের উপৰ অধিষ্ঠানকারী, সুন্দর শনালকণ্ঠকে শুঞ্জন করি। এই ধানের সহিত মুর্ভুিটির এক পঞ্চানন ভিন্ন আর সম্পূর্ণ মিল আছে। মূৰ্ত্তি লইয়া যাহার। আলোচনা কবেন, তাহরী জানেন যে শিব সৰ্ব্বদাই পঞ্চাননরপে বর্ণিত হইলেও পাথরের মূৰ্ত্তিতে সাধারণতঃ একটি মাএ মুখই দেখান হয়। মূৰ্ত্তিখানি খুব সাদ-সিধা। কিন্তু শিব ও গঙ্গা-গেীরীর মুখশ শিল্পী অতি নিপুণ হস্তে ফুটাইয়৷ তুলিয়াছেন । ভোলা মহেশ্বরের মুখে যে স্বৰ্গীয় হাসিটি লাগিয়া আছে, তাহ প্রণিধান কবিয়া দেপিতে দেখিতে সৌন্দর্যোর উপলব্ধিতে আত্মহারা হইয়। যাইতে হয়। মূৰ্ত্তির উপরের ছত্রটি লক্ষ্যের যোগ্য। ছকচিহ্ন আর কৃত্তিমুখচিঙ্গ, পূর্ববঙ্গের পাথরের মূৰ্ত্তিগুলির উপর এই দুই চিহ্নই সৰ্ব্বদা দেখিতে পাওয়া যায়। কৃত্তিমুখযুক্ত মূৰ্ত্তিগুলিতে কারুকাথা খুব বেশী থাকে। ছত্র-চিহ্নের মুষ্ট্রিগুলি সাধারণতঃ সাদা-সিধা হয়। আমার মনে হয়, ছত্রচিন্সযুক্ত মুক্তিগুলি পূর্ববঙ্গের ভাস্করগণের তৈয়ারি । প্রমাণপ্রয়োগের কথা তুলিলেই পাঠকগণ পলায়নপর হইবেন—কাজেই রসভঙ্গ করিবার দরকার নাই । পুৰ্ব্ববঙ্গে এমন প্রাচীন পল্লী প্রায় নাই যেখানে দুই-একখানা পাথরের মূৰ্ত্তি না আছে। পাঠকবর্গ যদি নিজ নিজ গ্রামের পাথরের মূৰ্ত্তিগুলির বর্ণনা লিখিয় পাঠান, তবে পূর্ববঙ্গের ভাঙ্গযোণ ইতিহাস সঙ্কলন করা সহজ-সাধ্য হইয় উঠে । তরুণ, Jৈজষ্ঠ ১৩৩১ ) শ্ৰী নলিনীকান্ত ভট্টশালী ( কিউরেটর, 6tফ মিউজিয়াম্) ভারতের বাহিরে আয়ুৰ্ব্বেদের প্রভাব অতি প্রাচীনকাল হইতেই ভারতে আযুৰ্ব্বেদ-শাস্ত্রের সবিশেষ উন্নতি হইয়াছিল । বৌদ্ধগণ জীবের দুঃখ দূর করিবার নিমিত্ত এই শাস্ত্রের সম্যক্ অনুশীলন ও প্রচার করিতেন। মহারাজা অশোক মনুষ্য ও পশু এ উভয়ের নিমিত্ত পৃথক চিকিৎসালয় করাইয়ছিলেন । তিনি যে কেবল উহার নিজের রাজ্যেই এরূপ ব্যবস্থা করিয়াছিলেন তাহ নহে, শিলালিপিতে উক্ত হইয়াছে যে, সিংহলে ভারতবমের পশ্চিমে যে-সমুদয় ববনরাজ্য ছিল, তাহার সব্বত্রই তিনি এইরূপ মনুষ্য ও পশুর চিকিৎসার বিধান করিয়াছিলেন । ফল-মুল ও অন্তান্ত ভেষজ-দব্য যেখানে যাহা কিছুর অভাব হইত, তিনি ভারতবধ হইতে তৎসমুদয় সরবরাহ করিতেন। এমন কি আয়ুৰ্ব্বেদোক্ত ঔষধে ব্যবঙ্গ ত অনেক গাছ-গাছড়াও তিনি ঐসমুদয় দেশে রোপণ করাইয়াছিলেন। এইরূপে ক্রমে ক্ৰমে ভারতীয় আযুৰ্ব্বেদের জ্ঞান সমগ্র এশিয়ায় প্রচারিত হইয়া জীবের মহা কল্যাণ সাধিত করিয়াছিল । জীবের অশেষ কল্যাণকর আয়ুৰ্ব্বেদ-শাস্ত্র সমগ্র এশিয়ায় কিরূপ প্রতিপত্তি লাভ করিয়াfছল, তাহীর কিছু-কিছু প্রমাণ এখনও বিদ্যমান আছে। মধ্য এশিয়াপণ্ডের চীন-দেশের অন্তর্গত কাশগড়ের একটি