পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্য। ] এই যদি আদর্শ হয়, তা হ’লে দেশী বিলাতী প্রভেদ করে জাতির সঙ্গে জাতির বিবাদ করা সেই মহৎ আদর্শের বিরুদ্ধাচরণ, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।” বিমানবিহারীর কথায় বিশেষভাবে প্রসন্ন হইয়া জয়ন্তী কছিলেন, “সেইজন্যেই ত, আমি বলি যে, বিলাতী জিনিষ ঘৃণা করার মধ্যে মহত্ব কিছুই নেই, বরং তাতে নিজের মনকে ছোট করা হয় ।” বিমানবিহারী কছিল, “ন, বিলাতী-বর্জন প্রতিজ্ঞার মূলে ঠিক ঘৃণার কথা নেই। এটা হচ্ছে উদ্দেত্য-সিদ্ধির একটা উপায়। কিন্তু আমার মনে হয়, সাধু উদেষ্ঠা সিদ্ধ করার জন্যে অসাধু উপায়ের সাহায্য নেওয়া উচিত নয়। দরিদ্র ভোজন করাবার জন্তে চুরি করলে, পুণ্য বেশী হয়, কি পাপ বেশী হয় বলা কঠিন ৷” সুমিত্র একটা চেয়ারে বসিয়া অন্যদিকে মুখ ফিরাইয়। জয়ন্তী ও বিমানবিচারীর কথাবাৰ্ত্তা শুনিতেছিল ; কিন্তু তাতাদের আলোচনায় প্রবেশ করিয়া উত্তর-প্রত্যুত্তর অথব; তৰ্ক-বিতর্ক করিলার কিছু মায় প্রবৃত্তি তাঙ্গার ছিল না। ক্ষণকাল পরে বিমানবিষ্ঠারীর নিকট তাহাকে ও বিমলাকে রাপিয়। জয়ন্থী যখন স্থানান্তরে প্রস্থান কবিলেন, তপন অগত্যা তাহাকে বিমানবিহারীর কথার উক্টরে কথা কহিতেই হইল । দুই চারিটা অন্যান্য কথার পর বিমানবিহারী বলিল, “হঠাৎ তোমার এ বেশ-পরিবর্তন দেখে আমি আশ্চৰ্য্য হ’য়ে গিয়েছিলেম । আর সত্যি কথা বলতে কি আমার ও তেমন লাগেনি। এখন ত এতক্ষণ হ’য়ে গিয়েছে, এপনও কেমন যেন বেমানান লাগছে।” বিমানবিঙ্গরীর একথায় বিস্মিত হইয়া সুমিত্রা মূখ তুলিয়। চাহিয়া সকৌতুহলে জিজ্ঞাসা করিল, “কেন, বেমানান লাগছে কেন ? སྐྱེས་མ་ཚེ ──ས་སླ་ ༡ डॉक्र *५ এই বেশেই ত’ আমাকে চিরকাল আপনার দেখে এসেছেন ?” বিমানবিহারী মৃদু হাসিয়া বলিল, “কেন বেমানান লাগছে তা বলতে পারিনে, কিন্তু লাগছে । মনে হচ্ছে এ ८दन्डामात्र বেশ নয়, ছদ্মবেশ !” ' ক্ষণকাল নীরব থাকিয়া স্বমিত্রা বলিল, “কিন্তু খদ্দর ও ত’ আপনার পছন্দ করেন না ?” একথায় মনে-মনে ঈষৎ আহত হইয়া বিমানবিহারী মৃদু হাসিয়া বলিল, “আমি হয়ত আমার বিষয়ে পছন্দ করিনে ; কিন্তু তা বলে’, তোমার বিষয়ে অপছন্দ করবার ত’ কোনো কারণ নেই ! ডাকাতের ছেলে ডাকাত হবে এ হয়ত অনেক ডাকাতই পছন্দ করে না।” উপমাট বিমানবিহারী হয়ত সহজ ভাবেই দিয়াছিল, কিন্তু তাহার মধ্যে একটা নিগুঢ় অর্থ ও ইঙ্গিত উপলব্ধি" করিয়া সুমিত্রার মুখ আরক্ত হৃষ্টয়া উঠিল । সে কোন ও কথা না বলিয়া নীরবে বসিয়া রহিল । কিন্তু বিমলা উত্তর দিতে গিয়া কথাটাকে একেবারে অনারত করিয়া দিল । সে সহসা বলিয়া বসিল, “ডাকাণ্ডে । ভয়ত পছন্দ করে না, কিন্তু ডেপুটির পছন্দ করে !” সবিস্ময়ে বিমানবিহারী জিজ্ঞাসা করিল, পছন্দ করে y" “কি “পছন্দ করে যে তারা যেমন সাহেব তেমনি তাদের স্বীদের ৪ মেমসাহেব হওয়া উচিত।” বলিয। বিমলা সুমিত্রর দিকে চাহিয়া হাসিতে লাগিল । এরূপ পরিষ্ঠ সি বিমলা কথন ও করে না, এক্ষেত্রে ও সে পরিহাস করিবার জন্যই কথাটা বলে নাই, কিন্তু যেমন, করিয়াই উক, কথাটায় বিমান লজ্জিত এবং মুমিত্রা বিরক্ত হইয়া উঠিল । ক্ষণকাল নীরবে থাকিয় বিমানবিহারী মৃদু হাসিয়া বলিল, “দে ডেপুটির স্ত্রী নেই, সে একথার উত্তর কেমন করে দেবে ? যাদের আছে, তাদের জিজ্ঞাসা করে” দেপে, তারা হয়ত বলতে পারবে ।” তাহার পর সুমিত্রার দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া বলিল, “কিন্তু আমার মনে হয় সুমিত্র, ডেপুটিদের ওপর বিমলা একটু বেশীরকম অবিচার কবৃছে । সব ডেপুটিই যে ডাকাতদের চেয়ে নিকৃষ্ট তা না হ’তে ও পারে ! তোমার কি মনে হয় ?” বিমানবিহারীর কথায় বিমলা হাসিতে লাগিল, এবং সুমিত্র অধিকতর আরক্ত হইয়া উঠিল। সুমিত্রার মতের জন্য অপেক্ষা ম; করিয়| বিমানবিহারী নিজের মতই ব্যক্ত করিল, বলিল, “আমার মনে হয় আমরা আমাদের জীবনে এতরকম অসঙ্গতি বহন করে বেড়াই, যে একজন ডেপুটির পক্ষে স্বদেশী স্বী