পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা } বিবিধ প্রসঙ্গ—ওলিম্পিকূ ক্রীড়ায় ভারতবর্ষ ¢¢ዓ মারামারি কাটাকাটির মধ্যে লইয়া গিয়াছে বটে ; কিন্তু তাহারা জরাগ্রস্ত নহে। তাহারা শক্তিতে ভরপুর। তাহাদের সভ্যতার ও প্রবৃত্তির মুখ প্রকৃত সাত্বিকতার দিকে যখন ফিরিবে, তখন তাহারা জরা ও অবসাদগ্ৰস্ত ভারতীয় জাতিকে সাত্বিকতাতে পশ্চাতে ফেলিয়া যাইবে । জড়ভাব, অপৌরুষ, নিজীবতা সাত্বিকতা নহে ; উহ তামসিকতারই রূপান্তর। ব্যক্তিতে ও জাতিতে প্রভেদ এই, যে, ব্যক্তির যৌবন একবার অতীত হইলে আর ফিরিয়া আসে না ; কিন্তু যে জাতিকে আজ জরাগ্রস্ত ও মুমুধু মনে হইতেছে, তাহা আবার নবযৌবন ও নবজীবন লাভ করিতে পারে। এই নবযৌবন ও নবজীবন লাভ মানুষের সাধ্যায়ত্ত । ইহা পাইবার চেষ্টা আমাদিগকে বিধিমত করিতে হইবে। গৌরীশঙ্করের চুড়ায় উঠিতে গিয়া বার-বার অকৃতকাৰ্য্য হইয়াও ইংরেজ জেদ ছাড়িতেছেন না। এবারেও র্তাহারা ভগ্নোংলাহ হন নাই। র্তাহাদের রাজকীয় ভৌগোলিক সমিতির (রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটার) সভাপতি স্তার ফুন্সিস ইয়াংহাজ ব্যাও এ-বিষয়ে টাইম্‌সে একটি প্রবন্ধ লিখিয়াছেন। তিনি বলিতেছেন, “এভারেই (গৌরীশঙ্কর) খুব দৃঢ়তার সহিত নানা ভীষণ অস্ত্র-সহকারে যুদ্ধ করে । অলঙ্ঘ্য পাষাণরাশিতে তাহাকে ঘিরিয়া আছে। সে তুষারের পাহাড়। ঝড় ও হিমানী তাহার সাহায্য করে। কিন্তু সে অন্ধের মত যুদ্ধ করে । অভিজ্ঞত দ্বারা শিক্ষালাভ তাহার হয় না, এবং তাহার প্রতিদ্বন্দ্বীর চেষ্টা, আয়োজন, সাহস, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যেমন বাড়িতে থাকে, তাহার আয়োজন, অস্ত্র, দৃঢ়তা অমুনি সেই সঙ্গে-সঙ্গে বাড়িতে থাকে না। অন্য দিকে তাহার প্রতিদ্বন্দ্বী মামুষের চেষ্টা, আয়োজন, সাহস, প্রতিজ্ঞার দৃঢ়তা বাড়িয়া চলিতেছে। নূতন নূতন বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করিবার মত প্রতিজ্ঞার বল, বুদ্ধি ও কশ্মিষ্ঠত মানুষের আছে। পৰ্ব্বতে ও মানুষে এই মল্লযুদ্ধে মানুষকে পাহাড় যতবার আছাড় দিতেছে, মানুষ, ভয় না পাইয়া, না দমিয়া, ততবার নূতন উদ্যমে ও তেজস্বিতী-সহকারে তাল ঠুকিয় দাড়াইতেছে। স্বতরাং গৌরীশঙ্করের অদৃষ্টে পরাজয় নিশ্চিত। মাহব নিৰ্ম্মমভাবে তাহার দিকে অভিযান করিয়া চলিয়াছে। ৪০ বৎসর আগে মানুষ খুব বিনয়নম্র ছিল, ২১০০০ ফুটের বেশী উচুতে উঠিবার কল্পনার আস্পদ্ধা তাহার হয় নাই। ২০ বৎসর আগে সে ২৩০০০ ফুট উঠিয়াছিল। ১৫ বৎসর আগে প্রায় ২৫০০০ ফুট পৰ্য্যন্ত চড়ে। দুই বৎসর পূৰ্ব্বে ২৭০০০ ফুট আরোহণ করে এবং গত মাসে ২৮০০০ এর কম নহে। পাটীগণিতই দেখাইতেছে, যে, ২৯০০০ ফুট আরোহণ অতঃপর আসিতেছে এবং গৌরীশঙ্কর পরাজিত হইবে।” ভারতীয় লোকদের মধ্যে সাত জন ভারবাহী লোক গতবারের চেষ্টায় তখনকার সৰ্ব্বোচ্চ স্থানে গিয়া তুষারস্তুপ পতনে মারা যায়। এবারেও মান বাহাদুর নামক একজন সর্দার ভারবাহী প্রায় ২৮০০০ ফুটের নিকটে মারা পড়িয়াছে। স্বতরাং গৌরীশঙ্করের সৰ্ব্বোচ্চ চূড়ায় উঠিবার মত শক্ত-সমর্থ মানুষ ভারতীয়দের মধ্যে . আছে, সাহসও আছে। কিন্তু মনের দৌড় নাই, যৌবনস্থলভ অসমসাহসের কাজ করিবার প্রবৃত্তি নাই, স্বশৃঙ্খল আয়োজন নাই, বৈজ্ঞানিক সরঞ্জামের জ্ঞান নাই, এবং এরূপ বিষয়ে ইংরেজ বা অন্য কোন ইউরোপীয় যে-যেপ্রেকারের সাহায্য গবর্ণমেণ্টের নিকট পাইয়াছে, তাহা ভারতীয় কেহ সহজে পাইবে না। মোটেই পাইবে কি না, তাহা চেষ্টা না করিলে বলা যায় না। চেষ্টা কেহ ত করেন নাই । ওলিম্পিকূ ক্রীড়ায় ভারতবর্ষ ওলিম্পিকূ ক্রীড়ায় দৌড়ে প্রতিযোগিতা করিবার জন্য ভারতবর্ষ হইতে একজন এংলোইণ্ডিয়ান এবং একজন মান্দ্রাজী গিয়াছিলেন । র্তাহারা কিন্তু প্রারম্ভিক দৌড়েই হটিয়া গিয়াছেন ; আসল প্রতিযোগিতায় যাইতে পারিবেন না। ওলিম্পিক ক্রীড়ায় পৃথিবীর সেরা খেলোয়াড়রা যায়। দৌড় আদি প্রত্যেক বিষয়েই বিশেষ শিক্ষা, অভ্যাস, প্রভৃতি দরকার। তা ছাড়া খুব স্বস্থ ও বলিষ্ঠ শরীর