পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪র্থ সংখ্যা ) । সুতা না কাটিলে কমিটির সভ্যত্ব স্বতঃক্ট লোপ পাইবে, মহাত্মা গান্ধীর প্রস্তাব হইতে এই শাস্তিমূলক অংশ বাদ পড়িলেও, সুতা কাটা যে চাই-ই, এই কৰ্ত্তব্যনির্দেশ বজায় আছে। উত্তম লোকের কৰ্ত্তব্যবোধে, ভাল কাজ ভাল বলিয়াই, পদোচিত কাজ করেন ; মধ্যম লোকেরা দণ্ডের ভয়ে করে ; আধুম লোকের কর্তব্যবোধ কিম্বা দণ্ডের ভয় কিছুতেই না করিতে পারে । বৰ্ত্তমানক্ষেত্রে এই সাধারণ নিয়ম প্রয়োজ্য কি না, কংগ্রেসের সভ্যগণ বিবেচনা করিবেন। ব্যবস্থাপক সভায় প্রবেশ করিয়া পরিশ্রম- ও স্থবিবেচনা-সহকারে কাজ করিলে দেশের কিছু উপকার করা যায় এবং কিছু অনিষ্ট নিবারণ করা যায়, ইহা আমরা প্রথম হইতেই স্বীকার করিয়া আসিতেছি। কিন্তু গবর্ণমেণ্টের সকল কাজে বাধা দেওয়ার নীতির দোষও আমরা দেখাইয়াছিলাম। স্বারাজ্যিকর সে-নীতি ত্যাগ করিয়া বুদ্ধিল পরিচয় দিয়াছেন—যদিও তাহারা ব্যবস্থাপক সভা আদি ভাঙিয়া দবার যে-আশা লোককে দিয়া ভোট পাইয়াছিলেন, তাহ পূর্ণ করিতে না পারিয়া তাহারা অঙ্গীকারভঙ্গ ও অসঙ্গতি-দোষে দুষ্ট হইয়াছেন। বিলাতের লোকেরা তাহাদের পালেমেণ্টে ঢুকিয় যে-পরিমাণে দেশের ভাগ্যনিয়ন্ত হইতে পারে, আমরা যদি তাহ হইতে পারিতাম, তাহা হইলে প্রতিনিধি নির্বাচিত হইবার পরিশ্রম, উদ্বেগ ও অর্থব্যয় কতকটা পোষাইত। কিন্তু বৰ্ত্তমান অবস্থায় আমাদের প্রতিনিধির যতটুকু কাজ করিতে পারেন, তাহাতে এত পরিশ্রম, উদ্বেগ, রেষারেষি, দলাদলি ও অর্থব্যয় নিতান্তই অপব্যয়, তাহাতে আমাদের কোন সন্দেহ নাই । তথাপি কেহু যুদি এতরকমে এতটা অপব্যয়ী হইয়াও ব্যবস্থাপক সভায় ঢুকিতে ও প্রতিনিধির কাজ করিতে চান, তাহাতে আমরা বাধা দিতে অনিচ্ছুক । কিন্তু ইহা পুনঃ পুন: বলিলে ক্ষতি নাই, যে, ংগ্রেসের গঠনমূলক কাজগুলির মূল্য কোন্সিলের কাজ অপেক্ষা অনেক বেশী । অবশ্য কেহ যদি কৌন্সিলে ঢুকিয়া গঠনমূলক কায্যের সহায়তা করিতে পারেন, কিম্বা কৌন্সিলের কাজ ছাড়া গঠনমূলক কাজও করিতে বিবিধ প্রসঙ্গ—আহমেদাবাদে দুই দল QやQ পারেন, তাহা ভাল ; কিন্তু এপর্য্যস্ত তাহণ করা হইয়াছে কি ? সমস্ত জাতি স্বাবলম্বী ও নিয়মিতপরিশ্রমী (স্বতরাং সংযত) হইলে, খাদ্যন্ত্রের অভাব নিজেরাই পূরণ করিতে পারিলে, অস্পৃশ্যতা দূরীভূত হইলে, হিন্দু-মুসলমানাদির বিরোধ নিবারিত ও ঐক্য স্থাপিত হইলে, পান-দোষ ও অন্যবিধ নেশার অভ্যাস বিনষ্ট হইলে, শুধু যে, স্বরাজলাভ অধিকতর সহজসাধ্য হইবে তাহা নহে, স্বরাজ অনেকটা লব্ধ হইয়াছেই বুঝিতে হইবে। পঞ্চবিধ বর্জনের মধ্যে সরকারী ও সবুকারের অমুমোদিত শিক্ষালয় পরিহারের সমর্থন আমরা কখন করিতে পারি নাই এইসব শিক্ষালয়ের শিক্ষণীয় বিষয়, শিক্ষাপ্রণালী শিক্ষার পুস্তক, প্রভৃতির অনেক দোষ আছে জানি ; কিন্তু তাহা সত্ত্বেও উহার দ্বারা একট, অভাব দূর হইতেছে যাহা “জাতীয় বিদ্যালয়” দ্বারা দূর হইতেছে না। বিকৃত ভারতেতিহাস শিক্ষা দেওয়া সরকারী শিক্ষাপ্রণালীর একটা মহা দোষ । কিন্তু সেই দোযের প্রতিকার-স্বরূপ মেজর বামনদাস বস্ব মহাশয়ের লেখা ভারতেতিহাস বিষয়ক বহিগুলির মত বহিও ত সাবেক ইংরেজী শিক্ষাপ্রাপ্ত লোকেরা লিখিতেছেন । সরকারী আদালতের সাহায্য না-লওয়া ও তাহাতে ব্যবহারাজীবের কাজ না-করা পঞ্চবিধ বর্জনের অন্তর্গত। অনেক লোককে বাধ্য হইয়া মোকৰ্দমায় বাদী বা প্রতিবাদী-রূপে লিপ্ত নতুবা তাহাদের খুব ক্ষতি, অনিষ্ট, বা অসুবিধা হয় । এই কারণে আহমেদাবাদের একটি প্রস্তাব দ্বারা ঐ প্রকারের লোকদিগকে পঞ্চবিধ বর্জনের মধ্যে আদালতের সাহায্যগ্রহণ পরিহার হইতে নিস্কৃতি হইয়াছে। তদুপলক্ষ্যে শ্ৰীযুক্ত চিত্তরঞ্জন দাশ-সম্পাদিত ফরওয়ার্ডের সম্পাদকীয় স্তম্ভে লেখা হইয়াছে, যে, ব্যবহারাজীবদিগের রোজ গারের উপায় পরিত্যাগেও ত তাহাদের খুব ক্ষতি হয়। অর্থাং প্রকারাস্তরে বোধ হয় ইহাই বলা হইয়াছে, যে, কংগ্রেস মোকৰ্দমার পক্ষদিগকে যেমন নিস্কৃতি দিয়াছেন, উকীলব্যারিষ্টারদিগকেও তেমনি বর্জনের এই দফা হইতে নিষ্কৃতি দিলে ভাল হয়। কিন্তু তাহাতে বেশী কিছু আসে যায় ইহতে হয় । দে ওয়া