পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫ম সংখ্যা ] প্রকার ভাব আসিয়া উপস্থিত হয় তখন সেই সমুদায় ভাবকে দুই ভাগে বিভাগ করি না কেন ? দুই ভাগে বিভক্ত করিয়া প্রত্যেক ভাগকে বিচার করিয়া দেখি না কেন ? এইপ্রকার স্থির করিয়া কাম, ব্যাপাদ (=অপরের অশুভ-কমন, বিদ্বেষ-বুদ্ধি ) ও হিংসা এই কয়েকটিকে একদিকে রাথিন্থাম এবং নৈষ্কাম্য অ-ব্যাপাদ ও অহিং এই কয়েকটিকে অপর দিকে রাখিতাম । তাহার পরে আমি অপ্রমত্ত, সাধন-পরায়ণ ও সমাহিত হইয়া এইভাবে বিচার ও বিতর্ক করিতাম—এই কাম-বাসনা উৎপন্ন হইয়াছে,—ইহা নিজের অকল্যাণকর, ইহা অপরের অকল্যাণকর এবং ইহা উভয়ের অকল্যাণকর । ইহা প্রজ্ঞাকে নিরোধ করে, বিনাশ আনয়ন করে এবং নিৰ্ব্বাণলাভে বাধা প্রদান করে। এইপ্রকার চিন্তা করিতে করিতে কাম-বাসনা প্রাণ হইতে বিদূরিত হইত। এইরূপ ব্যাপাদ ও হিংসা-বিষয়ে চিন্তা করিয়া বুঝিতাম, যে, এই সমুদায় নিজের অকল্যাণ সাধন করে ; অপরের অকল্যাণ সাধন করে এবং সকলের অকল্যাণ সাধন করে ; এই সমুদায় প্রজ্ঞাকে নিরোধ করে, বিনাশ অনিয়ন করে এবং নিৰ্ব্বাণলাভে বাধা প্রদান করে । এই প্রকার চিন্তা করিতে করিতে এ-সমুদায়ও প্রাণ হইতে বিদূরিত হইত। অপর দিকে যখন নৈষ্কাম্য ভাব উপস্থিত হইত, তখন আমি ভাবিতাম—এই নৈষ্কাম্য ভাব উপস্থিত হইয়াছে, ইহা নিজের পক্ষে কল্যাণকর, অপরের পক্ষে কল্যাণকর এবং উভয়ের পক্ষে কল্যাণকর । ইহা প্রজ্ঞা বৰ্দ্ধিত করে, বিনাশ নিবারণ করে এবং নিৰ্ব্বাণ-লাভে সাহায্য করে। আমি রাত্রিতে এইপ্রকার চিস্তা করিতাম, দিবাভাগে এইপ্রকার চিস্তা করিতাম এবং দিবারাত্রি এইপ্রকার চিন্তা করিতাম। এইরূপ অব্যাপাদ ও অহিংসার বিষয়ে বিতর্ক-বিচার করিয়া বুঝিতাম, এসমুদায় নিজের কল্যাণ সাধন করে, অপরের কল্যাণ সাধন করে এবং উভয়ের কল্যাণ সাধন করে ; এসমুদায় প্রজ্ঞা বৰ্দ্ধিত করে, বিনাশ নিবারণ করে, নিৰ্ব্বাণলাভে সাহায্য করে। রাত্রিতে, দিবাভাগে এবং দিবারাত্রি এই প্রকার চিন্তা করিতাম । গোতমের সাধনা ও সিদ্ধি ©b~Ᏹ যে-যে বিষয়ে বহুক্ষণ চিন্তা করা যায়, সেই-সেই বিষয়ের দিকেই চিত্তের গতি হয়। নৈষ্কাম্যাদির বিষয় অমৃক্ষণ চিন্তা করাতে কণমাদি-বাসনা তিরোহিত হইয়াছিল এবং নৈষ্কাম্যাদি ভাব বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইয়াছিল এবং এই সমুদায় ভাবের দিকেই আমার মনের গতি হইয়াছিল”। (মজঝিমনিকায়, দ্বেধা-বিতৰ্ক স্বত্ত )। পঞ্চ-নিমিত্ত ছন্দ ( = রাগ, কাম্যবস্তু, ভোগে অসুরাগ ), দ্বেষ ও মোহ নিবারণ করিবার জন্য গোতম পাচটি উপায় নির্দেশ করিয়াছেন । এই পাচটি "নিমিত্ত” মজ ঝিমনিকায় গ্রন্থের বিতৰ্ক-সস্থান স্বত্তে বিস্তৃতভাবে বিবৃত হইয়াছে । প্রথম উপায় যদি প্রাণে ছন্দ-দ্বেষ-মোহ-মূলক পাপচিস্তা উপস্থিত হয়, তাহা হইলে প্রাণে কুশল-চিস্তা আনয়ন করিতে হইবে। ঐ কুশলভাব চিম্ভা করিতে করিতেই পাপচিস্তা বিদূরিত হইবে। যেমন মিস্ত্রী ক্ষুদ্র কীলক (খিল) দ্বারা বৃহং কীলককে বাহির করে, তেমনি কুশল-চিস্তা দ্বারা পাপচিন্তাকে অপসারিত করা যায়। to দ্বিতীয় উপায় ইহাতেও যদি পাপচিস্তা বিদূরিত না হয়, তাহা হইলে ঐ পাপচিন্তার স্বণিত ও বিষময় ফলের বিষয় ভাবিতে হইবে ; এইপ্রকার করিলে পাপচিন্তা বিদূরিত হইবে । যদি কোন পুরুষ বা রমণীর কণ্ঠে সৰ্প বা কুকুর বা মন্তব্যের মৃত-দেহ সংলগ্ন করিয়া দেওয়া হয়, তাহা হইলে তাহাদিগের প্রাণে ঘৃণা ও ন্যকার উপস্থিত হয়। তেমনি পাপের বীভৎসরূপের বিষয় চিন্তা করিলেও প্রাণে ঘৃণা ও ন্তকারের সঞ্চার হইবে । তৃতীয় উপায় ইহাতেও যদি পাপভাব বিদূরিত না হয়, তাহা হইলে মনকে পাপচিন্তা হইতে আকর্ষণ করিয়া বিষয়াস্তরে লইতে হইবে । যদি কেহ কোন বস্তু দর্শন করিতে ইচ্ছা না করে, তাহা হইলে সে চক্ষু নিমীলিত করে বা অপরদিকে দৃষ্টিপাত করে। তেমনি পাপচিস্তা উপস্থিত হইলে মনশ্চক্ষু