পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(tԵՀ প্রবাসী—ভাদে, ১৩৩১ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড নিমীলিত করিতে হইবে কিংবা অপর দিকে মনকে চালিত করিতে হইবে। . চতুর্থ উপায় ইহাতেও যদি পাপচিন্তা বিদূরিত না হয়, তাহা হইলে অভ্যাস-দ্বারা ক্রমশঃ মনকে পাপচিন্তা হইতে নিবৃত্ত করিতে হইবে। এবিষয়ে গোতম এই উপমা দিয়াছেন । মনে কর, একব্যক্তি দ্রুত গমন করিতেছে ; সে মনে করিতে পারে—কেন আমি এত দ্রুত গমন করিতেছি, আমি ত শনৈ: শনৈঃ অগ্রসর হইতে পারি। তাহার পরে সে যখন মৃদু গতিতে অগ্রসর হইবে, তখন সে মনে করিতে পারে— কেন আমি এইভাবে অগ্রসর হইতেছি, আমি ত দণ্ডায়মান থাকিতে পারি। সে দণ্ডায়মান অবস্থায় ভাবিতে পারে—আমি কেন দণ্ডায়মান রহিয়াছি, আমি ত উপবেশন করিতে পারি। সে উপবেশন করিয়া ভাবিতে পারে— আমি কেন উপবেশন করিয়া রাহিয়াছি, আমি ত শয়ন করিতে পারি। এই ব্যক্তি যে-ভাবে ধাবমান অবস্থা তইতে শয়নাবস্থাতে উপস্থিত হইল, আমরাও তেমনি পাপচিন্তা-বিষয়ে ভোগের অবস্থা হইতে নিরাহারের অবস্থায় আগমন করিতে পারি। পঞ্চম উপায় ইহাতেও যদি রাগ-দ্বেষ-মোহ-মূলক চিন্তা বিদূরিত না হয় তাহা হইলে দৃঢ়ভাবে দন্তে দন্ত সংলগ্ন করিয়া, তালুতে জিহাকে সংশ্লিষ্ট করিয়া বলদ্বারা চিত্তকে নিগ্ৰহ করিতে হইবে। এইপ্রকার করিলে পাপচিন্তা প্রাণ হইতে তিরোহিত হইবে, এবং চিত্ত শাস্ত ও সমাহিত হইবে । (भञ्ज भि, २० ) । গোতমও এক-সময়ে এই পথ অবলম্বন করিয়াছিলেন। তিনি এক-সময়ে বলিয়াছিলেন, “দন্তে দস্ত সংলগ্ন করিয়া, তালুতে জিহবা সংশ্লিষ্ট করিয়া এমনভাবে বলের সহিত চিত্তকে নিগ্ৰহ করিতাম যে, আমার কক্ষ ( বগল ) হইতে ঘৰ্ম্ম বিগলিত হইত।” ( মজ ঝিম, মহাসচ্চকস্বত্ত ) ৷ গোতমের ধ্যান (क) গৃহ ত্যাগ করিবার পর গোতম এইপ্রকার নানা উপায়ে পাপবাসনা দূর করিয়া চিত্তকে শাস্ত ও সমাহিত করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। এইপ্রকার প্রশান্ত চিত্ত লইয়া তিনি ধ্যানে মগ্ন হইতেন । আহার-নিদ্রা পরিত্যাগ করিয়া তিনি বহুদিন এই অবস্থায় নিমগ্ন থাকিতে পারিতেন। এবিষয়ে তিনি এইরূপ বলিয়াছেন – “আমি দেহকে স্থির করিয়া বাক্য উচ্চারণ না করিয়া, এক দিবারাত্রি, দুই দিবারাত্রি, তিন দিবারাত্রি, চারি দিবারাত্রি, পাঁচ দিবারাত্রি, ছয় দিবারাত্রি এবং সাত দিবারাত্রি-বাস করিতে পারি।" (মজঝিম, ১৫ ) । ( ं ) তিনি কি-প্রকার গভীর ধ্যানে নিমগ্ন হইয়া থাকিতে পারিতেন, তাহা মহা-পরিনিকান স্বত্তে বর্ণিত আছে । এক-সময়ে তিনি আতুম নগরে ভুষাগারে ধ্যানে মগ্ন হইয়া ছিলেন । ধ্যানভঙ্গের পর বাহিরে আসিয়া দেখেন, সেস্থলে মহা জনতা । তখন যাহা ঘটিয়াছিল, তাহা তিনি এইভাবে বর্ণনা করিয়াছেন— সেই সময়ে একজন লোককে জিজ্ঞাসা করিলাম— "এখানে এত জনতা কেন ?” সে বলিল—“কিছুক্ষণ পূৰ্ব্বে প্রবলবেগে গলগল করিয়া বৃষ্টি বধিত হইতেছিল, বিদ্যুৎ চমকিতেছিল, অশনি নিপতিত হইতেছিল, ইহাতে এই তুষাগারে দুই কৃষকভ্রাতা ও চারিটি বলীবর্দ বিনাশ প্রাপ্ত হইয়াছিল, ইহাদিগকে দেখিবার জন্য আতুম নগর হইতে বহু লোক সমাগত হইয়াছে। এইজন্যই এই মহা জনতা।” তখন সেই ব্যক্তি আমাকে জিজ্ঞাসা করিল—“হে ভদন্ত ! আপনি কোথায় ছিলেন ?” আমি বলিলাম—“হে আয়ুষ্মান্‌! আমি এই স্থলেই ছিলাম।” “আপনি কি এই সমুদায় দর্শন করেন নাই ?” “হে আয়ুষ্মান্‌! আমি এসমুদায় দর্শন করি নাই ।” “হে ভদন্ত ! আপনি কি স্বপ্ত ছিলেন ?” “হে আয়ুষ্মান্‌! আমি স্বপ্ত ছিলাম না।” “হে ভদন্ত ! আপনার কি সংজ্ঞা ছিল ?” “হে আয়ুষ্মান ! আমার সংজ্ঞা ছিল।” “তাহা হইলে হে ভদস্ত! আপনি সংজ্ঞাবান ও জাগ্ৰং ছিলেন, আর তখন প্রবলবেগে গলগল করিয়া