পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&b-8 প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড “আমিও এই পথ অবলম্বন করিয়া অগ্রসর হইয়াছি” ( રા૭tારર ) । গোতম এই পথকে প্রাচীন পথ বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন ; কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এই পথ নূতন। গোতম বিশ্বাস করিতেন, তাহার পূর্বেও অনেক বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন এবং তাহারা নিশ্চয়ই এই পথ অনুসরণ করিয়া বুদ্ধত্ব লাভ করিয়াছিলেন। গ। কোন পথ ? বুদ্ধত্ব লাভ করিবার পরই গোতম পঞ্চবৰ্গীয় ভিক্ষুগণকে এই পথের বিষয়ে উপদেশ দিয়াছিলেন। সে উপদেশ এই – “হে ভিক্ষুগণ ! পরিব্রাজকগণ দুই অস্ত পরিত্যাগ করিবে । সেই দুই অন্ত কি ? প্রথম হীন গ্রাম্য ইতরজনভোগ্য অনাৰ্য্য, অনর্থ-সংযুক্ত কাম্য বস্তুর উপভোগ । দ্বিতীয় দুঃখময় অনাৰ্য্য, অনৰ্থ-সংমুক্ত দেহ-নির্যাতন। এই দুই অন্ত অতিক্রম করিয়া তথাগত মধ্যম পথ আবিষ্কার করিয়াছেন । এই পথে দৃষ্টিলাভ হয়, জ্ঞানলাভ হয়, প্রাণ প্রশান্ত হয়, অভিজ্ঞ সম্বোধ ও নিৰ্ব্বাণ লাভ করা যায়। হে ভিক্ষুগণ ! তথাগত যে মধ্যম পথ আবিষ্কার করিয়াছেন, তাহা কোন পথ ? ইহা এই আধ্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ— ১) সম্যক দৃষ্টি, (২) সম্যক্ সঙ্কল্প, (৩) সম্যক্‌ বাকৃ, ( ৪ ) সম্যক্ কৰ্ম্মাস্ত, ( ৫ ) সম্যক্ আজীব, (৬) সম্যক ব্যায়াম, ( ৭ ) সম্যক্ স্মৃতি এবং ( ৮ ) সম্যক্ সমাধি । হে ভিক্ষুগণ ! তথাগত এই মধ্যম পথ আবিষ্কার করিয়াছেন ; এই পথে দৃষ্টিলাভ হয়, জ্ঞানলাভ হয়, প্রাণ প্রশাস্ত হয়, অভিজ্ঞ সম্বোধ ও নিৰ্ব্বাণ লাভ করা যায়।” ( সংযুক্ত, ৫৬৷১১৷১-৪ ; বিনয়, মহাবগগ, ১৬:১৭,১৮) গোতমের ব্যাখ্যা দীঘনিকায়ের অন্তর্গত মহাসতিপটুঠান স্বত্তন্তে এবং মজ ঝিমনিকায়ের অন্তর্গত সতিপটুঠান স্বত্তে মজঝিমনিকায়ের সচ্চবিভঙ্গ স্বত্তে গোতম এই অষ্টাঙ্গ মার্গের ব্যাখ্যা দিয়াছেন। নিম্নে এই ব্যাখ্যা উদ্ধত হইল। ১। সম্যক দৃষ্টি দুঃখ কি, দুঃখের উৎপত্তি কি-প্রকারে হয়, দুঃখের নিরোধ কি, এবং কি-প্রকারে দুঃখের নিরোধ হয়—এই সমুদায় জ্ঞানের নাম সম্যক দৃষ্টি । ২ । সম্যক্ সঙ্কল্প নৈষ্কাম্য, অবিদ্বেষ এবং অহিংসা এইসমুদায় বিষয়ে সঙ্কল্পের নাম সম্যক্ সঙ্কল্প । ৩ । সম্যক্ বাকৃ অসত্য বাক্য, পিশুন বাক্য, পরুষবাক্য, আসার প্রলাপবাক্য এই সমুদায় হইতে বিরত হওয়ার নাম সম্যকৃ বাক্ । ৪ । সম্যক্ কৰ্ম্মান্ত প্রাণ বিনাশ না-কর, অদত্ত-বস্তু গ্ৰহণ না-করা, কামভোগ হইতে বিরত থাকা—এইসমুদায় সম্যক্ কৰ্ম্মান্ত । ৫ । সম্যক্ আজীব অন্যায় উপায়ে জীবিকা উপার্জন না করিয়া ন্যায়সঙ্গত উপায়ে জীবিকা উপার্জনের নাম—সম্যক্ আজীব । ৬ । সম্যক্ ব্যায়াম “ব্যায়াম’অর্থে 'চেষ্টা’ বা ‘শ্রম’ –(১) ঘাহাতে প্রাণে পাপ ও অকুশল ভাবের উদয় না হইতে পারে ; (২) প্রাণে যে-সমুদায় পাপ ও অকুশল ভাবের উদয় হইয়াছে, যাহাতে সেইসমুদায় বিদূরিত হইতে পারে ; (৩) যে সমুদায় কুশলধৰ্ম্ম প্রাণে উদিত হয় নাই, যাহাতে সেই সমুদায় উদিত হইতে পারে ; (৪) যে-সমুদায় কুশল ধৰ্ম্ম প্রাণে উদিত হইয়াছে, যাহাতে সেই সমুদ্রায় স্থায়ী হতে পারে, বৈপুল্য ও পূর্ণতা লাভ করিতে পারে—এখ সমুদায় বিষয়ে চেষ্টার নাম সম্যক ব্যায়াম । ৭ । সম্যক্ স্মৃতি সৰ্ব্ববিষয়ে স্মৃতিকে জাগ্ৰং রাখার নামই সম্যক্ স্মৃতি । কোন কোন বিষয়ে স্মৃতি জাগ্ৰং রাখিতে হইবে, গোতম তাহা বিস্তৃতভাবে ব্যাখ! করিয়াছেন । যে-যে বিষয়ে তিনি স্মৃতিমান হইতে বলিয়াছেন তাহা এই – - (ক) দেহমূলক সমুদায় ঘটনা—যেমন ভ্ৰমণ, উপবেশন, শয়ন, অশন, বাকু-উচ্চারণ ইত্যাদি। , (খ) স্থখদুঃখ-মূলক সমুদায় অবস্থা ।