পাতা:প্রবাসী (চতুর্বিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৬৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(*ԵԵ বর্ধার কুলভরা গভীর জলরাশি যে তাহাকে প্রাণের কত কাছে পাইয়া ধন্ত হয়। সে যে অগ্রহায়ণে নবায়ের অতিথি, সে যে পৌষ-পাৰ্ব্বণে পিঠেপুলির আনন্দোৎসবের প্রধান নিমন্ত্ৰিত—সে যে বৈশাখের পাকা অামটির নিবেদন আগে পায়। হিন্দুর প্রত্যেক গার্হস্থ্য-অনুষ্ঠানে আলপনার ধবল চিহ্নে যে তাহারই অদৃশু পদ-চিহ্ন দেখিতে পাই—সে যে নবজাত শিশুর মধ্যে বারে বারে জন্মগ্রহণ করে–আবার যখন দুঃখের দিনে চক্ষের জলের মধ্যে পরিবারের প্রিয়তম অংশীটি চির-বিদায় ਗੇ। কুলহারা সাগরের পথে যাত্র করে তখনও সে ধন্ত হয় । সকলপ্রকার দৈনন্দিন কাৰ্য্যের মধ্যে ভূমাকে দেখিয়াছিল বলিয়া ভারতীয় সাহিত্য ধৰ্ম্ম-সাহিতা । ধৰ্ম্মকে আশ্রয় করিয়া ভারতীয় সাহিত্য, স্থপতি, চিত্র, ভাস্কৰ্য্য প্রভৃতি জন্মলাভ করিয়াছিল। ধৰ্ম্ম হইতে বিচ্যুত করিয়া দেখিলে ভারতীয় কলার কিছুই থাকে না । স্বদূর বিন্ধ্যাচলের গিরি-গুহার গোপন-চিত্রমালাই হউক আর উদার প্রান্তরের রহস্যময় প্রস্তর-স্তম্ভই হউক সকলেই সে-অনন্তের অন্তহীন লীলার পরিচয় দিতেছে। ংস্কৃত সাহিত্য রস ও ভাবের মধ্যে এক কৃত্রিম ব্যবধানের স্বষ্টি করিয়াছিল। রস ইহজগতের বস্তু লইয়া সাধারণ বিষয়ী মানুষের জন্য। ভাব ভূমাকে লইয়া—ভক্তের জন্য—অবিষয়াসক্তের জন্য । কিন্তু সংস্কৃত সাহিত্যে কি এই বিভাগ রহিয়াছিল ?—ম্বন্দর ও মঙ্গল, রস ও ভাব কি ওতপ্রোতভাবে বিজড়িত নহে ? কালিদাসের অভিজ্ঞানশকুন্তলম্ আদিরসাভ্রিত কাব্য হইলেও তদানীন্তন কালের যা ধৰ্ম্মামুভূতি তাহার ছাপ ইহাতে আছে। ভবভূতির উত্তররাম-চরিতের ত কথাই নাই। প্রসাদ ও ওজঃগুণের কি আশ্চৰ্য্য সমাবেশ ! কিন্তু তাই বলিয়৷ ইহাতে যে মানুষের রক্ত-মাংসের আকাজক্ষা ও পিপাসার আহবান নাই তাহা নহে । এইসব কারণে সংস্কৃত-নাটক বা কাব্য পড়িলে মনে তক্তি, আনন্দ ও বিস্ময়ের যুগপৎ উদয় হয়। স্বন্দর ও মঙ্গলকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করাই ভারতীয় আর্টের কৃতিত্ব। ভারতের প্রকৃত আট্‌। কোন দিন জাতীয় জীবনের অমঙ্গল প্রবাসী—ভাদ্র, ১৩৩১ [ ২৪শ ভাগ, ১ম খণ্ড ও ব্যক্তিগত জীবনের স্থনীতির প্রশ্ৰয় দেয় নাই। সৌন্দৰ্য্যপ্রীতি ও শোভনতা মানুষকে অনেক পাপের হাত হইতে রক্ষা করিয়াছে। এই কথা শুধু ভারতের পক্ষে প্রযোজ্য নহে—ইহা সমস্ত পৃথিবীর সভ্যতার কথা । রবীন্দ্রনাথ বলিয়াছেন, “অসংযমকে অমঙ্গল বলিয়া পরিত্যাগ করিতে যাহার মনে বিদ্রোহ উপস্থিত হয়, সে তাহাকে অম্বন্দর বলিয়া ইচ্ছা করিয়া ত্যাগ করিতে চাহিতেছে। সৌন্দর্য যেমন আমাদিগকে ক্ৰমে-ক্রমে শোভনতার দিকে, সংযমের দিকে আকর্ষণ করিয়া আনিতেছে, সংযমও তেমনি আমাদের সৌন্দৰ্য্য-ভোগের গভীরতা বাড়াইয়া দিতেছে।” এই কথাই শ্ৰীঅরবিন্দ Shamaa aso wift of fift:(toga--"Our sense of virtue is a sense of the beautiful in conduct and {)ሀ!‛ sense of sin a sense of ugliness and deformity in conduct.” Noffs, TTTTTH (*{St(RIR ধারণা আমাদের ব্যবহারিক জীবনে যা সুন্দর তার সঙ্গে জড়িত, আর আমাদের পাপের ধারণা আমাদের আচরণে যা কুৎসিত তার সঙ্গে সম্পূক্ত। আমাদের ক্ষম, প্রেম, ভক্তি ও অহিংসা এই সৌন্দর্য্যের ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত। উচ্চাঙ্গের আটু-যাহা স্বন্দর—তাহার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হইবে যদি সে আমাদের প্রাণে উচ্চভাব ও পবিত্রতা আনিয়া না দেয় । অন্য কথায় বলিতে গেলে, ইহাই বলা যায়, যে সে-আট, আর্টই নয় যাহার সৌন্দর্ঘ্যের মধ্যে মঙ্গলের বীজ নিহিত নাই । ধৰ্ম্ম সাধনার বস্তু । সাধনার সঙ্গে-সঙ্গে একটা কুচ্ছে র ভাব লাগিয়া রহিয়াছে। অপর দিকে সৌন্দৰ্য্য আনন্দের বস্তু—ইহাতে শুষ্কতা বা কঠোরতার লেশমাত্র নাই । সেইজন্য ধৰ্ম্ম ও সৌন্দর্য্যের মধ্যে কোন-কোন সময় বিশেষতঃ ইউরোপের Puritan যুগে একটা বিরোধ ঘটিয়াছিল। আমাদের দেশেও ইহা হইয়াছিল। ব্রাক্ষধৰ্ম্ম এককালে মঙ্গল ও সংযমের উপর প্রতিষ্ঠিত হইয়া সৌন্দৰ্য্যকে বিসর্জন দিতে বাধ্য । তখন আমাদের দেশে ললিতকলা পাপ ও ব্যভিচারের আশ্রয়স্থল ছিল । রবীন্দ্রনাথের মতে সংযম ব্যতীত সৌন্দৰ্য্য ভোগ করা অসম্ভব । তিনি বলিয়াছেন—“যথার্থ সৌন্দৰ্য্য সমাহিত